ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পঞ্চগড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে লাম্পি স্কিন

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড়

প্রকাশিত: ২১:৪৩, ৯ নভেম্বর ২০২২

পঞ্চগড়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে লাম্পি স্কিন

খামারে লাম্পি স্কিন আক্রান্ত কয়েকটি গরু

পঞ্চগড়ে গরুর লাম্পি স্কিন রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। দ্রুত গ্রাম থেকে গ্রামে ছড়িয়ে পড়ছে এ রোগটি। সঠিক সময় সুচিকিৎসা না মেলায় প্রতিদিনই মারা যাচ্ছে গরু। এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খামারিরা। বিনিদ্র রাত কাটছে তাদের।
গত এক মাসে লাম্পি স্কিনে কয়েক শ গরু মারা গেলেও প্রাণিসম্পদ অফিসে রুগ্ন ও মৃত গরুর নেই কোন তথ্য। বেশিরভাগ মারা গেছে সীমান্তঘেঁষা তেঁতুলিয়া উপজেলায়। লাম্পি স্কিনের পরিধি বেপরোয়া গতিতে বাড়লেও সরকারি চিকিৎসাসেবা তেমন চোখে পড়ছে না।
জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার তিরনইহাট ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রামে মাসখানেক আগে দেখা দেয় গরুর লাম্পি স্কিন। মুহূর্তেই তা পুরো ইউনিয়নে ছড়িয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত দেড় শ’ থেকে দুশ’ গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ইউনিয়নটির ২৪ গ্রামে। পাশর্^বর্তী বাংলাবান্ধা ইউনিয়নে ৬৫টি গরুর মৃত্যু হয়েছে এ রোগে আক্রান্ত হয়ে। রোগটি এখন ইউনিয়ন ছাপিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে পুরো উপজেলায়। প্রতিদিনই আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে।

জেলার অন্য উপজেলায়ও বেড়েছে এ রোগের প্রকোপ। শুরুতে সারা শরীরে বসন্তের মতো গুটি গুটি উঠছে। তারপর হাঁটু গোড়ালি ও গলা ফুলে যাচ্ছে। গলায় জমছে পানি। জ¦র ও প্রচ- ব্যথায় খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দেয় আক্রান্ত গরু। অনেক সময় মুখ দিয়ে লালা পড়ে। কেউ কেউ আক্রান্ত গরুকে অন্য গরু থেকে আলাদা রাখছেন। কিন্তু তারপরও সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না। জেলার হাজার খানেক গরু এ রোগে ধুঁকছে। 

গরু খামারিদের অভিযোগ প্রাণিসম্পদ অফিসের চিকিৎসকদের ডাকলে বড় অঙ্কের ফি দিতে হয়। তা ছাড়া তারা ডাকে সাড়া দেন না। নিরুপায় হয়ে তারা গ্রামের পশু চিকিৎসকদের পরামর্শ নিয়ে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করাচ্ছেন। গরুপ্রতি খরচ হচ্ছে ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা। তারপরও অনেক গরু মারাা যাচ্ছে।
গ্রাম্য পশু চিকিৎসক মোহাম্মদ আলী বলেন, লাম্পি স্কিনে এত গরু আক্রান্ত হয়েছে যে আমরা চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছি। বাংলাবান্ধা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কুদরত-ই-খুদা মিলন বলেন, আমার ইউনিয়নে ৬৫টি গরু মারা গেছে লাম্পি স্কিনে। কিন্তু প্রাণিসম্পদ অফিসসহ কারো কোন নজর নেই। পঞ্চগড় সদর প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শহিদুল ইসলাম বলেন, লাম্পি স্কিনে আক্রান্ত হলে গ্রামের মানুষ প্রথমেই গ্রামচিকিৎসকদের কাছে যান।

তারা প্রথমেই হায়ার এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করেন। এতে গরুর অবস্থা আরও খারাপ হয়। আমাদের এখানে আনা হয় থার্ড স্টেজে। যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে খামার করার কথা ছিল তারাই এখন পশু চিকিৎসা করছে। এটাই এখন বড় সমস্যা। তাদের কারণেই ক্ষতি বেশি হচ্ছে। তেঁতুলিয়া উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রতন কুমার ঘোষ বলেন, তেঁতুলিয়ায় লাম্পি নিয়ন্ত্রণে আছে। নতুন করে কোন আক্রান্ত নেই। পঞ্চগড় জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুর রহিম বলেন,  ঢাকা থেকে মেডিক্যাল টিম এসে তেঁতুলিয়ায় কাজ করেছে। পঞ্চগড়ে লাম্পি এখন নিয়ন্ত্রণে। গরু মারা যাওয়ার কোন ইতিহাস নেই।

×