ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

মাথা গোঁজার ঠাঁই নিয়ে চিন্তিত তারকা এই ডিফেন্ডার

সাতক্ষীরায় ভালবাসায় সিক্ত সাফজয়ী মাসুরা

মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা

প্রকাশিত: ০০:৩০, ১ অক্টোবর ২০২২

সাতক্ষীরায় ভালবাসায় সিক্ত সাফজয়ী মাসুরা

চ্যারিটি ম্যাচ খেলার আগে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হন মাসুরা

সাফ জয়ের পর প্রথমবারের মতো নিজ জেলা সাতক্ষীরায় এসেছেন নারী ফুটবল দলের তারকা ডিফেন্ডার মাসুরা পারভীন। নিজ জেলায় ফিরেই তিনি উপকূলীয় শ্যামনগরে খেলেছেন একটি চ্যারিটি ম্যাচ। সেখানে হাজারো মানুষের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত মাসুরার মুখে হাসি থাকলেও মনে রয়েছে শঙ্কা। সাতক্ষীরায় তার মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই। বাবা-মা ও বোনেরা থাকেন সড়ক ও জনপথ বিভাগের জায়গায়।

সড়ক বিভাগ থেকে ইতোমধ্যে তাদের বাড়িটি উচ্ছেদের জন্য লাল চিহ্ন একে দেয়া হলেও জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে আপাতত উচ্ছেদ বন্ধ রয়েছে। নিরাপদ আশ্রয় ও মাথা গোঁজার স্থায়ী ঠাঁই না হলে যে কোন সময় পথে বসতে হবে সাফ ফুটবল বিজয়ী নারী দলের অন্যতম ডিফেন্ডার মাসুরার পুরো পরিবারকে এমন শঙ্কায় কথা বলতে বলতে আনমনা হয়ে পড়েন মাসুরা পারভীন।
মাসুরা বৃহস্পতিবার ভোরে ছুটিতে বিনেরপোতাস্থ অস্থায়ী বাড়িতে ফেরেন। পরে তিনি শ্যামনগরে ফুটবল খেলতে যান। বিনেরপোতায় মাসুরা পারভীনদের অস্থায়ী বাড়িতে মাসুরা খাতুন, মা ফাতেমা খাতুনের ও মেঝো বোনের সঙ্গে কথা হয়। মাসুরার মা ফাতেমা খাতুন জানান, মেয়ের ফুটবলার হওয়ার গল্প। মাঠের বাইরে চলে যাওয়া বল কুড়ানো থেকে মাসুরার ফুটবলে আসক্তি। মাসুরার মা জানান, আমরা গরিব মানুষ।

ছোটবেলা থেকে মাসুরার খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ দেখে তিনি তাকে খেলা চালিয়ে যেতে বলেন। অনেকইে অনেক কথা বলতেন। মেয়ে হয়ে কেন ফুটবল খেলবে। তবে সব বাধা অতিক্রম করে তাকে খেলা চালিয়ে যেতে তিনি তাকে উৎসাহ দিতেন। মাসুরার ফুটবলের শিক্ষা গুরু কোচ প্রয়াত আকবার আলীর স্ত্রী রেহেনা খাতুন জানান মাসুরার ফুটবলে আসার কথা। পিএন স্কুল মাঠে সাবিনাসহ অন্য খেলোয়াড়রা ফুটবল খেলত।

সে সময় তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্রী মাসুরা ওই মাঠে বসে খেলা দেখত। মাঝে মাঝে বল মাঠের বাইরে গেলে মাসুরা তা কুড়িয়ে আনত। ফুটবলের প্রতি আগ্রহ দেখে আকবার আলী তাকে তার মা-বাবার কাছ থেকে নিয়ে যান। সেই থেকে মাসুরা আববর আলির প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে খেলতে খেলতে আজ এ পর্যন্ত পৌঁছেছে। মাসুরার বাবা রজব আলীর নিজস্ব জায়গা-জমি নেই। থাকেন বিনেরপোতায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায়। রজব আলী জানান, অসুস্থতার জন্য এখন তিনি কাজ করতে পারেন না। সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গায় থাকি। সরকারীভাবে একটি ঘর পেলে খুবই উপকৃত হতাম।

×