
শেখ মোরসালিন
বাংলাদেশের ফুটবলে আলোচিত নাম ফরোয়ার্ড শেখ মোরসালিন। তিন বছর আগে এমন এক জুলাইয়ে আলোচনায় এসেছিলেন তিনি। কুমিল্লার শহীদ ধীরেন্দ্রনাথ স্টেডিয়ামে বসুন্ধরা কিংসের বিপক্ষে দূরপাল্লার শটে দৃষ্টিনন্দন এক গোলে নজর কাড়েন সবার। তখনো বসুন্ধরার খেলোয়াড় তিনি; তবে ধারে খেলছিলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের হয়ে।
সেই মৌসুমের পর মোরসালিন পাকাপাকিভাবে হয়ে যান বসুন্ধরার। পাশাপাশি জায়গা করে নেন জাতীয় দলেও। ক্লাব ফুটবলে ঝলক দেখাচ্ছিলেন বটে, কিন্তু ধারাবাহিক হতে পারছিলেন না। কোনো মৌসুমে নিয়মিত ছিলেন না শুরুর একাদশে। ‘গেম টাইমের’ খোঁজে মোরসালিন এবার বসুন্ধরা ছেড়ে পাড়ি দিলেন আবাহনী লিমিটেডে। গত মৌসুমে ১০ ম্যাচে ৪ গোল করা মোরসালিন নতুন ক্লাবে যোগ দেয়া প্রসঙ্গে বলেন, আবাহনীতে গিয়েছি গেম টাইমের জন্য।
আমার প্লেয়িং টাইম দরকার ছিল। ম্যাচ না খেলতে পারলে তো দিন শেষে কোনো মূল্য নেই। এ জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া। টাকার দিকটাও খেয়াল রেখেছেন মোরসালিন। এ প্রসঙ্গে বলেন, আবাহনী আমাকে ভালো অঙ্কের প্রস্তাব দিয়েছে। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার পর মনে হয়েছে, সেখানে গেলে ভালো হবে। দিন শেষে টাকাও একটা মানে রাখে। আমাদের বুট কেনা লাগে, এটা-ওটা কেনা লাগে। তা ছাড়া খাদ্যাভ্যাসের জন্য আলাদাভাবে খরচ করতে হয়।
আবাহনীর ঐতিহ্যের কথা ছোট থেকে শুনে আসছেন ১৯ বছর বয়সী মোরসালিন। আকাশি-নীল জার্সির মাহাত্ম্যও টের পাচ্ছেন তিনি। বলেন, ছোটবেলা থেকে আবাহনী-মোহামেডান শুনেই তো বড় হয়েছি। তাই সেদিক থেকে আলাদা এক আকর্ষণ কাজ করছিল। আবাহনীতেও খেলার ইচ্ছা কাজ করত। আবাহনী ঐতিহ্যবাহী ক্লাব। আবাহনীর জার্সির একটা আলাদা ব্যাপার আছে। সেই চিন্তা করেই আবাহনীতে আসা। অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে আবাহনীর প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফর্ম করতে চান মোরসালিন।
তার ভাষ্য, আবাহনীর প্রত্যাশা এবার লিগ চ্যাম্পিয়ন হওয়া। আমার কাছ থেকে তারা ভালো খেলা প্রত্যাশা করে। আমি অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার হিসেবে আমার জায়গা থেকে দলকে সহায়তার জন্য শতভাগ দেওয়ার চেষ্টা করব। গত মৌসুমের মতো এবারও আবাহনীর ডাগআউটের দায়িত্বে রয়েছেন মারুফুল হক। ১২ আগস্টে এএফসি চ্যালেঞ্জ লিগে কিরগিজস্তানের মুরাস ইউনাইটেডের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে ইতোমধ্যে অনুশীলন শুরু করেছেন তিনি। তাঁর অধীনে নিজেকে আরও উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান মোরসালিন। তিনি বলেন, মূলত তাঁর (মারুফুল হক) জন্যই এখানে আসা। শুনেছি, তিনি অনেক ভালো কোচ। তাঁর অধীনে কখনো অনুশীলনের সুযোগ হয়নি। তাঁর কাছে ট্রেনিং করলে পারফরম্যান্সে অনেক উন্নতি হবে; এটি আবাহনীতে আসার অন্যতম কারণ বলতে পারেন।
জাতীয় দলের হয়ে শেষ দুটি ম্যাচে খেললেও মোরসালিন ছিলেন না শুরুর একাদশে। প্রবাসী ফুটবলারদের অন্তর্ভুক্তি দলের মধ্যে বাড়িয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্যকর প্রতিদ্ব›িদ্বতা। যা টের পাচ্ছেন মোরসালিনও। এ বিষয়ে তিনি বলেন, এখন ভবিষ্যতের লক্ষ্য আবাহনীর হয়ে শিরোপা জেতা। লিগে আরও ভালো করতে হবে, নজরকাড়া পারফর্ম করতে হবে। তারপর জাতীয় দলে শুরুর একাদশে জায়গা করে নিতে পারব ইনশা আল্লাহ। জাতীয় দলে অবশ্যই প্রতিদ্ব›িদ্বতা বেড়েছে।