সংবাদদাতা, চাটমোহর, পাবনা ॥ শস্য ভান্ডার নামে খ্যাত চলনবিল অঞ্চল এখন বোরো ধান রোপণের ভরা মৌসুম। কৃষি প্রধান এই অঞ্চলে শাক-সবজি, সরিষা ও ভুট্রার চাষ হলেও অর্থকরী প্রধান ফসল হিসাবে বোরো ধানই একমাত্র ভরসা।
চলনবিল অধ্যুষিত চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা ও বিলচলন এলাকার কয়েকটি মাঠে সরেজমিনে কৃষকরে এই ব্যস্ততার চিত্র দেখা যায়। কর্ম ব্যস্ত কৃষক ও শ্রমিকরা মাঠেই খাচ্ছেন দুপরের খাবার। এলাকার কৃষকরা বলছেন তেল, সারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবছর তাদের খরচটা গতবারের চেয়ে বেশি হচ্ছে। উপজেলার পাকপাড়া গ্রামের কৃষক আব্দুল কুদ্দুস ও মুকুল হোসেন জানান, এবছর তেল ও সারের দাম বাড়ার পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরীও বেড়েছে। কৃষিবান্ধব এই সরকারের কাছে ধানের ন্যায্য দাবি করেন তাঁরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাটমোহরে ৯ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কয়েক দিন ধরে চলছে চারা রোপণের কাজ। এ পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে। তবে এখন এলাকায় ধান লাগানোর মহোৎসব চলছে, প্রতিদিন প্রায় ২শ’ হেক্টর জমিতে ধান লাগানো হচ্ছে। এ এলাকায় সাধারণত ব্রিধান-২৮, ২৯ এছাড়াও উন্নত ৫০. ৫৮, ৬৪, ৮১, ৮৪, ৮৯, ৯২, ৯৬ সহ বঙ্গবন্ধু ১০০ জাতের ধান চাষ হয়।
উপজেলার দরাপপুর গ্রামের কৃষক শরিফুল ইসলাম জানান, দীর্ঘ দিন যাবত বোরো ধানের চাষ করে আসছেন তিনি। এ বছরও ১১ বিঘা জমিতে ব্রিধান-২৯ জাতের বোরো ধান চাষ করছেন। সে আরো বলেন, চারা উৎপাদন, জমি প্রস্তুত, মই দিয়ে জমি সমান করা, চারা রোপণ, সার, কীটনাশক,আগাছা পরিষ্কার এবং কাটা বাবদ প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষে প্রায় ১১ হাজার টাকা খরচ হয়। ধান ভাল হলে প্রায় ২৫ মন হারে ফলন পাওয়া যায়। তবে যারা অন্যের জমি ইজারা নিয়ে চাষ করেন তাদের প্রতিবিঘায় অতিরিক্ত আরো ৮ হাজার টাকা খরচ হয়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। ধানের দাম ভাল থাকায় বর্তমান সময়ে বোরো ধানের চাষ করে লাভবান হচ্ছেন কৃষক।