ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

পলি মাচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষে স্বাবলম্বী শাওন 

স্টাফ রিপোর্টার, বাগেরহাট

প্রকাশিত: ১২:৫৪, ২৫ মার্চ ২০২৩

পলি মাচিং পদ্ধতিতে বেগুন চাষে স্বাবলম্বী শাওন 

বেগুন ক্ষেত

বাগেরহাট সদর উপজেলার রাখালগাছি ইউনিয়নের দরি-রসুলপুর গ্রামের শিক্ষিত যুবক শাওন শেখ পলি মাচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল বারি বেগুন-১২ চাষ করে স্বাবলম্বী হয়েছেন। তার সফলতায় অনান্য সবজি চাষিরা অনুপ্রেরণা পাচ্ছেন। এমন কী বেকার যুবকদের মধ্যেও সাড়া পড়েছে।

দরি রসুলপুর গ্রামের শেখ আবুল হোসেনের ছেলে অর্নাস ২য় বর্ষের ছাত্র শাওন শেখ তার বাবার নিজ জমির মরে যাওয়া পানের বরজে সবজি চাষ করার পরিকল্পনা করে। এরপর রাখালগাছি ইউনিয়নে দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপ্ত কুমার ঘোষের পরামর্শক্রমে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরির্বতন অভিযোজন প্রকল্পের সহায়তায় মাত্র ১০ কাটা জমিতে পলি মাচিং পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল বারি বেগুন-১২ চাষ করার জন্য জমি প্রস্তুত করেন। 

এরপর নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে তিনি খুলনার দৌলতপুর হটিকালচার সেন্টার হতে বেগুনের চারা ক্রয় করে তা রোপণ করেন। এই পলি মার্চিং পদ্ধতিতে বেগুনের চাষ করলে ক্ষেতে আগাছা জন্মে না, তাছাড়া সার কীটনাশক ও সেচ তুলনামূলকভাবে অনেক কম লাগে। ফলে খরচ কম হয়।

শাওন শেখ বলেন, ফেব্রয়ারি মাস হতে তিনি ক্ষেতের বেগুন তোলা শুরু করেছেন। এক একটা বেগুনের ওজন প্রায় এক থেকে দেড় কেজির মত। ১০কাটা জমিতে এপর্যন্ত তিনি প্রায় ৮০ মণ বেগুন তুলেছেন। উপযুক্ত পরিচর্যা করতে পারলে ৭০/ ৮০মন ফলানো সম্ভব। সপ্তাহে তিনি দুইবার করে বেগুন কেটেছেন, সেই হিসাবে মাসে ৮ বার কাটা সম্ভব। 

এ পযন্ত তিনি প্রায় ৮০ মণ বেগুন তুলে বাজারে গড়ে ৪০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। কৃষক শাওন শেখ এর মাতা আনোয়ারা বেগম বলেন, সে যখন সময় পাই তখনই ক্ষেতে গিয়ে বেগুনের পরিচর্যা করি। শুধু তাই নয়, বেগুন ক্ষেতের চারপাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায় আরো নানা ধরনের পুষ্টিকর সবজির চাষ করছি।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা দীপ্ত কুমার ঘোষ বলেন, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের বিষয়টি মাথায় রেখে ক্ষেতে সেক্স ফেরোমন ফাঁদ, ইয়োলো ট্রাপ ও আলোক ফাঁদ ব্যবহার করা হয়েছে। এই তিন ফাঁদ ব্যবহার করলে রোগ বালাই কম হয়। তাছাড়া ওষুধ সার ও সেচ কম লাগায় উৎপাদন খরচ অনেকাংশে কমে যাওয়ায় কৃষক লাভবান বেশি হচ্ছেন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সাদিয়া সুলতানা ও অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ তন্ময় কুমার দত্ত বলেন,পলি মাচিং পদ্ধতিতে উচ্চফলনশীল বারি বেগুন-১২ চাষ করে কৃষকরা অপেক্ষাকৃত বেশি লাভবান হন। 

এই বেগুনের চাষ করলে উৎপাদন খরচ অনেকটা কম হয়। এজন্য আমরা কৃষকদের নানাধরনের প্রশিক্ষন ও প্রনোদনা প্রদান করছি। এই উচ্চফলনশীল বেগুন-১২ চাষ করলে হেক্টর প্রতি গড়ে প্রায় ৫৫/৬০মন বেগুন উৎপাদন করা সম্ভব হয়। 

এসআর

×