ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

বন্যা ও ভূমিধ্বসের তাণ্ডব, ভারত-নেপালের পর কি বাংলাদেশের পালা?

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১১ জুলাই ২০২৫

বন্যা ও ভূমিধ্বসের তাণ্ডব, ভারত-নেপালের পর কি বাংলাদেশের পালা?

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ঠিক ওপরে অবস্থিত হিমালয়ের দেশ নেপালে প্রলয়ের মতো তাণ্ডব চালাচ্ছে বৈরি আবহাওয়া। ভারী বৃষ্টিপাতে পাহাড়ি এলাকা ও নদী ভাঙ্গনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। নেপালি সেনারা হেলিকপ্টারে ঝুলিয়ে নাগরিকদের উদ্ধার করছেন, কেউ শ্রোতসিনি নদীর মাঝখান থেকে, কেউ তীর কিংবা পাহাড়ের ঢাল থেকে তোলা হচ্ছে। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে, কুলহারা পানির স্রোতে মানুষ ভাসছে, ধর্মীয় স্থাপনা, গাড়ি ও বাড়ি বন্যার পানিতে ডুবেছে, এবং সুউচ্চ উপাসনালয় ভেঙে পড়েছে। প্রাণ হারাচ্ছেন অনেক মানুষ।

উপমহাদেশে দীর্ঘ ১৬ বছর পর আগাম বর্ষাকাল শুরু হওয়ার পর থেকে এই অঞ্চলের মানুষ নানা দুর্যোগের মুখোমুখি হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ি এলাকায় একের পর এক ভূমিধ্বস ঘটছে, যার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বন্যা। এই দুটো দুর্যোগ নেপাল ও ভারতের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বার্তা সংস্থা রয়টারস জানিয়েছে, নেপাল-চীন সীমান্তের ভোটেকশি ও আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তিব্বতে ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে পাহাড়ি ঢল ও হিমবাহ সৃষ্ট লেকের পানির প্রভাবে ভোটেকশি নদীর ওপর নির্মিত ফ্রেন্ডশিপ ব্রিজ ভেসে গেছে। এই সেতুটি ভেঙে যাওয়ায় নেপালে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।

বন্যার অবনতি হওয়ায় রাজধানী কাঠমান্ডুর উত্তরের জেলা রাসুয়া পরিদর্শন করেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা। তিনি নিজ চোখে বন্যার ক্ষয়ক্ষতি দেখেছেন এবং উদ্ধার কাজের ব্যাপারে বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেছেন। রাসুয়া জেলার জৈষ্ঠ প্রশাসনিক কর্মকর্তা অর্জুন পাওদেল জানান, ইতোমধ্যে প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং উদ্ধার তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।

নেপালে বন্যার পাশাপাশি ভারতে হিমাচল, গুজরাট, মহারাষ্ট্র ও উত্তর প্রদেশের অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে ডুবে গেছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে এই প্রদেশগুলিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি হতাহতের ঘটনাও ঘটেছে।

বাংলাদেশেও বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করছে। বিশেষ করে ফেনীর অধিকাংশ এলাকা পানির নিচে ডুবে গেছে। ভারতের উজান থেকে নেমে আসা পানির চাপের ফলে কহরি, মহুয়া ও সিলোনিয়া নদীর বাঁধের অন্তত তিনটি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ফলে আশেপাশের গ্রামগুলোতে পানি প্রবেশ করেছে এবং বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। অনেকের ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র নষ্ট হয়েছে। অনেকে গবাদী পশুসহ পরিবার নিয়ে প্রতিবেশীর দোতলা ভবনের ছাদে আশ্রয় নিয়েছেন। পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হওয়ায় পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।

 

শেখ ফরিদ

×