ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আরও ২৫ জনের তালিকা নিয়ে কাজ করছে র‌্যাব

নতুন জঙ্গি সংগঠনে বরিশালের ১২ জন শনাক্ত

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল

প্রকাশিত: ১৫:৩৩, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

নতুন জঙ্গি সংগঠনে বরিশালের ১২ জন শনাক্ত

ম্যাপে বরিশাল

নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীকে গ্রেপ্তারের পর ৩২ জঙ্গির নাম ও পরিচয় পেয়েছে র‌্যাব সদ্যসরা। সেই ৩২ জনের মধ্যে বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা ১২ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে র‌্যাব সদস্যরা।

পাশাপাশি ইতোমধ্যে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর সদর দপ্তরে সন্দেহভাজন আরও ২৫ জনের তালিকা এসেছে। ওই তালিকা অনুযায়ী তথ্য যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নিশ্চিত হলে সেই তথ্যগুলোও প্রকাশ করা হবে নিশ্চিত করেছেন র‌্যাবের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা। প্রাথমিকভাবে র‌্যাব সদস্যদের ধারনা, সম্প্রতি পার্বত্য অঞ্চলে মাথাচড়া দিয়ে ওঠা নতুন এ জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়া অনেকের বাড়ি বরিশাল বিভাগে। এদের মধ্যে ১২ জনের নাম ও পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। সন্দেহভাজন আরও ২৫ জনের তালিকা নিয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।

সোমবার সকালে বরিশাল র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বীয়ার কথিত সামরিক শাখার প্রধান মাসুকুর রহমান ওরফে রনবীকে গ্রেপ্তারের পর তার মোবাইলে অস্ত্র প্রশিক্ষণের কিছু ভিডিও পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ৩২ জঙ্গির নাম ও পরিচয় পাওয়া গেছে। সেই ৩২ জনের মধ্যে ১২ জনের বাড়ি বরিশাল বিভাগে। তিনি আরও বলেন, আরও ২৫ জনের তথ্য আমাদের হাতে রয়েছে। যা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। নিশ্চিত হলে সেই তথ্যগুলোও প্রকাশ করা হবে। 

লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান বলেন, শনাক্ত হওয়া জঙ্গিদের একটি বড় অংশের বাড়ি বরিশাল বিভাগে হলেও এই অঞ্চলে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনার কোনো গোয়েন্দা তথ্য আমাদের কাছে নেই। তবে এসব জঙ্গির লক্ষ্য ছিল ঢাকায় বড় ধরনের নাশকতার মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করার। পাশাপাশি শনাক্ত যে কয়েকজন বরিশাল অঞ্চলের জঙ্গি রয়েছে তাদেরকে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে জঙ্গী সংগঠনটি সংগ্রহ করেছে। এসব জঙ্গি সংগঠনের অর্থদাতাদেরও শনাক্তের কাজ চলছে।

সূত্রমতে, পরিচয় পাওয়া ১২ জঙ্গী সদস্যরা হলো-বরিশাল সদর উপজেলার চরবাড়িয়া ইউনিয়নের মহাবাজ গ্রামের বাসিন্দা রাক্কী আব্দুস সালাম ওরফে রাসেল, সদর উপজেলার চরমোনাই ইউনিয়নের বুখাইনগর গ্রামের আরিফুর রহমান ওরফে লাইলেন, বাকেরগঞ্জ উপজেলার পাদ্রিশীবপুরের ভবানীপুর গ্রামের মাহমুদ ডাকুয়া ওরফে হাকা, পটুয়াখালী সদর উপজেলার লাউকাঠি গ্রামের আল-আমিন ফকির ওরফে মোস্তাক, মিরাজ শিকদার ওরফে আশরাফ, দশমিনা উপজেলার মধ্য গছানিয়া গ্রামের শামীম মিয়া ওরফে আবু হুরায়রা ওরফে রাফি ওরফে চামদুর, একই থানার উত্তর লহ্মীপুর দফিপুর গ্রামের হোসাইন আহমদ ওরফে রেকমি, মহিপুর গ্রামের ওবায়দুল্লাহ সাকিব ওরফে শান্ত, মির্জাগঞ্জ থানার সুবিধখালী গ্রামের জুয়েল মাহমুদ, বরগুনা সদর উপজেলার বুরা মজুমদার এলাকার সোহেল মোল্লা ওরফে সাইফুল্লাহ, ঝালকাঠি জেলা সদর থানার বাউকাঠি কালিকান্দা এলাকার হাবিবুর রহমান ওরফে মুরা এবং নলছিটি উপজেলার নাচনমহল গ্রামের মিলন তালুকদার ওরফে লামজল।

র‌্যাব-৮ এর অধিনায়ক আরও বলেন, জঙ্গি সংগঠনে সম্পৃক্তদের সাথে তাদের পরিবারের সদস্যদের সম্পৃক্ততা খুঁজে পাওয়া যায়নি। জঙ্গি সংগঠনে যোগ দেওয়া ব্যক্তিরা অনেকদিন আগে থেকেই নিখোঁজ ছিলো। যাদের পরিবারের অনেকেই থানায় জিডি করেছিলেন। পাশাপাশি এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যে উঠে এসেছে, ধর্মের ভুল ব্যাখ্যার কারনে এসব ব্যক্তিরা জঙ্গি সংগঠনে যোগ দিয়েছে। তবে এরা কেউ সংঘবদ্ধভাবে যায়নি। তারা আলাদাভাবেই গিয়েছে। এদের মধ্যে কেউ লেখাপড়া করতো, কেউ ব্যবসা বা চাকরি করতো। মূলত করোনাকালে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সূত্র ধরে অভিযুক্তরা জঙ্গি সংগঠনের খোঁজ পেয়েছে।

টিএস

×