ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

দুই শিশু পুত্র সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করলো মা

 নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর

প্রকাশিত: ১৯:৩৫, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

দুই শিশু পুত্র সন্তানকে পুড়িয়ে হত্যার দায় স্বীকার করলো মা

শিশু সন্তান হত্যাকারী মা পূর্ণিমা বৈদ্য

মাদারীপুরে ঘরে তালা মেরে আগুন ধরিয়ে সহোদর দুইভাইকে হত্যার ঘটনায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন মা পূর্ণিমা বৈদ্য। 

বুধবার বিকেলে জেলার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৩য় আদালতের বিচারক মো. সাজিদ উল হাসান চৌধুরী এই জবানবন্দি রেকর্ড করেন। পরে আদালত পূর্ণিমাকে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দেন। এর আগে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার পল্টন থানার কাকরাইল থেকে পূর্ণিমাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনোয়ার হোসেন চৌধুরী জানান, সোমবার দুপুরে সদর উপজেলার উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামের গোলাম মাওলা মাতুব্বরের ভাড়াকৃত টিনশেট ঘরে আগুনে পুড়ে মারা যায় দুই সহোদর শিশু রুদ্র (০১) ও মানব (০৩)। 

একটি মামলায় দুইমাস ধরে বাবা কারাগারে থাকলেও ঘটনার পর পাওয়া যায়নি শিশু দুটির মা পূর্ণিমা ও সাথে থাকা নানী রেবা রানী বৈদ্যকে। নিহত শিশুদের দাদা কালী দাস বৈদ্য বাদী হয়ে পূর্ণিমা ও তার মা রেবা রানী বৈদ্যকে আসামী করে এই ঘটনায় সদর মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। 

পরে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় তদন্তে নামে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানী ঢাকার পল্টন থানার কাকরাইল থেকে থানা পুলিশ ও গোয়েন্দা পুলিশের যৌথ অভিযানে গ্রেফতার করা হয় পূর্ণিমাকে। গ্রেফতারের পর মা,কে জিজ্ঞাসাবাদ করলে জানায়,  ‘পারিবারিক কলহের জেরে পূর্ণিমাকে তালাকের হুমকি দেন তার স্বামী। একটি মামলায় স্বামী মানিক বৈদ্যকে জেলহাজতে পাঠানো হলে নাশকতার পরিকল্পনা করেন পূর্ণিমা। প্রথমে বড় ছেলে মোবাইল চার্জারের কড দিয়ে গলা পেচিয়ে স্বাসরোধ করে হত্যা  করেন তিনি। আর ছোট ছেলেকে ঘরে রেখেই আগুন লাগিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দিয়ে চলে যান পূর্ণিমা।’

প্রসঙ্গত, ৬ মাস আগে উত্তর ঝিকরহাটি গ্রামের গোলাম মাওলা মাতুব্বরের ঘর ভাড়া নেন সদর উপজেলার শিরখাঁড়া ইউনিয়নের শ্রীনদী এলাকার ভ্যানচালক মানিক বৈদ্য। শ্বাশুড়ী, স্ত্রী ও দুই ছেলে নিয়ে সেখানে থাকতেন তিনি। পারিবারিক কলহের জেরে প্রায়ই স্ত্রীকে মারধর করতো মানিক বৈদ্য এমনটাই জানিয়েছেন এলাকাবাসী। মানিক একটি মামলায় দুইমাস ধরে কারাগারে রয়েছে। সে কারাগার থেকে বেড়িয়ে আরেকটি বিয়ে করবে এমন হুমকিতে পূর্ণিমা ঘরে আগুন ধরিয়ে এই হত্যাকান্ডের সিদ্ধান্ত নেয়। পূর্ণিমার বাবার বাড়ি বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলার হারতাবাজার এলাকায়।
 

 

এমএস

সম্পর্কিত বিষয়:

×