
ছবি: সংগৃহীত
অভিমান- এটি একান্তই মানবিক একটি অনুভূতি। কিন্তু শিশুর বয়সে যখন এই অভিমান মাত্রাছাড়া হয়ে ওঠে, তখন তা বাবা-মায়ের জন্য হয়ে দাঁড়ায় বড় চ্যালেঞ্জ। সম্প্রতি মনোবিদদের পরামর্শ অনুসারে, অতি অভিমানী শিশুর মানসিক বিকাশে বিশেষ যত্ন ও কৌশলের প্রয়োজন।
শিশুর অভিমান: একটি স্বাভাবিক মানসিক প্রবণতা: শিশুরা যখন নিজেদের অনুভূতি প্রকাশ করতে শেখে, তখন তারা কখনো রাগ, কখনো কান্না কিংবা অভিমান দিয়ে নিজের অবস্থান বোঝানোর চেষ্টা করে। এটি তাদের আত্মপরিচয় তৈরির একটি অংশ।
অভিমানী শিশুর বৈশিষ্ট্য:
সামান্য কারণে মন খারাপ করা বা চুপ করে যাওয়া, প্রত্যাশা পূরণ না হলে অস্বাভাবিকভাবে প্রতিক্রিয়া দেখানো, নিজেকে বিচ্ছিন্ন রাখা বা কান্নাকাটি করা, বারবার নিশ্চিত হতে চাওয়া যে সে ভালোবাসা পাচ্ছে।
কীভাবে সামলাবেন?
শিশুর এই অভিমানকে অবহেলা না করে বুঝে নিতে হবে, কী তাকে কষ্ট দিচ্ছে। নিচে কিছু কার্যকর উপায় তুলে ধরা হলো:
১. ধৈর্য ধরে শুনুন: শিশু কী বলতে চাইছে, মনোযোগ দিয়ে শুনুন। প্রশ্ন করুন, “তুমি মন খারাপ করেছ কেন?” এতে সে অনুভব করবে, তার কথা গুরুত্ব পাচ্ছে।
২. নেতিবাচক আচরণে বিরক্ত না হয়ে সহানুভূতি দেখান: রাগ বা চিৎকার করে নয়, বরং শান্তভাবে বলুন, “তুমি কষ্ট পেয়েছ বুঝতে পারছি, কিন্তু...”। এতে শিশু ধীরে ধীরে নিজের আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখবে।
৩. সাহস দিন নিজের অনুভূতি প্রকাশে: শিশুকে বলুন, “তুমি যদি মন খারাপ করো, বলতে পারো- আমি মন খারাপ করেছি।” এটি তার আত্মবিশ্বাস বাড়াবে।
৪. ভালোবাসা ও আশ্বাস দিন: অভিমান ভাঙাতে জোর নয়, বরং একটু আলিঙ্গন, বা ‘আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি’ বলেই অনেক সময় কাজ হয়।
৫. একইসঙ্গে নিয়মশৃঙ্খলা বজায় রাখুন: ভালোবাসার পাশাপাশি, শেখাতে হবে কোন আচরণ গ্রহণযোগ্য নয়। যেমন: “তুমি রাগ করতেই পারো, কিন্তু জিনিস ভাঙা ঠিক নয়।”
অতি অভিমানী শিশুদের প্রতি বাড়তি মনোযোগ ও সহানুভূতি প্রদর্শনই পারে তাদের মানসিক ভারসাম্য রক্ষা করতে। মনে রাখতে হবে, শিশুদের মন অনেকটাই স্পঞ্জের মতো -যেমনটি গড়ে দেবেন, তেমনটিই হবে।
মিরাজ খান