ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

জাতীয় দলের অপেক্ষায়

চট্টগ্রামের “হামজা” রাশেদ আহমেদ: ইউরোপিয়ান স্টাইলে খেলা এক বিস্ময়

ইমরানুল হক, আনোয়ারা, চট্টগ্রাম:

প্রকাশিত: ১৪:৪৭, ১৪ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৪:৪৮, ১৪ জুন ২০২৫

চট্টগ্রামের “হামজা” রাশেদ আহমেদ: ইউরোপিয়ান স্টাইলে খেলা এক বিস্ময়

চট্টগ্রামের ফুটবল অঙ্গনের পরিচিত এক নাম রাশেদ আহমেদ, যাকে স্থানীয়রা ভালোবেসে ডাকেন “হামজা” নামে। মাঠে তার ক্ষিপ্রতা, বল কন্ট্রোল এবং প্লে-মেকিং দক্ষতা দর্শকদের মুগ্ধ করে। ফুটবল বোদ্ধারা মনে করেন, জাতীয় দলের জার্সি গায়ে চাপানোর মতো সবরকম যোগ্যতা তার রয়েছে, কিন্তু এখনো সেই কাঙ্ক্ষিত সুযোগ মেলেনি।

রাশেদের ফুটবল যাত্রা শুরু হয় চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চাতরী ইউনিয়নের মহতর পাড়া গ্রাম থেকে। ছোটবেলা থেকেই ফুটবলের প্রতি তার ছিল প্রবল আকর্ষণ। স্থানীয় পর্যায়ে ধারাবাহিক পারফরম্যান্সের মাধ্যমে নিজের জাত চিনিয়েছেন এই প্রতিভাবান মিডফিল্ডার। বিশেষ করে চট্টগ্রাম ফুটবল লিগ ও আন্তঃবিভাগীয় প্রতিযোগিতায় তার খেলা নজর কাড়ে কোচ ও বিশ্লেষকদের।

ফুটবলপ্রেমীদের কাছে "হামজা" নামে পরিচিত রাশেদ মাঠে যেন এক চলমান শিল্পী। তার বল কন্ট্রোল, থ্রু পাস এবং খেলার গতি বদলে দেওয়ার ক্ষমতা তাকে অন্যদের থেকে আলাদা করে তোলে। ইউরোপিয়ান ঘরানার খেলার ছাপ পাওয়া যায় তার খেলায়। বিশেষ করে তার লম্বা থ্রু পাস ও গতিশীলতা স্থানীয় কোচদের মনে আশার আলো জাগিয়েছে।

স্থানীয় কোচদের মতে, রাশেদের খেলায় রয়েছে নেতৃত্বগুণ, কৌশলগত বুদ্ধিমত্তা এবং আক্রমণভাগে সৃজনশীলতা। অথচ, এখনো জাতীয় দলের ডাকে সাড়া দিতে পারেননি তিনি। কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সুযোগের অভাব ও প্রভাবশালী যোগাযোগের ঘাটতি।

রাশেদ নিজেও বলেন, “খেলার মান নিয়ে কখনো অভিযোগ পাইনি, কিন্তু সুযোগ যেন একটা নির্দিষ্ট গণ্ডির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। অনেক সময় মনে হয় চেষ্টা করেও হবে না, তবুও হাল ছাড়িনি।”

স্থানীয় সাংবাদিক ইমরানুল হক চৌধুরী বলেন, “সে অসাধারণ একজন খেলোয়াড়। জাতীয় দলে খেলার মতো যোগ্যতা তার মধ্যে রয়েছে। কিন্তু সুযোগ না পাওয়ায় সে আজও বঞ্চিত।”

ফুটবলপ্রেমীদের আশা, জাতীয় দলে সুযোগ পেলে রাশেদ আহমেদ দেশের ফুটবলে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করতে পারেন। হাজারো দর্শক মাঠে এসে তার খেলা উপভোগ করেন। একটি পাস, একটি ড্রিবল কিংবা একটি থ্রু—সবই যেন একেকটি নিখুঁত শিল্পকর্ম।

ফুটবল বিশ্লেষকরা বলেন, “এমন প্রতিভা চাপা থাকে না। শুধু দরকার সঠিক সময়ে সঠিক সুযোগ। রাশেদ আহমেদের মতো খেলোয়াড়রা জাতীয় পর্যায়ে সুযোগ পেলে বাংলাদেশের ফুটবল আবারও জেগে উঠতে পারে।”

এখন সময় তার মূল্যায়নের। সময় তাকে পাশে দাঁড়ানোর। “হামজা” নামে পরিচিত এই বিস্ময় প্রতিভা একদিন দেশের জার্সিতে মাঠ কাঁপাবেন—এমনটাই প্রত্যাশা চট্টগ্রামসহ দেশের সব ফুটবলপ্রেমীর।

নুসরাত

×