ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শেরপুর-শ্রীবরদী ভায়া লঙ্গরপাড়া, ২০ কোটি টাকার সড়ক

সংযোগ সড়কের অভাবে ব্রিজ অকেজো

নিজস্ব সংবাদদাতা, শেরপুর

প্রকাশিত: ২১:৪৭, ২৭ নভেম্বর ২০২২

সংযোগ সড়কের অভাবে ব্রিজ অকেজো

শেরপুর-শ্রীবরদী ভায়া লঙ্গরপাড়া সড়কে সংযোগ সড়কের অভাবে দাঁড়িয়ে আছে ২০ কোটি টাকার ব্রিজ

শেরপুর-শ্রীবরদী ভায়া লঙ্গরপাড়া সড়কের গড়খাই অংশে প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি ব্রিজ নির্মাণের এক বছর অতিবাহিত হওয়ার পরও সেখানে আজও নির্মাণ হয়নি সংযোগ সড়ক। ফলে ঝুঁকি নিয়ে পাশের পুরনো ব্রিজ দিয়েই যাতায়াত করছেন যানবাহন চালক ও পথচারীরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভূমি অধিগ্রহণের টাকা পরিশোধ না করেই ব্রিজ নির্মাণ করায় দেখা দিয়েছে এ জটিলতা। তবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ বলছে, সব জটিলতা কাটিয়ে জমি অধিগ্রহণ করে তাদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। খুব শীঘ্রই সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ শুরু হবে।
জানা যায়, শেরপুর (আখের মামুদের বাজার) থেকে লঙ্গরপাড়া হয়ে শ্রীবরদী উপজেলা সড়কটির উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ কাজ ৮২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে শেষ হয় দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর আগে। ১৪ দশমিক ৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়কের লঙ্গরপাড়া এলাকায় মৃগী নদীর উপর প্রায় ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে ৯৪.২৭ মিটার দীর্ঘ একটি ব্রিজ নির্মাণ শেষ হয় গত বছরের শেষদিকে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলা এবং জামালপুরের বকশীগঞ্জ, কুড়িগ্রামের রৌমারী, রাজীবপুর থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহগামী যানবাহন চলাচল করে থাকে। এই রাস্তা ও ব্রিজের পুরো কাজ শেষ হলেও সংযোগ সড়ক নির্মাণ না করায় ব্রিজটি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভূমি অধিগ্রহণে ধীরগতির ফলে জমির মূল্য পরিশোধ না করায় এতদিন সংযোগ সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়নি। তাই প্রতিদিন ওই সড়কে থাকা ভাঙা ব্রিজ দিয়ে ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন ও স্থানীয় মানুষ। এতে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
সরেজমিন গেলে স্থানীয় অধিবাসী ফিরোজ আহমেদ জানান, আগের সরু, ভাঙা রাস্তা ও ব্রিজ দিয়ে যানবাহন চলাচলে প্রায় সময়ই দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। তাই নতুন ব্রিজটি দ্রুত সময়ের মধ্যে চালু করা প্রয়োজন। স্কুলশিক্ষক তহিজুল ইসলাম নীরব বলেন, আমি লঙ্গরপাড়া বাজারের একটি স্কুলে চাকরি করি। প্রতিদিনই এই রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করি। অথচ কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ব্রিজ নির্মাণ করে ফেলে রাখা হয়েছে। একটুখানি রাস্তার জন্য সেটি চালু হচ্ছে না। আমরা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংযোগ সড়ক নির্মাণ করে ব্রিজটি চালু করার দাবি জানাচ্ছি। অটোরিকশাচালক আবুল কালাম বলেন, এই রাস্তা দিয়ে চলাচল করলে গাড়ি বার বার নষ্ট হয়ে যায়। খুব রিস্ক নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। যাত্রীদেরও কষ্ট হয়। স্কুলশিক্ষার্থী নয়ন মিয়া বলেন, প্রতিদিনই এই ভাঙা রাস্তায় ভ্যানগাড়ি দিয়ে স্কুলে যাই। এখান দিয়ে দিনে ৩/৪ বার যাতায়াত করতে হয়।

খুব ভয় করে। অল্পখানি রাস্তা হয়ে গেলেই নতুন ব্রিজ দিয়ে যাতায়াত করতে পারতাম। একই কথা জানান শিক্ষার্থী আশামনি, সোহেল মিয়াসহ অনেকেই। এ ব্যাপারে শেরপুর সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ইতোমধ্যে ওই ব্রিজ এলাকায় জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত সব জটিলতা শেষ হয়েছে। সেইসঙ্গে জমি অধিগ্রহণের জন্য ৮ কোটি ৮২ লাখ ৯৬ হাজার টাকা জেলা প্রশাসনকে বুঝিয়ে দেওয়ায় তারা জমি অধিগ্রহণ করে আমাদের বুঝিয়ে দিয়েছে। আশা করছি খুব শীঘ্রই ব্রিজের সংযোগ সড়কের নির্মাণকাজ শুরু করা সম্ভব হবে।

 

 

×