ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

মিরাজের আত্মবিশ্বাস অন্যদের অনুপ্রেরণা

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২৩:৫২, ৫ ডিসেম্বর ২০২২

মিরাজের আত্মবিশ্বাস অন্যদের অনুপ্রেরণা

ভারতকে হারানোর পর মিরাজকে নিয়ে সতীর্থদের উল্লাস

মাত্র ১৮৭ রানের জয়ের লক্ষ্য। সাবধানী বাংলাদেশ সতর্ক ব্যাটিংয়ে ৪ উইকেটে ১২৮ রান তুলে ফেলে। কিন্তু হঠাৎ ছন্দপতনে ৮ রানের মধ্যেই ৫ উইকেট হারিয়ে নিশ্চিত পরাজয়ের দুয়ারে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ দল। কিন্তু হাল ছাড়েননি মেহেদি হাসান মিরাজ, বিশ্বাসও কমেনি। তার আত্মবিশ্বাসী ইনিংসে শেষ পর্যন্ত ১ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয় পেয়েছে বাংলাদেশ।

ম্যাচের পর নিজের মধ্যে থাকা সেই অটুট বিশ্বাস থাকার বিষয়ে জানিয়েছেন এ অলরাউন্ডার। আর দুই ওয়ানডে খেলতে হবে রোহিত শর্মা-বিরাট কোহলিদের শক্তিশালী ভারতের বিপক্ষে। সেই দুই ম্যাচে মিরাজের আত্মবিশ্বাসের ছায়া এখন বাকিদের মনে জাগার অপেক্ষা। তাহলেই হয়তো ২০১৫ সালের পর আরেকবার সিরিজ জয়ের গৌরব দেখাতে পারবে টাইগাররা।
৯ উইকেটে ১৩৬ রান থেকে ৩৯ বলে অবিচ্ছিন্ন ৫১ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েছেন অবিশ্বাস্য মিরাজ। নিজেকে নিয়ে বিশ্বাস থাকলেও সঙ্গীকে নিয়ে তেমন আশা করতে পারেননি তিনি। কারণ তাকে সঙ্গ দিতে নামেন মূলত বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান। তবে তিনিও প্রথমেই মিরাজকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ‘আমাকে নিয়ে টেনশন করার কিছু নেই। আমি ঠেকিয়ে দিচ্ছি। আমি আউট হব না, গায়ে বল লাগলেও সমস্যা নেই।’

মুস্তাফিজের এমন দৃঢ়তাপূর্ণ কথায় সাহস কয়েক গুণ বেড়েছে মিরাজের এবং তিনি আত্মবিশ্বাসী হয়েছেন কিছু একটা করা সম্ভব। অথচ তখনো জয় থেকে ৫১ রান দূরে বাংলাদেশ। একটি ভালো বলে শেষ উইকেট তুলে নিতে পারলেই জিতে যাবে ভারত। অতীতে ২ বার- ২০০৭ ও ২০০৯ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ১ উইকেটে জিতেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারতের মতো শক্তিধর প্রতিপক্ষকে হারানো এমন পরিস্থিতিতে অকল্পনীয়।

কিন্তু মুস্তাফিজের কথা নিয়ে ম্যাচ শেষে বিস্ময়কর সেই কা- ঘটিয়ে ফেলা মিরাজ বলেন, ‘ওর আত্মবিশ্বাস দেখে আমার বিশ্বাস আরও বেড়েছে। শেষ উইকেট যখন ছিল, তখন তো ‘ডু অর ডাই।’ মানে হারানোর কিছু নেই। তখন তো ঝুঁকি নিতেই হবে। ঝুঁকিটা এমন নিয়েছি... মুস্তাফিজের কথা খুব ভালো লেগেছে- ওর কথা কানে বাজছিল তখন নিজের মধ্যে নিজের বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আমার কাছে একবারও মনে হয়নি যে ম্যাচটা হারব।

শুধু একটা কথা বারবার বলছিলাম, আমার মনে যেটা চলছিল, আমি পারব। বারবার নিজেকে বলেছি, ‘আমি পারব, আমি পারব।’ মুস্তাফিজের কথায় অনুপ্রাণিত হয়ে একজন মিরাজ যদি অসম্ভবকেই সম্ভবে রূপ দিতে পারেন, তাহলে বাকিরা কি পারবেন না? এমন একটি জয়ের পর সিরিজের বাকি দুই ওয়ানডেতে আরও শক্ত মনোবল পাওয়ার কথা লিটন দাস, সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমদের। এই সিরিজে অধিনায়ক লিটন জেতার প্রত্যয় জানিয়েছেন। মিরাজের বীরত্বে সেই পথে একধাপ এগিয়ে গেছে টাইগাররা। এবার সেই বীরত্বগাথাকে পুঁজি করে দলের বাকিদের মনে আত্মবিশ্বাসের স্ফুরণ জাগার অপেক্ষা। তাহলেই লক্ষ্য পূরণ হবে।

×