ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৩ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১

ভক্তদের সঙ্গে তামাশা শান্তদের

প্রকাশিত: ২৩:৫৭, ২৫ জুন ২০২৪

ভক্তদের সঙ্গে তামাশা শান্তদের

রকিবুল হাসান

প্রিয় পাঠক, আরও একবার হৃদয়ে ব্যথা নিয়ে আপনাদের সামনে এলাম। বুঝতে পারছি আপনাদের মনের অবস্থাও ভালো নয়। থাকার কথাও নয়। যেভাবে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে খেলার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেছে সেটা মেনে নেওয়া অসম্ভব। বিশেষ করে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ম্যাচ পরবর্তী কথাতে সবার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে। এ কি বললেন ক্যাপ্টেন! শেষ পর্যন্ত তিনি জাতির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন। কিন্তু আমার  মনে হয় ক্রিকেটাররা যা করেছেন সেটা ক্ষমার অযোগ্য।

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ শেষে অধিনায়ক শান্ত জানান, তাদের পরিকল্পনা ছিল প্রথম তিন উইকেটে আক্রমণাত্মক খেলা। মানে সেমিফাইনালে যাওয়ার চেষ্টা করা। এরপর দ্রুত উইকেট হারালে স্বাভাবিক খেলার চেষ্টা করা। অর্থাৎ সেমির আশা বাদ দিয়ে শুধু জয়ের চেষ্টা করা! প্রিয় পাঠক, ভাবতে পারেন কি অবিশ্বাস্য পরিকল্পনা, অকল্পনীয় ব্যাপার। বিশ্বের আর কোনো দল এমন সুযোগ পাওয়ার পর এভাবে পরিকল্পনা করবে!! দলের সামনে সেমিফাইনালে খেলার সুবর্ণ সুযোগ। সেটা খুব একটা কঠিনও না।

শুরুটাও ভালো হয়েছিল। কিন্তু সেই চেষ্টায় হাল ছেড়ে দিয়েছেন ৩ উইকেট হারানোর পরই! সুপার এইটে আগের দুই ম্যাচে বাজেভাবে হারার পরও অদ্ভুতভাবে সেমিতে খেলার সুযোগ চলে আসে। সেই সুযোগটা এভাবে হেলায় হারাবেন সাকিব-মাহমুদুল্লাহরা সেটা অবিশ্বাস্য। 
সবচেয়ে অবাক করা বিষয়, তাদের মানসিকতা। ১২.১ ওভারে লক্ষ্যপূরণ করতে পারলেই সেমি। এটা খুব বেশি কঠিন লক্ষ্য ছিল না। হরহামেশাই এখান থেকে ১২০-১৩০ রান হয়ে থাকে। কিন্তু যে পরিকল্পনা, যে মানসিকতা নিয়ে ক্রিকেটাররা খেলেছেন সেটা এককথায় জাতির সঙ্গে প্রতারণার শামিল। খেলা শেষে অধিনায়ক তাদের পরিকল্পনার কথা বলেছেন। কিন্তু সেটি নিশ্চয়ই তার একার পরিকল্পনা নয়। প্রধান কোচ, কোচিং স্টাফের অন্যরা, সিনিয়র ক্রিকেটার তথা টিম ম্যানেজমেন্টের সবাই এমন পরিকল্পনা করেছেন।

সবার মতো আমিও বলব, এভাবে বাজে পরিকল্পনার চেয়ে ১০-১২ ওভারে ৯০-১০০ রান করে অলআউট হয়ে যাওয়াও ভালো ছিল। তাতে করে সবাই এ শান্তিটুকু পেত যে ছেলেরা চেষ্টা করেছেন। কিন্তু অধিনায়কের কথায় স্পষ্ট, তারা নিরাপদ কৌশল বেছে নিয়েছেন। কোনোরকমে জয় দিয়ে মুখরক্ষা করতে চেয়েছেন। সেটা হলে গলা বাড়িয়ে বলতে পারতেন, সাত ম্যাচ খেলে চারটিতেই জিতেছি। এটা তো অনেক বড় সাফল্য!
প্রিয় পাঠক, শেষ পর্যন্ত কৌশলের জয়ও পায়নি বাংলাদেশ।

এখন সময় এসেছে দল ঢেলে সাজানোর। এই দলের অনেক ক্রিকেটারকেই বিদায় করে দেওয়া উচিত। আফগানিস্তানের কাছ থেকেও অনেক কিছু শেখার আছে। এই দলটি গত কয়েক বছর অবিশ্বাস্য ক্রিকেট খেলে চলেছে। তাদের সেমিফাইনালে খেলা প্রাপ্য ছিল। সেটাই তারা করে দেখিয়েছে যোগ্যতাবলে। তাদের অভিনন্দন। আমার তো মনে হচ্ছে সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকেও হারিয়ে দিতে পারে রশিদ খানের দল। শুভকামনা রইল আফগানদের জন্য।
অনুলিখন : জাহিদুল আলম জয়।

×