ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৯ কার্তিক ১৪৩১

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, দুর্ভোগে নদীপাড়ের মানুষ 

নিজস্ব সংবাদদাতা, লালমনিরহাট

প্রকাশিত: ১৮:৫১, ২০ জুন ২০২৪

তিস্তার পানি বিপৎসীমার ওপরে, দুর্ভোগে নদীপাড়ের মানুষ 

তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। ছবি: জনকণ্ঠ। 

উজানের ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপড় দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে তিস্তা ব্যারাজের ৪৪টি গেট খুলে রেখেছে কর্তৃপক্ষ। তিস্তা নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের ঘরবাড়ি ও রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে গেছে। 

বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিকাল ৩টায় কাউনিয়া পয়েন্টে পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয়েছে ২৯ মিটার, যা বিপদ সীমার ২৫ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। 

দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজের পয়েন্টে তিস্তার পানিপ্রবাহ বিপদসীমার মাত্র ২৪ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লালমনিরহাটের নিম্নাঞ্চলে স্বল্পমেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন পানি উন্নয়ন বোর্ড। 

ডালিয়া ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম না করলেও তিস্তা নদীতে পলি পড়ে পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় অল্প পানিতে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ, কালমাটি, রাজপুর, গোকুণ্ডা ইউনিয়নের আরো কিছু নিম্নাঞ্চল আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী, মহিষাশহর কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী, দোয়ানী, সানিয়াজান ইউনিয়নের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ধুবনী, সিন্দুর্না, পাটিকাপাড়া, ডাউয়াবাড়ী এবং পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের বাড়ি ঘর,শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি প্রবেশ করেছে। এসব এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নদীর পানি প্রবেশ করায় তলিয়ে গেছে ধান, বাদামসহ নানা ধরনের ফসলের ক্ষেত এবং গ্রামীণ রাস্তাঘাট। ফলে চলাচলে দুর্ভোগ সৃষ্টির পাশাপাশি বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে।

নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা কমে আসায় অল্প পানিতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত ও বন্যার সৃষ্টি হওয়ায় নদী খনন বা তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে দৃশ্যমান পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি স্থানীয়দের।

গোবর্ধন এলাকার মনির হোসেন বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। ভারতের পানি আসায় আমাদের এলাকায় পানি ঢুকেছে। এতে রান্না করা, চলাফেরাসহ নানা সমস্যা হচ্ছে।’

একই  এলাকার এরশাদুল মিয়া জানান, এলাকা নিচু হওয়ায় রাস্তাগুলোও নিচু। তাই অল্প পানিতে বন্যা হয় আর রাস্তা তলিয়ে যায়।

সদর উপজেলার গোকুন্ডা এলাকার কৃষক ফারুক মন্ডল জানান, ভারতে পাহাড়ি ঢলের পানি বাংলাদেশে প্রবেশ করায় তিস্তা ব্যারেজের ৪৪ জলকপাট খুলে দেয়ার কারনে লালমনিরহাটের তিস্তা তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে হুহু করে পানি প্রবেশ করেছে, এতে আমাদের বাড়ি ঘরে পানি উঠেছে। গত কয়েকদিন থেকে প্রচুর পরিমাণ বৃষ্টিপাতের কারণে পানি বৃদ্ধিপাওয়ায় নদীতীরবর্তী কিছু কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে।অন্যান্য ফসলী জমি পানিতে ডুবে যাওয়ায় মানুষের চরম ভোগান্তির সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ গবাদি পশু নিয়ে বিপাকে পরেছেন স্থানীয়রা। 

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় জানান, ভারতের সিকিমে বন্যা সৃষ্টি হয়েছে। মূলত উজানের পানিতেই তিস্তায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। উজান থেকে আরো ব্যাপকহারে তিস্তা নদীতে পানি প্রবেশ করলে আমাদের বাংলাদেশ অংশের তিস্তা নদীতীরবর্তী পুরো অঞ্চল প্লাবিত হতে পারে। 

 

এম হাসান

×