খন্দকার জামিল উদ্দিন
ইতোমধ্যেই বাংলাদেশের সরকারে পরিবর্তন এসেছে। ক্রীড়ামন্ত্রীর পদে নেই নাজমুল হাসান পাপন। কিন্তু নির্বাচিত সভাপতি হিসেবে তিনি এখনো বহাল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি)। তার মেয়াদ ২০২৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) বিধি অনুসারে নির্বাচিত বোর্ড পরিচালনা পর্ষদে সরকারি হস্তক্ষেপ করা যায় না।
সেক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসিত হতে পারে সেই ক্রিকেট বোর্ড। কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে সামনে ব্যস্ত সূচি, ঘরের মাঠে মেয়েদের বিশ^কাপ আয়োজনও রয়েছে। তবে পাপন লাপাত্তা, সরকার পতনের পর থেকেই তিনি বোর্ডে আসেননি, পদত্যাগও করেননি। এক্ষেত্রে বোর্ডের নীতিনির্ধারণ এবং সার্বিক কর্মকা- সুষ্ঠুভাবে পরিচালনায় পরামর্শ দিয়েছেন বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক ও সাবেক বিসিবি পরিচালন খন্দকার জামিল উদ্দিন।
তিনি দৈনিক জনকণ্ঠকে জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তিতে আইসিসির কাছে অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠনের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করতে হবে।
বিসিবিতে ২ বার অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি হয়েছে। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে এবং ২০১৩ সালে আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পাপনের মধ্যবর্তী সময়েও ছিল অন্তর্বর্তীকালীন কমিটি গঠন করে। এবারও কিভাবে সেটি হতে পারে তা নিয়ে জামিল বলেছেন, ‘যদি পাপন ভাই পদত্যাগ না করে তাহলে তো নতুন বোর্ড করার প্রয়োজন পড়বে। সেক্ষেত্রে আইসিসির অনুমোদন লাগবে।
এটা যেহেতু আইসিসির গাইডলাইন অনুসারে পরিচালিত হয়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়েছে, ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব যিনি পাবেন তাকে আইসিসির কাছে লিখতে হবে বর্তমান পরিস্থিতি জানিয়ে। আইসিসি নিশ্চয় পুরো পরিস্থিতি নজরে রাখছে এবং তারা তো জানেই বাংলাদেশে কি হচ্ছে। সেজন্য তাদের লিখতে হবে, এই পরিস্থিতিতে আমাদের যেহেতু অনেকগুলো ক্রিকেট কর্মকা- আছে।
বিশ্বকাপ আছে, পাকিস্তান সফর, দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ আছে সেজন্য বোর্ডের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য আমাদের অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন করা দরকার। আরেকটি বিষয় হচ্ছে নীতি-নির্ধারণী যে সিদ্ধান্তগুলো সেসব কিন্তু প্রধান নির্বাহীর পক্ষে নেওয়া সম্ভব না, বোর্ডকে নিতে হবে। তাই কার্যকর কোনো বোর্ড যদি এটা পরিচালনা না করে সেক্ষেত্রে বাংলাদেশের ক্রিকেট মুখ থুবড়ে পড়তে পারে।’
ইতোমধ্যেই বৈষম্যের শিকার ও বঞ্চিত ক্রীড়া সংগঠকরা বিসিবিতে গিয়ে শো-ডাউন দিয়েছেন। অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ড গঠন নিয়ে জামিল বলেছেন, ‘যিনি দায়িত্বে থাকবেন, কাদেরকে নিয়ে বোর্ড গঠন করবেন সেটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। আমি মনে করি এখনই সময়, যেহেতু আন্দোলনটাই হয়েছে বৈষম্যবিরোধী মেধার জন্য।
সুতরাং যাদের মেধা আছে, যারা প্রকৃত ক্রীড়া সংগঠক, বৈষম্য কমিয়ে মেধার ভিত্তিতেই যাতে সবকিছু হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।’ বিসিবি আর্থিকভাবে বিশে^র অন্যতম শক্তিশালী একটি বোর্ড। আর্থিক ক্ষতিসাধন কোনো মহল করতে পারবে কিনা তা নিয়ে জামিল বলেছেন, ‘আমি যতটুকু জানি বিসিবির যে অর্থ আছে সেটির প্রায় সবই এফডিআর করা আছে এবং সেটার মেয়াদ আছে।
এটা বিসিবির সম্পদ, এটা নষ্ট হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নির্দিষ্ট কয়েকজনের স্বাক্ষর ছাড়া এটা কোনোভাবেই ভেঙে ফেলা সম্ভব নয়।’ এ সময় বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরির বিষয়টি নিয়ে জামিল বলেছেন, ‘নতুন বোর্ড খতিয়ে দেখবে যারা বোর্ডে চাকরি করে তারা অতি উৎসাহী হয়ে কোনো কর্মকর্তা, কর্মচারীরা চাকরি বিধিমালায় পড়েনা তেমন কোনো কর্মকা-ে লিপ্ত ছিল কিনা। বিধিমালার বাইরে কোনো কাজের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিপক্ষে ব্যবস্থা নিতে হবে।’