ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

রংতুলিতে বিজয়ের মাস

দেওয়ালে দেওয়ালে চিত্র, আঁকছে খুদে শিল্পীরা

তাহমিন হক ববী

প্রকাশিত: ০০:০৬, ১২ ডিসেম্বর ২০২৩

দেওয়ালে দেওয়ালে চিত্র, আঁকছে খুদে শিল্পীরা

নীলফামারী শহরে দেওয়ালে মুক্তিযুদ্ধের অবয়ব ফুটিয়ে তুলছে শিশুরা

‘সুন্দর, সুবর্ণ, তারুণ্য, লাবণ্য-অপূর্ব রূপসী, রূপেতে অনন্য- আমার দু’চোখ ভরা স্বপ্ন, ও দেশ, তোমারই জন্য। থাকবে না তো দুঃখ-দারিদ্র্য বিভেদ, বেদনা, ক্রন্দন। প্রতিটি ঘরে একই প্রশান্তি একই সুখের ¯পন্দন...’।
বিজয়ের মাস ডিসেম্বরে এই গানের কথাগুলোই বলে দেয় সোনার বাংলার মুক্তিযুদ্ধ। তাই দেওয়ালে দেওয়ালে মুক্তিযুদ্ধের নানা চিত্র আঁকছে শিশু-কিশোরের দল। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে এই আয়োজন চলছে উত্তরবঙ্গের নীলফামারী জেলা শহরে। শীতের আমেজে গরম কাপড় পরিধান করে শিশু শিক্ষার্থীরা রংতুলিতে নান্দনিকতা ছড়িয়ে দিচ্ছে শহরজুড়ে। তারা গত কয়েক বছর ধরেই বিজয় মাসে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণ করতে নীলফামারী শহরের বিভিন্ন দেওয়ালে রংতুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তুলছে মুক্তিযুদ্ধের অবয়ব, জাতীয় পতাকা, প্রাকৃতিক দৃশ্যসহ অনেক কিছু।

এর মাধ্যমে জেলা শহরের দেওয়ালগুলো যেমন বর্ণিল হয়ে উঠছে, তেমনি নতুন প্রজন্মের মাঝে স্বাধীনতার চেতনাও ছড়িয়ে যাচ্ছে। শিশু শিক্ষার্থীরা এই ধারা অটুট রাখতে যেন বদ্ধপরিকর। এই ব্যতিক্রম উদ্যোগটা ধরে রেখেছে নীলফামারীর ভিশন ২০২১ নামের  একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরই তারা শিশু-কিশোরদের মাধ্যমে দেওয়ালচিত্র অঙ্কনের আয়োজন করা হয়। যার প্রধান পৃষ্টপোষক নীলফামারী সদর আসনের একাধারে চারবারের সংসদ সদস্য সাবেক সংস্কৃতি বিষয়কমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। ভিশন ২০২১ সংশ্লিষ্টরা জানান, শিশুদের মেধা বিকাশ ও শহরকে পরিচ্ছন্ন রাখতে রাঙাও তোমার শহরশীর্ষক এই আয়োজনটি করা হয়।

প্রতি বছর স্কুল কলেজে বার্ষিক সমাপনী হওয়ার পর দুই মাস ধরে শহরের নির্ধারিত বিভিন্ন দেওয়ালে ছবি আঁকে খুদে চিত্রশিল্পীরা। মূলত শুক্রবার অথবা শনিবারে শিশুরা ছবি আঁকে। হ্যাঁ, এই শিশু শিক্ষার্থীরা প্রতি শুক্রবার সকাল আটটা হতে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ও শনিবার সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত  রংতুলির আচড়ে সাজিয়ে চলেছে শহরের বিভিন্ন দেওয়াল। তাদের আঁকা চিত্রকর্মে ফুটে উঠছে শহরটির অনাবিল সুন্দর্য। এই দৃষ্টিনন্দন শিল্পকর্ম শিশুদের হাতের ছোঁয়ায় সাজানো শহর দেখে আনন্দিত অনেকে। দেওয়ালে দেওয়ালে আঁকা বিভিন্ন ছবি মন কেড়েছে শহরের মানুষসহ পথচারীদের। নিজের শিশু সন্তান ছবি আঁকছে এটা প্রত্যক্ষ করতেও ছুটে আসছেন অভিভাবকরা।

নিজের শিশু সন্তানের আঁকা দেখেও বাবা-মারাও অবাক হচ্ছেন। এতে সন্তানদের পাশাপাশি এই কর্মসূচিতে অভিভাবকদেরও আগ্রহ বাড়ছে।  নিজের শহর সাজাতে পেরে আনন্দ পাচ্ছে তারা। ওই খুদে শিল্পীরা জানায়, আগে ছবি এঁকেছিল কাগজে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানের প্রতিযোগিতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল চিত্রাঙ্কন। রংতুলির আঁচড়ে এখন তারা নিজের শহরকে রঙিন করে তুলছে। ইতোমধ্যে শহরের  ৯০ ভাগ দেওয়ালে খুদে শিল্পীদের তুলির আঁচড়ে সৌন্দর্য দৃশ্যমান হয়েছে।

×