ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ০৫ জুলাই ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২

মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কচুরিপানার ফুল

রফিকুল ইসলাম রনি, চাটমোহর (পাবনা)

প্রকাশিত: ১৬:৩৫, ২১ ডিসেম্বর ২০২২

মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে কচুরিপানার ফুল

কচুরি ফুল

গ্রাম বাংলার অতি পরিচিত সাধারণ একটি জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা। বাংলাদেশের প্রায় প্রত্যেক এলাকায় নদ-নদী, পুকুর, জলাশয়, হাওয়র বা নিম্মাঞ্চলে সচরাচর কচুরি পানা দেখতে পাওয়া যায়।

কচুরি পানা মুক্তভাবে ভাসমান বহুবর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। এর আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকা। পুরু, চকচকে এবং ডিম্বাকৃতির পাতাবিশিষ্ট কচুরিপানা পানির উপরিপৃষ্ঠের ওপর ১ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে। এর কাণ্ড থেকে দীর্ঘ, তন্ত্রময়, বহুধাবিভক্ত মূল বের হয় যার রং বেগুনি-কালো। একটি পুষ্পবৃন্ত থেকে ৮-১৫ টি আকর্ষণীয় ৬টি পাঁপড়ি বিশিষ্ট ফুলের থোকা তৈরি হয়। 

কচুরিপানা খুবই দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে। এটি প্রচুর পরিমাণে বীজ তৈরি করে। যা ২৫ থেকে ৩০ বছর পরও অঙ্কুরোদগম ঘটাতে পারে। কচুরিপানা খুব দ্রুত বংশবৃদ্ধি করে। প্রায় দুসপ্তাহে দ্বিগুণ হয়ে যায়। 

বাংলাদেশে প্রায় সাত প্রজাতির কচুরি দেখতে পাওয়া যায়। কচুরিপানা দেখতে গাঢ় সবুজ হলেও এর ফুলগুলো সাদা পাপড়ির মধ্যে বেগুনি ছোপযুক্ত এবং মাঝখানে হলুদ ফোঁটা থাকে। সাদা পাপড়ির স্থলে কোথাও হালকা আকাশি পাপড়িও দেখতে পাওয়া যায়। পাপড়িগুলোর মাঝখানে পুংকেশর দেখতে পাওয়া যায়। পুরোপুরি ফুল ফোটার আগে একে দেখতে অনেকটা নলাকার দেখায়। এলাকাভিত্তিক অনেকে একে একেক নামে চিনে থাকে। 

প্রায় সারা বছরই কচুরি ফুল ফুটতে দেখা যায়। কচুরি ফুলের মুগ্ধতায় আমাদের মধ্যে প্রকৃতি প্রেম জাগ্রত করে। 
পাবনা জেলার চাটমোহর উপজেলার বিস্তীর্ণ জলাশয় রামের বিল ও বাঘমারা মাঠে ফুটে আছে রাশি রাশি কচুরি ফুল। দেখে মনে হচ্ছে শিল্পীর তুলিতে আঁকা কোনো ছবি। ফুলটি কোনো সুবাস না ছড়ালেও এর নান্দনিক রূপে মুগ্ধ এলাকাবাসী। 

কৃষিবিদ সাইদুর রহমান সাইদ বলেন, কচুরিপানা আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিকর মনে হলেও কৃষিক্ষেত্রে এর যথেষ্ট উপকারিতা রয়েছে। মাটিতে শক্তি যোগাতে ভূমিকা রাখে কচুরিপানা। কৃষকেরা কচুরিপানা উঠিয়ে জমিতে ফলানো আলু, পটলসহ বিভিন্ন সবজি চাষে ব্যবহার করছেন কচুরিপানা। 

সেই সঙ্গে কচুরিপানা গবাদিপশুর খাদ্য হিসেবেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। কচুরিপানা থেকে এখন তৈরি হচ্ছে জৈব সার। চাটমোহরে কচুরিপানার ফুলে ছড়াচ্ছে প্রকৃতির মুগ্ধতা

 

 এসআর

×