ববিতা আক্তার
গত ১৫ এপ্রিল সন্তানদের সঙ্গে নিয়ে রেস্তোরাঁয় রাতের খাবার খেয়ে বাসায় ফেরার সময় নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের আশুলিয়ার পলাশবাড়ি এলাকায় ছিনতাইকারীদের কবলে পড়েন ৩৭ বছর বয়সী নারী ববিতা আক্তার। সে ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে সোমবার রাত পৌনে বারোটার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর কাছে হেরে যান তিনি। দুই সন্তানের জননী ববিতা আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকার ম-লবাড়ির নাদিম ম-লের স্ত্রী। প্রায় ছয় মাস আগে স্বামীর জীবন বাঁচাতে নিজের একটি কিডনি দিয়েছিলেন ববিতা আক্তার।
জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে সাজু ম-ল ও তিন বছর বয়সী মেয়ে নুসরাতকে সঙ্গে নিয়ে বাইপাইলের নিজ বাসা থেকে ফুচকা খেতে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ এলাকায় যান। সেখান থেকে রিক্সাযোগে বাসায় ফেরার পথে নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের পলাশবাড়ী এলাকার হাবিব পাম্পের কাছে পৌঁছালে মোটরসাইকেলযোগে ছিনতাইকারীরা এসে ববিতার হাতে থাকা ব্যাগ ও গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন টেনে নেওয়ার চেষ্টা করে।
এ সময় ছিনতাইকারীদের টানা-হেচড়ায় ববিতা চলতি রিক্সা থেকে মহাসড়কে পড়ে যান। পরে আহত অবস্থায় ববিতাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে উন্নত চিকিৎসার জন্য সাভারের এনাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই তাকে অস্ত্রোপচার শেষে নিউরো নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউতে) চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার দিবাগত রাতে তার মৃত্যু হয়।
ববিতার ছেলে সাজু বলেন, সেদিন ওই এলাকায় পৌঁছলে চলন্ত মোটরসাইকেল নিয়ে দুই ছিনতাইকারী বাম পাশ দিয়ে এসে আম্মুর হাতে থাকা ব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় রিক্সা থেকে পড়ে আমার মা ও আমি গুরুতর আহত হই। আমার মা মাথায় আঘাত পেয়ে জ্ঞান হারান, আমার পা মচকে যায়। মা ওই যে জ্ঞান হারালেন, আর ফিরল না। আমি ছিনতাইকারীদের ফাঁসি চাই।
আশুলিয়া থানার এসআই মো. মিলন ফকির জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই গৃহবধূর দেবর মো. কাদের হৃদয় বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি ছিনতাই মামলা দায়ের করেছেন। এরপর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে ওসমান গনী নামে এক ছিনতাইকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।