
বৃহস্পতিবার ডুবেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাণিজ্যপাড়া খাতুনগঞ্জ
লঘুচাপ ও পূর্ণিমার প্রভাবে সাগরের পানি অস্বাভাবিক উচ্চতায় রয়েছে। বৃষ্টিপাত না হলেও নগরে জোয়ারের আগ্রাসন। বৃহস্পতিবার ডুবেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর বাণিজ্যপাড়া খাতুনগঞ্জ, চাক্তাইসহ বহু নিচু এলাকা। এতে ভোগান্তিতে পড়েন ব্যবসায়ী এবং বসবাসকারীরা।
খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টি ছাড়াই এভাবে বছরের বিভিন্ন সময়ে অস্বাভাবিক জোয়ারে ডুবে যাচ্ছে সড়কগুলো। গুদামে পানি প্রবেশের ঘটনাও ঘটছে। বিশেষ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো নিচতলায় পানি ঢুকে পণ্যের ক্ষতি হচ্ছে। বৃহস্পতিবারের জোয়ার ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। ফলে খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়িক কর্মকা- ব্যাহত হয়।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিস জানায়, বিকেল ৩টা পর্যন্ত চব্বিশ ঘণ্টায় রেকর্ড করার মতো বৃষ্টিপাত হয়নি। তবে সাগরে লঘুচাপ রয়েছে। এর জন্য সমুদ্র বন্দরগুলোকে ৩ নম্বর এবং নদী বন্দরগুলোকে ২ নম্বর সতর্কতা সঙ্কেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে নিরাপদে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
খাতুনগঞ্জ আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন বলেন, বুধবারও জোয়ারের পানি উঠেছিল, কিন্তু বৃহস্পতিবার এর উচ্চতা আগের দিনের চেয়ে বেশি। এদিন অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকার দোকান ও কিছু আড়তে পানি ঢুকে যায়। কর্ণফুলীর ড্রেজিং শেষ না হওয়া এবং খালগুলোর মুখে স্লুইসগেটের কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এ অবস্থা বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, জোয়ারের পানি আটকাতে না পারলে এ ভোগান্তি থেকে মুক্তি নেই খাতুনগঞ্জ এলাকার ব্যবসায়ী এবং বসবাসকারীদের।
চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ শুধু নয়, মহানগরীর আগ্রাবাদ, সিডিএ আবাসিক এলাকাও সয়লাব হয় জোয়ারের পানিতে। চট্টগ্রাম মা ও শিশু হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হয়। চারপাশের সড়কগুলো হাঁটুপানিতে তলিয়ে যায়। ওই এলাকার অনেক বাড়ির নিচতলা প্লাবিত হয়। পথচারীদের বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। শিক্ষার্থী এবং কর্মজীবীরা পড়েন দুর্ভোগে।
উল্লেখ্য, বন্দরনগরী চট্টগ্রাম আলাদা বৈশিষ্ট্যের শহর। এখানে দিনে দুবার জোয়ার হয়। লঘুচাপ বা নিম্নচাপের সঙ্গে যদি অমাবশ্যা-পূর্ণিমার যোগ ঘটে তাহলে সেই জোয়ার হয় অত্যধিক উচ্চতার। জলাবদ্ধতা নিরসনে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে। এরমধ্যে কাজ অনেকটুকু সম্পন্ন হলেও খালের মুখের স্লুইচগেটগুলো বসেনি। ফলে জোয়ারের পানি ঠেকানো যাচ্ছে না।
চউকের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস জানান, আগ্রাবাদ এলাকার সড়ক ২০২১ সালে ৩ ফুট উঁচু করা হয়েছে। তারপরও জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে।