ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা বাড়লেও কমেনি শীতের তীব্রতা

স্টাফ রিপোর্টার, পঞ্চগড় 

প্রকাশিত: ২০:৪৬, ১৬ জানুয়ারি ২০২৩

পঞ্চগড়ে তাপমাত্রা বাড়লেও কমেনি শীতের তীব্রতা

খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

পঞ্চগড় জেলার একদম কাছে হিমালয় পর্বত অবস্থিত হওয়ায় দেশের অন্যান্য জেলার তুলনায় এখানে শীত একটু ভিন্নভাবে আসে। কখনও হাল্কা আবার কখনও তীব্র শীত অনুভূত হয়। বরাবরই পুরো জেলাজুড়ে শীতের প্রকোপ একটু বেশি থাকে। এখানে শীতের আগমন যেমন আগে ঘটে, তেমনি শীতও যায় একটু দেরিতে। 

এবার হেমন্তেই পঞ্চগড়ে শীতের দেখা মিললেও শীতের তীব্রতা বেড়েছে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে। জানুয়ারির শুরু থেকে এ জনপদের উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শৈত্য প্রবাহ। কখনও মৃদু আবার কখনও মাঝারি। জানুয়ারি এলেই প্রান্তিক এ জনপদের তাপমাত্রা কমতে থাকে পাল্লা দিয়ে। সেই সঙ্গে শীতের তীব্রতাও বাড়ে কয়েক গুণ। 

গত কয়েকদিন ধরে এ জেলার তাপমাত্রা ৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। 

সোমবার পঞ্চগড়ের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৯ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তাপমাত্রা বাড়লেও ঘন কুয়াশায় ঢাকা আকাশ ও হিমালয় থেকে ধেয়ে আসা কনকনে ঠান্ডা বাতাসে শীতের তীব্রতা অনেকটা বাড়িয়ে দিয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে দিনে সূর্যের দেখা মিললেও তাতে কাঙ্খিত উত্তাপ মিলছে না। 

আবার বিকেল গড়াতেই তাপমাত্রা নামতে থাকে। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে বাড়ে কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাস। রাতভর বৃষ্টির ফোটার মতো ঝরে কুয়াশা। সকাল ৮ থেকে ৯ টা পর্যন্ত কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকে পথঘাট। টানা শৈত্য প্রবাহে উত্তরের এই জনপদের জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। দুর্ভোগ  বেড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষের। তেমন কাজ না থাকায় এই সময়টিতে দৈনিক আয় নির্ভর মানুষের অনেকেই বেকার হয়ে পড়েছেন। 

এছাড়া নদীর বরফ গলা জলে পাথর ও বালি তোলা শ্রমিকদের একটা বড় অংশ বেকার হয়ে পড়েছেন। জীবিকার তাগিদে কেউ কেউ কনকনে ঠান্ডার মধ্যেই বালি পাথর তুলছেন। ভোরে রিকশা ভ্যান নিয়ে বের হতে হচ্ছে নি¤œ আয়ের মানুষকে। কৃষি শ্রমিকরাও কষ্ট করে কাজ করছেন। অন্যদিকে প্রয়োজনীয় সংখ্যক শীতবস্ত্র না থাকায় কষ্টে রাত পার করছেন দরিদ্র মানুষ। অনেকেই খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন।

জেলা শহরের রিক্সাভ্যান চালক মজিবর রহমান বলেন, সকালে ভ্যান নিয়ে বের হলে টের পাওয়া যায় শীত কতটা। ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে হাড় পর্যন্ত হিম হয়ে আসে। গরম কাপড় পড়লেও শীত মানে না। হাত পা অবশ হয়ে আসে।

দিনমজুর আব্দুল কুদ্দুস বলেন, আমরা প্রতিদিন সূর্যের অপেক্ষা করি। সূর্যের দেখা মিললে কাজ করতে কিছুটা স্বস্তি পাই। এখন দিন কিছুটা রোদ থাকে আর সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত তীব্র শীত থাকে।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, বর্তমানে পঞ্চগড়ের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের শৈত্য প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। জানুয়ারিতে আরও দুটি শৈত্য প্রবাহের পূর্বাভাস রয়েছে।

পঞ্চগড় জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম জনকণ্ঠকে বলেন, পঞ্চগড়ে যেহেতু প্রতি বছর শীতের তীব্রতা থাকে তাই শীত মোকাবেলায় এ এলাকার মানুষের আগাম প্রস্তুতি থাকে। এখন পর্যন্ত পঞ্চগড়ের দরিদ্র শীতার্তদের মাঝে ৪০ হাজার শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। আমরা দরিদ্র শীতার্তদের খুঁজে খুঁজে তাদের মাঝে এই শীতবস্ত্র বিতরণ করছি।
 

 

এসআর

×