.
মহানগরে নির্মাণাধীন একটি হিমাগারে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এতে প্রায় ১ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে ধারণা করছে ফায়ার সার্ভিস।
শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বাকলিয়া এক্সেস রোডে এস আলমের নির্মাণাধীন ভবনে ‘তাজা মাল্টিপারপাস কোল্ড স্টোরেজ লিমিটেড’ নামের হিমাগারে আগুন লাগে। প্রায় তিনঘণ্টার চেষ্টায় বেলা ১টা ১২ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে নিশ্চিত করেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক।
ফায়ার কর্মীরা জানিয়েছেন, চারতলা ভবনটিতে আগুন লাগামাত্রই দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। কালো ধোঁয়ায় পুরো এলাকাটি আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে আশপাশে বসবাসকারী অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। ভবনটির কর্মী ও এলাকাবাসী জানান, হিমাগারটির এখনো নির্মাণ কাজ চলছে। সেখানে বিভিন্ন সরঞ্জাম রয়েছে।
কোল্ডস্টোরেজ হওয়ায় আগুন নির্বাপণে বেগ পেতে হয় ফায়ার কর্মীদের। আগুন লাগার পর দেখা গেছে ভবনটির আশপাশে কালো ধোঁয়ায় চোখ খুলতেই কষ্ট হচ্ছিল ফায়ার কর্মীদের। টানা প্রায় ৩ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হলেও নির্বাপণ শেষ হয় বিকেল ৫টার দিকে। প্রায় একবছর যাবত হিমাগারটির নির্মাণ কাজ চলছে। কাঁচাপণ্য রাখার পরিকল্পনা নিয়ে হিমাগারটি নির্মাণ করা হচ্ছিল। চারতলা ভবনটির প্রতিটি ফ্লোরে ছিল কর্কশিট এবং কিছু মেশিনারিজ সরঞ্জাম। প্রতিদিন সেখানে শতাধিক শ্রমিক কাজ করলেও শুক্রবার বন্ধ ছিল কাজ। কিন্তু কিছু শ্রমিক ফ্লোরের আনুষঙ্গিক কয়েকটি কাজে নিয়োজিত ছিলেন।
ফায়ার কর্মীরা জানিয়েছেন, এটি আবাসিক ভবন নয়। হিমাগারটিতে দাহ্য পদার্থ থাকায় আগুন নির্বাপণ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। পাশাপাশি ভবনটিতে পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা যেমন ছিল না, তেমনিভাবে পুরো ভবনটিতে জানালা কিংবা বাতাস আসা-যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা না থাকায় আগুন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছিল না। নির্মাণধীন ভবনে বসবাসরত কোনো পরিবার না থাকায় বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় চট্টগ্রাম। আগুন চারতলা থেকে তিনতলায় ছড়িয়ে পড়ায় সেখানে থাকা কাঠসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের সংস্পর্শে আগুনের তীব্রতা বাড়তে থাকে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে।
শুক্রবার বিকেলে চট্টগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক জানান, চন্দনপুরা, আগ্রাবাদ, নন্দনকাননসহ মোট ১০টি ইউনিটের চেষ্টায় বেলা ১টা ১২ মিনিটে নিয়ন্ত্রণে আসে। তবে পুরোপুরি নির্বাপণ সম্ভব হয় ৪টা ৫০ মিনিটে। আমাদের ফায়ার কর্মীদের আপ্রাণ চেষ্টায় দ্রুত সময়ে আগুন নির্বাপণ করা হয়। আগুন লাগে ৪ তলা থেকে। এরপর ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য তলায়। আনুমানিক এক কোটি টাকার মালামাল উদ্ধার করা হলেও আগুন লাগার কারণ তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে।
ফায়ার কর্র্মীরা জানান, চারতলা বিল্ডিংয়ের ওপরে ছাদ থাকলেও ভেতরের ডেকগুলো কাঠের। সাইডে দেওয়ালের সঙ্গে কর্কশিট লাগানো। যার ফলে আগুন নির্বাপণে ওপরে যাওয়া সম্ভব হচ্ছিল না ফায়ার ফাইটারদের।