যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়ার জঙ্গলবাঁধাল স্কুল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ
জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের আদলে নির্মাণশৈলী ও নান্দনিকতায় অনন্য যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়ার জঙ্গলবাঁধাল স্কুল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ। মসজিদটির সৌন্দর্য-শোভা এখন দূর-দূরান্তের মুসল্লিদেরও টানছে।
স্থানীয় বিত্তবান ও গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ২০১৬ সালে নির্মাণকাজ শুরু হয়ে ২০২০ সালে নান্দনিক এ মসজিদটির নির্মাণ শেষ হয়। জঙ্গলবাঁধাল স্কুলের ৭২ শতক জায়গায় এই মসজিদটির নির্মাণে ব্যয় হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। গ্রামের এ মসজিদটি শুধু নামাজ আদায়ের স্থান নয় বরং বর্তমানে দর্শনীয় স্থানে পরিণত হয়েছে। মসজিদটির ডিজাইন করেন এলাকারই কৃতী সন্তান বুয়েট পাস করা ইঞ্জিনিয়ার পলাশ খান।
জঙ্গলবাঁধাল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি ও জঙ্গলবাঁধাল স্কুল কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক শহিদুল মিন্টু জানান, তার বাবা খলিলুর রহমান ১৯৭১ সালে ইউপি চেয়ারম্যান ও এলাকার একমাত্র ডাক্তার ছিলেন। মসজিদটি তার বাবার আমলের। ২০১৬ সালে এলাকাবাসী সম্মিলিতভাবে মসজিদটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। বিশেষ করে তার মৃত ভাই জহুরুল ইসলাম ও আমেরিকা প্রবাসী আশরাফুল হক নিপুর অর্থায়নে মসজিদের প্রথম দিকের নির্মাণকাজ শুরু হয়।
এরপর একে একে সহযোগিতার হাত বাড়ান গ্রামের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ। সে সময় জাতীয় মসজিদের আদলে তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সে অনুযায়ী মসজিদটি নির্মাণ করতে প্রায় ৪ বছর সময় লাগে। আর এতে খরচ হয়েছে প্রায় দুই কোটি টাকা। তিনি আরও বলেন, দুইজন হাফেজ, দুইজন মুয়াজ্জিন, বয়স্কদের কুরআন শিক্ষা, আর ৫২ ছাত্র-ছাত্রীর হেফজখানা রয়েছে। পুরো রমজান মাসে মুসল্লিদের জন্য রয়েছে ইফতারের ব্যবস্থা। এটা গ্রামবাসীর উদ্যোগেই করা হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কাশেম মোল্যা বলেন, আমরা ঢাকায় গেলে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম দেখতে পাই। আমাদের সবার মনে একটা খোরাক থাকে জাতীয় মসজিদে এক ওয়াক্ত নামাজ আদায় করার। আমাদের জঙ্গলবাঁধাল গ্রামের মসজিদটি গ্রামবাসীর উদ্যোগে জাতীয় মসজিদের আদলে তৈরি করা হয়েছে। আমাদের কাছেও এখন অনেক ভালো লাগে এই মসজিদে নামাজ আদায় করতে।
মশিয়ার রহমান নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, মসজিদটি দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে লোকজন আসে। অনেকে জুমার নামাজ আদায় করতেও এ মসজিদে আসে। গ্রামের মধ্যে এটা যেন এক টুকরা জাতীয় মসজিদ। ব্যবসায়ী ও সমাজকর্মী কামাল হোসেন বলেন, এই মসজিদটি নির্মাণে গ্রামের সকলের অবদান রয়েছে।
তবে সবচেয়ে বেশি অবদান শহিদুল ইসলামের পরিবারের। তাদের বড় ধরনের আর্থিক সহযোগিতা আর গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় মসজিদটিকে আজ আমরা যশোরের বুকে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছি।