ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

দুর্যোগের ঘনঘটা, ডুববে বাংলাদেশ?

প্রকাশিত: ০১:০৫, ১০ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০১:০৬, ১০ জুলাই ২০২৫

দুর্যোগের ঘনঘটা, ডুববে বাংলাদেশ?

ছবি: সংগৃহীত

 বাংলাদেশের আকাশে জমেছে দুর্যোগের ঘনঘোর মেঘ। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমী বায়ুর সক্রিয়তায় এবং টানা ভারী বৃষ্টিপাতে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা, নদীর পানি বেড়ে গেছে বিপদসীমার ওপরে। বিশেষ করে ফেনী জেলায় মুহুরী নদীর পানি বৃদ্ধি এবং বাধ ভেঙে প্লাবনের ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েছে স্থানীয় জনগণ।

টানা বৃষ্টিতে মুহুরী নদীর অন্তত ছয়টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ফলে আশপাশের গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়েছে নদীর পানি। তলিয়ে যাচ্ছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি ও মাছের ঘের। ফেনীতে প্লাবনের কারণে এখন পর্যন্ত ৯৯টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এবং ইতোমধ্যেই আশ্রয় নিতে শুরু করেছে দুর্গত এলাকার মানুষ।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দক্ষিণ-পূর্ব কিংবা দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ১০-১৫ কিলোমিটার বেগে বাতাস বয়ে যেতে পারে এবং আকাশ থাকবে মেঘাচ্ছন্ন। একইসঙ্গে ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা রয়েছে। ঢাকায় গতকাল ৪৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকায় অতি ভারী বর্ষণে ভূমিধসের আশঙ্কা করা হচ্ছে। একদিকে নদীভাঙন, অন্যদিকে পাহাড়ধস—প্রাকৃতিক দুর্যোগের এই চক্র মানবিক সংকটের আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।

আবহাওয়া পূর্বাভাস বলছে, রাজস্থান থেকে শুরু হয়ে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত মৌসুমী অক্ষরেখা এবং পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপের কারণে সৃষ্টি হয়েছে এই টানা বর্ষণ। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এখন উত্তাল। সমুদ্রবন্দরগুলোকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কতা সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃষ্টিতে কৃষিখাতে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ব্যাপক। তলিয়ে গেছে আগাম বীজতলা, ধানের চারা, সবজি ক্ষেত, কাঁচা রাস্তা এবং নিম্নাঞ্চলের বসতবাড়ি। দুশ্চিন্তায় হাজার হাজার কৃষক ও সাধারণ মানুষ। পরিস্থিতির আরও অবনতি হলে দেখা দিতে পারে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের তীব্র সংকট।

সবমিলিয়ে এবারের মৌসুমী বৃষ্টিপাত পরিণত হয়েছে এক ভয়াবহ দুর্যোগে। সরকার ও স্থানীয় প্রশাসন ইতিমধ্যে প্রস্তুতি নিচ্ছে, তবে টিকে থাকতে হবে প্রকৃতির বিপরীত স্রোতের মাঝেই।

 

শেখ ফরিদ 

×