ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ০৭ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১

মেহেরপুর জেলা

দুটি আসনেই আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রার্থী

রামিজ আহসান, মেহেরপুর

প্রকাশিত: ০০:১৬, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

দুটি আসনেই আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা প্রার্থী

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ঘিরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের ঘিরে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। এরই মধ্যে প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র দাখিল শেষ হয়েছে। জেলার দুটি আসনে বইছে নির্বাচনী আমেজ। দেশের বড় দুটি দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বিএনপির নেতাকর্মীদের মাঝে নির্বাচনের কোনো কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়নি। তারা ব্যস্ত আন্দোলনে। অন্যদিকে আওয়ামী লীগে রয়েছে একাধিক প্রার্থী। আর নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে ঘর গোছাচ্ছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তরুণ ভোটাররা বলছেন, অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে চান তারা।
আগামী ৭ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেহেরপুরের দুটি আসনে ২৫ প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে আটজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। মেহেরপুর-১ আসনে তিনজন এবং মেহেরপুর-২ আসনে পাঁচজন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। রবিবার দুপুরে রিটার্নিং অফিসার ও জেলা প্রশাসক মো. শামীম হাসান, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ওয়ালিউল্লাহসহ নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই করেন।
মেহেরপুর-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরহাদ হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান, সাবেক সংসদ সদস্য মো. জয়নাল আবেদিন, জেলা জাপার সভাপতি মো. আব্দুল হামিদ, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির জেলা সহ-সভাপতি মো. তরিকুল ইসলাম লিটন, কৃষক মুক্তি জোটের কেন্দ্রীয় যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. বাবুল জম, জেলা জাকের পার্টির সভাপতি মো. সাইদুল আলমের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হলেও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মিয়াজান আলী, সহ-সভাপতি ইয়ারুল ইসলাম, মুজিবনগর উপজেলা জাপা (জেপি) আহ্বায়ক মো. মওলাদ আলী খানের মনোনয়নপত্র জমা বাতিল করা হয়। 
এদিকে মেহেরপুর-২ (গাংনী) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আবু সালেহ মো. নাজমুল হক সাগর, গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও বর্তমান সংসদ সদস্য সাহিদুজ্জামান খোকন, সাবেক সংসদ সদস্য মো. মকবুল হোসেন, তৃণমূল বিএনপির আব্দুল গনি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির নুর আহমেদ বকুল, জাপার কেতাব আলী, জাকের পার্টির শামসুদ্দোহা সোহেল, বাংলাদেশ পিপলস পার্টির গোলাম রসুল ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোটের শাহ জামালের মনোনয়নপত্র বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়। 
অপরদিকে এক শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষরসহ নানা সমস্যায় গাংনী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোখলেসুর রহমান মুকুল, সাবেক সচিব আশরাফুল ইসলাম, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রাশেদুল হক জুয়েল, নুরুল ইসলাম রিন্টু ও জাহাঙ্গীর আলম বাদশার মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়। এ সময় বাংলাদেশ কংগ্রেসের আল ফারুক বাবুলের মনোনয়ন ব্যাংক স্টেটমেন্ট প্রদান সাপেক্ষে বৈধ ঘোষণা করা হবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা স্থগিত করা হয়।
যাচাই-বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল ও শুনানি ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। ১৭ ডিসেম্বরের মধ্যে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার এবং প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে ১৮ ডিসেম্বর।
মেহেরপুর-১ আসনে ডামি ক্যান্ডিডেটদের নিয়ে কথা বলায় আলোচনায় আসেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ও নৌকার প্রার্থী ফরহাদ হোসেন। তিনি বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী মানেই আওয়ামী লীগের ডামি ক্যান্ডিডেট, যাদের নলও নাই, গুলিও নাই। সেটি ফুটবেও না, কারও ক্ষতিও করবে না। একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্যই তাদের দলের পক্ষ থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে রাখা হয়েছে। যাতে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় কেউ বিজয়ী না হয়। প্রতিদ্বন্দ্বিতার মধ্য দিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন যাতে অনুষ্ঠিত হয়। মুজিবনগর স্মৃতিসৌধে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের পর সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
অন্যদিকে মেহেরপুর-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক এমপি প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা পরিবারতন্ত্রে বিশ্বাসী নই। আমি মেহেরপুরের মানুষকে মুক্ত করতে চাই। মেহেরপুরের মানুষ যেন সুষ্ঠুুভাবে আওয়ামী লীগ করতে পারে, যার যে মর্যাদা সেটা যেন সে পেতে পারে সেটাই হবে আমার প্রচেষ্টা। আমাদের ওপর কোনো চাপ নেই। জনগণ সেটা প্রতিহত করবে। আমি মানুষকে ফুল দেব, মানুষ আমাকে ফুল দেবে। আমি মানুষকে ভালোবাসা দেব, মানুষ আমাকে ভালোবাসা দেবে। আমি গুলি করার জন্য আসিনি, মারার জন্য আসিনি।
মেহেরপুর-১ আসনে মোট ভোটার তিন লাখ ৩০ হাজার ২৯২ জন। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৮ হাজার ৯৩৬ জন, মহিলা ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ২১ জন। মেহেরপুর-২ আসনে মোট ভোটার দুই লাখ ৭৩ হাজার ৮১২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৩৫ হাজার ৫১৩ জন, মহিলা ভোটার এক লাখ ৩৪ হাজার ৮২৯ জন।
তরুণ ভোটাররা বলছেন, নির্বাচনের সুষ্ঠু পরিবেশে তারা ভোট দিতে উন্মুখ হয়ে আছেন। নতুন ভোটার হওয়ায় এই নির্বাচন একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন হবে এটিই আশা করেছেন তারা। অন্যদিকে সাধারণ ভোটার বলছেন, ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ যেন নিশ্চিত করা হয়। ভোট নির্বিঘেœ হলে তারা সুন্দর পরিবেশে ভোট প্রদান করতে পারবেন। ভোটের পরিবেশ বিশৃঙ্খলা চান না তারা।

×