ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চা–শ্রমিক মাকে নিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস, চাকরি পেলেন সন্তোষ

প্রকাশিত: ১৮:১৪, ২০ আগস্ট ২০২২

চা–শ্রমিক মাকে নিয়ে আবেগঘন স্ট্যাটাস, চাকরি পেলেন সন্তোষ

চা–শ্রমিক মায়ের সঙ্গে ছেলে সন্তোষ রবি দাস। 

চা–শ্রমিক মাকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে আবেগঘন স্ট্যাটাস দেওয়া সন্তোষ রবি দাস চাকরি পাচ্ছেন। মলগঞ্জ সরকারি মডেল উচ্চবিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে আগামীকাল রবিবার তার হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেওয়া হবে।

কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত উদ্দিন গণমাধ্যমকে বলেন, সন্তোষকে আগামীকাল রবিবার মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ডাকা হয়েছে। খণ্ডকালীন শিক্ষক হিসেবে তার চাকরির ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাল বিকেলে ডিসি স্যার সন্তোষের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেবেন।

সন্তোষ রবি দাস বলেন, কমলগঞ্জের ইউএনও আজ সকালে তাকে ফোন দিয়ে চাকরির জন্য আবেদনপত্র তৈরি করতে বলেন। এখন পর্যন্ত পাঁচ থেকে ছয়টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তারা চাকরিতে যোগদান করতে বললেও কেউই নিশ্চিত করে বলতে পারেনি কবে থেকে যোগদান করতে পারব।

এদিকে, চা–শ্রমিক মাকে নিয়ে গত মঙ্গলবার ফেসবুকে একটি আবেগঘন স্ট্যাটাস দেন সন্তোষ। পরে ওই স্ট্যাটাসটি ভাইরাল হয়ে যায়। এর সূত্র ধরে যোগাযোগ করে বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। 

ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে তিনি জানিয়েছিলেন, জন্মের ছয় মাসের মাথায় তিনি বাবাকে হারান। মা চা-বাগানের শ্রমিক। তখন মজুরি পেতেন দৈনিক ১৮ টাকা। ২০০৭ সালে তিনি যখন ক্লাস ফাইভে পড়েন তখন তার মায়ের মজুরি ছিল ৮৮ টাকা। পঞ্চম শ্রেণির পর ভর্তি পরীক্ষায় পাস করে ক্যামেলিয়া ডানকান ফাউন্ডেশন স্কুলে পাঁচ বছরের জন্য বিনা মূল্যে পড়ালেখার সুযোগ পান। তখন তার মা সামান্য আয়ের একটা অংশ থেকে তাকে টিফিন খাওয়ার জন্য প্রতি সপ্তাহে ৭০ থেকে ৮০ টাকা দিতেন।

২০১৩ সালে বিএএফ শাহীন কলেজে ভর্তি হন। তখন তার মা ১০২ টাকা করে মজুরি পেতেন। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ভর্তির টাকা, ইউনিফর্ম আর বই-খাতা কিনে দেন মা।

এইচএসসির পর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার কোচিংয়ের টাকা জোগাতে গ্রামীণ ব্যাংক থেকে আবার তার মাকে ঋণ নিতে হয়। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন সন্তোষ। এলাকার লোকজন চাঁদা তুলে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তিতে সহায়তা করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্কেটিং বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেছেন সন্তোষ।

×