ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

কটিয়াদীতে ভাঙা সেতু দিয়ে যাতায়াত করে ২০ গ্রামের মানুষ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কিশোরগঞ্জ/সংবাদদাতা, কটিয়াদী

প্রকাশিত: ২৩:৪৬, ২৭ জানুয়ারি ২০২৩

কটিয়াদীতে ভাঙা সেতু দিয়ে যাতায়াত করে ২০ গ্রামের মানুষ

কটিয়াদীতে ভাঙা সেতু দিয়ে যাতায়াতে দুর্ভোগে পড়েছেন ২০ গ্রামের মানুষ

জেলার কটিয়াদী উপজেলার শিবনাথ সাহার বাজারসংলগ্ন কুড়িখাঁই নদীর ওপর নির্মিত সেতুটি এখন জরাজীর্ণ। এরই মধ্যে সেতুর দু’পাশের রেলিং ভেঙে গেছে। খসে পড়েছে পিলারের আস্তরণ ও ইট। স্থানে স্থানে ভেঙে গেছে সেতুর পাটাতনের অংশ। ফলে ঝুঁকিপূর্ণ ও চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সেতুটি। এ অবস্থায় বোয়ালিয়া, নামা বোয়ালিয়া, তেলিচারা, কাহেতেরটেকী, ভাংনাদী, চারিয়া, দড়িচারিয়া, মাগুরা, কুড়িখাঁই, চাতল, মুমুরদিয়া, জোয়ারিয়া ও পিপুলিয়াসহ অন্তত ২০ গ্রামের মানুষ প্রতিদিন মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছেন।

বেশি বিপাকে পড়েছে ওই সব এলাকার স্কুল-মাদ্রাসা ও কলেজগামী শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া সেতুর জীর্ণদশার কারণে ব্যবসায়ীদের মালামাল পরিবহন নিয়ে দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। এ পরিস্থিতিতে সেতুটি পুনর্নির্মাণে স্থানীয় প্রতিনিধিরা এগিয়ে না আসায় ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। জানা গেছে, কটিয়াদী পৌরসভার বোয়ালিয়া থেকে মুমুরদিয়া ইউনিয়নের শিবনাথ সাহার বাজার হয়ে কুড়িখাঁই শাহ শামছুদ্দিন সুলতান বুখারী (র.) মাজারে যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম।

স্বাধীনতা পূর্বকালীন কুড়িখাঁই নদীর ওপর সেতুটি নির্মাণ করা হয়। যুদ্ধের সময় পাক হানাদার বাহিনী স্থানীয় কিছু নিরীহ লোককে ধরে এনে সেতুর ওপর দাঁড় করিয়ে গুলি করে নদীতে ফেলে দেয়। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষা দূরে থাক দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছরেও সেতুটির কোনো সংস্কার বা পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ফলে ইতিহাসের সাক্ষী সেতুটি বর্তমানে খুবই জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। এই সেতুর ওপর দিয়েই এলাকার স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রীসহ হাজার হাজার মানুষ মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন চলাচল করছে। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয় বাসিন্দা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি আবদুর রহমান রুমী বলেন, কিছুদিন পরই কুড়িখাঁইয়ে শাহ শামছুদ্দিন সুলতান বুখারী (র.) এর ওরস অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বিশাল মেলা হলে হাজার হাজার মানুষ এ সেতুটি দিয়েই যাতায়াত করে থাকে। এ জন্য এটি দ্রুত নির্মাণের জন্য তিনিসহ এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।  এ ব্যাপারে কটিয়াদী উপজেলা প্রকৌশলী অনতু বল জানান, শিবনাথ সাহার বাজারের পাশের প্রাচীন সেতুটি ভেঙে পুনর্নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর দীর্ঘদিনের। স্কিম আকারে ১০০ মিটারের সেতু নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে একটি প্রকল্প পাঠানো হয়েছে।
নদী পারাপারের ভরসা বাঁশের সাঁকো
সংবাদদাতা, ধুনট, বগুড়া থেকে জানান, ধুনট উপজেলায় মোহনপুর-নাটাবাড়ি সড়কে মানাস নদীর ওপর দীর্ঘদিন ধরে পাকা সেতু নেই। এখানে সেতু না থাকায় বর্ষাকালে নৌকা এবং শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের তৈরি সাঁকো দিয়ে নদী পারাপার হতে গিয়ে ভোগান্তি পোহায় হাজারো মানুষ। এই পরিস্থিতিতে এখানে দ্রুত একটি সেতু নির্মাণের দাবি এলাকাবাসীর। সেতু হলে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে আরও এগিয়ে যাবে এ অঞ্চল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নদীর দুই পারে রয়েছে ৪টি বাজার ও ৫টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এখানে একটি সেতু হওয়া খুবই জরুরি। এটা এ অঞ্চলের মানুষের প্রধান সমস্যা। বর্ষা মৌসুমে এই ঘাট দিয়ে নদী পারাপারের প্রধান ভরসা নৌকা। শুষ্ক মৌসুমে স্থানীয় ব্যক্তিদের উদ্যোগে করা হয় বাঁশের সাঁকো। তাতে ভ্যান, রিক্সা ও যানবাহন পারাপার করা যায় না। জনপ্রতিনিধিরা নির্বাচন এলে প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু সেতু হয় না।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ধুনট উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুল সাজ রিজন বলেন, ওই স্থানে সেতু নির্মাণের জন্য এলজিইডির প্রধান কার্যালয়ে প্রকল্প প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে সেতুর কাজ শুরু করা হবে।

 

×