ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

নির্বাচনে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি ব্যারিস্টার সুমন

মো. মামুন চৌধুরী,হবিগঞ্জ

প্রকাশিত: ১৩:৫৯, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩; আপডেট: ১৪:০৪, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৩

নির্বাচনে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলীর শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বি ব্যারিস্টার সুমন

এডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী ও ব্যারিস্টার সুমন, ছবি: সংগৃহীত

জেলার মাধবপুর-চুনারুঘাট উপজেলা নিয়ে হবিগঞ্জ-৪ আসন। এখানে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ১২ হাজার ৩০৮ জন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে প্রার্থী সংখ্যা ৮ জন। 
এর মধ্যে নির্বাচনী মাঠে কঠিন লড়াইয়ে রয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী এমপি এবং ঈগল পাখি নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। পুরোদমে চলছে প্রচার-প্রচারণা। 
এখানে ব্যারিস্টার সুমন বের হলে শত শত মানুষের সামগম হচ্ছে। তিনি স্থানে স্থানে যাচ্ছেন। পাচ্ছেন লোকজনের ভালবাসা। প্রচারণায় রয়েছেন প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোঃ মাহবুব আলীও। 

আরও পড়ুন : সময় টিভির চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান আর নেই 

এ আসনে ফাঁড়িসহ প্রায় ২৮টি চা বাগান রয়েছে। চা বাগানের শ্রমিকরা নির্বাচনে নৌকাকে ভোট দিয়ে আসছেন। এবার অনেক শ্রমিক ব্যারিস্টার সুমনকে ভোট দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। কারণ হিসেবে তারা উল্লেখ করেন, ব্যারিস্টার সুমনকে তারা সুখ দুঃখে পাশে পান। এসব চা বাগানের লাখের কাছাকাছি ভোটারদের ওপর নির্বাচনের জয় পরাজয় নির্ভর করছে। শুধু তাই, শহর ও গ্রামগঞ্জে ঈগল পাখিকে নিয়ে ভোটারদের মাঝে বিরাট আগ্রহ তৈরী হয়েছে। যদিও এ আসনটিকে নৌকা ঘাঁটি বলা হয়। 

এ নির্বাচনে ভোট লড়াইয়ে নৌকার প্রার্থী কি ঈগল পাখিকে হারাতে পারবেন। এমন প্রশ্ন অনেকের। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যারিস্টার সুমনকে নিয়ে ব্যাপক প্রচার চলছে। এখানে নৌকার প্রার্থীকে নিয়ে সেভাবে প্রচারণা নেই। 

এ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত দলীয় প্রার্থী বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো: মাহবুব আলী (নৌকা), স্বতন্ত্র প্রার্থী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সমুন (ঈগল), জাতীয় পার্টির দলীয় প্রার্থী আহাদ উদ্দিন চৌধুরী (লাঙ্গল), বাংলাদেশ কংগ্রেসের মো: আল আমিন (ডাব), ইসলামি ঐক্যজোট বাংলাদেশের আবু ছালেহ (মিনার), বিএনএম এর মো: মুখলেছুর রহমান (নোঙ্গর), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের মো: আব্দুল মমিন (চেয়ার), বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক ঐকজোটের মো: রাশেদুল ইসলাম খোকন (ছড়ি) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে মাঠে পাওয়া যাচ্ছে নৌকা ও ঈগল পাখির প্রচারণা। বাকী প্রার্থীরা নামমাত্র প্রচারণায় রয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রী এডভোকেট মোঃ মাহবুব আলী এমপি বলেন, তৃণমূল লোকেরা আমাকে ভালবাসেন। এ কারণে পর পর দুই বার এমপি নির্বাচিত করেছে। এবারও নৌকার পক্ষে গণজোয়ার তৈরী হয়েছে। স্থানে স্থানে বরাদ্দ দিয়ে উন্নয়ন করেছি। এজন্য লোকজন আবারও আমাকে বিপুল ভোটে নির্বাচিত করবে। 

ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, আমার এলাকার মানুষকে দুর্নীতিবাজদের থেকে মুক্ত করতে চাই। যারা পরিবেশ নষ্ট করে তাদের থেকে মুক্ত করে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়তে চাই।

তিনি বলেন, আমি ৪৯ টি ব্রিজ বানিয়েছি। হাজার হাজার গাছ লাগিয়েছি। আমি স্বতন্ত্র ঠিকই। কিন্তু আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক। অনুমতি নিয়ে স্বতন্ত্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজনকে দিয়েছেন নৌকার নমিনেশন আর আমাকে দিয়েছেন স্বতন্ত্র নির্বাচন করার পারমিশন। আমাকে একেবারেই স্বতন্ত্র যেটা বলা হয় সেটি বলা ঠিক হবেনা। 

প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মাহবুব আলী পান ৩ লাখ ৮ হাজার ৭২৭ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট শরিক খেলাফত মজলিশ মহাসচিব আহমেদ আব্দুল কাদের ৪৬ হাজার ১৮৩ ভোট পান। 

২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে  আওয়ামী লীগের মাহবুব আলী নৌকা প্রতীকে ১ লাখ ২২ হাজার ৪৩৩ ভোট পান। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ তানভীর আহমেদ তালা প্রতীকে পান ১৪ হাজার ৭৬০ ভোট।  ২০০৮ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এনামুল হক (মোস্তফা শহীদ) নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৫৫ হাজার ৮৯৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সাল ধানের শীষ প্রতীকে পান ১ লাখ ২৪ হাজার ৭৮৮ ভোট। 

২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এনামুল হক (মোস্তফা শহীদ) নৌকা প্রতীকে পান ১ লাখ ৭ হাজার ৩৭৬ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সাল ধানের শীষ প্রতীকে পান ৯৩ হাজার ৩১ ভোট। ১৯৯৬ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের এনামুল হক (মোস্তফা শহীদ) নৌকা প্রতীকে ৭০ হাজার ২৪০ ভোট পান। বিএনপির সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সাল ধানের শীষ প্রতীকে পান ৫৯ হাজার ৬৬৬ ভোট।  ১৯৯১ সালের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এনামুল হক (মোস্তফা শহীদ) নৌকা প্রতীকে পান ৬৭ হাজার ৮৪৭ ভোট। তার নিকটতম বিএনপির সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সাল পান ৫১ হাজার ৬৯৪ ভোট। 


 

টিএস

×