ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

উখিয়ায় তথ্যমন্ত্রী

রানীর সফর রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সহায়ক হবে

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার

প্রকাশিত: ০০:০৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

রানীর সফর রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে সহায়ক হবে

রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনকালে বেলজিয়ামের রানীর সঙ্গে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ

বেলজিয়ামের রানীর এ সফর বাংলাদেশ-বেলজিয়ামের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। একই সঙ্গে জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশের যে সহায়তা তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরও জোরালো আলোচনা হবে। রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে সসম্মানে ফেরত পাঠানোর প্রক্রিয়া সহায়ক হবে। মঙ্গলবার বিকেলে উখিয়ার রোহিঙ্গা শিবিরে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ সফরে আসা বেলজিয়ামের কোনো রানীর এই সফরে বিশেষ গুরুত্ব পাচ্ছে মানবিক সহায়তা। তারই অংশ হিসেবে বিশ্বের বৃহত্তম শরণার্থী ক্যাম্প (উখিয়ার কুতুপালং) পরিদর্শনে এসেছেন তিনি। এই কুতুপালং ক্যাম্পে যেখানে অবস্থান করছে ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা।
কক্সবাজারের উখিয়া রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন বেলজিয়ামের রানী ও জাতিসংঘ মহাসচিবের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) দূত মাথিল্ডে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রানী উখিয়ার কুতুপালংয়ের ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পৌঁছেন। এর আগে মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বেলজিয়ামের রানী বিশেষ ফ্লাইটে ঢাকা থেকে কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে বেলজিয়ামের রানী মাথিল্ডে সরাসরি উখিয়া উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের উদ্দেশ্যে রওনা হন।

রানীর সঙ্গে ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, তথ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল এমপি, শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। বেলজিয়ামের রানী রোহিঙ্গা শিশুদের লার্নিং সেন্টারে গিয়ে শিক্ষাদান পদ্ধতি দেখেন। কথা বলেন রোহিঙ্গা শিশু ও নারীদের সঙ্গে। পরে ৫ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে গাছের চারা রোপণ করেন তিনি। ক্যাম্পে জাতিসংঘের কার্যক্রমের পাশাপাশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জীবনযাপন ও রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন রানী মাথিল্ডে।

এদিকে তিনদিনের সফরের ২য় দিনে বেলজিয়ামের রানী মাথিল্ডে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। মঙ্গলবার সকাল ১০টা নাগাদ রানী কক্সবাজার বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখান থেকে তিনি উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প অভিমুখে যাত্রা করেন। ১১টার দিকে ক্যাম্পে পৌঁছান তিনি। প্রথমে ৪ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অবস্থিত একটি শিক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শন, এরপর রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। 
এছাড়াও ক্যাম্পে বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ নানা কার্যক্রম পরিদর্শন ও বিভিন্ন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন রানী।

ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে দেখা করে পরে জাতিসংঘের বিভিন্ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় গণস্বাস্থ্য হাসপাতাল, বায়োগ্যাস প্লান্টেশন, ইকো পার্ক, কমিউনিটি সেন্টার, হলিচাইল্ড লার্নিং সেন্টার, উইমেন মার্কেট পরিদর্শন করেন। 
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা নারীদের সঙ্গে কথা বলেছেন রানী মাথিল্ডে। এছাড়াও মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়েও রানী কথা বলেন রোহিঙ্গাদের সঙ্গে। উখিয়া খেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন, রানীর এই সফরকে ঘিরে পুরো ক্যাম্প এলাকায় কয়েক স্তরের নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিয়োজিত পুলিশ, এবিপিএন সদস্য ছাড়াও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনের ব্যাপক তৎপরতা লক্ষ্য করা গেছে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য জাতিসংঘ মহাসচিবের দূত হিসেবে তিনি বাংলাদেশ সফরে এসেছেন। বিকেল ৪টার পর তিনি রোহিঙ্গা ক্যাম্প ত্যাগ করেন।

×