ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাতক্ষীরায় নারীদের জন্য নির্দিষ্ট মাঠ ও ফুটবল একাডেমি চান সাফ বিজয়ী অধিনায়ক সাবিনা

ফুটবল খেলা মেয়েদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

প্রকাশিত: ০০:৩৯, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফুটবল খেলা মেয়েদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের সংবর্ধনায় পুরস্কৃত করা হচ্ছে নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুনকে

মিজানুর রহমান, সাতক্ষীরা : এ যেন এক অন্য সাবিনা। সাতক্ষীরার মাটিতে কাটানো শৈশব আর কৈশরে বেড়ে উঠার গল্প আর অনেককে নিয়ে প্রয়াত প্রশিক্ষক প্রশিক্ষক আকবরের লড়াইয়ের স্মৃতিতে আপ্লুত সাবিনা খাতুন জানিয়ে দিলেন ফুটবলে মেয়েদের এগিয়ে যাওার বড় বাধা ও  প্রতিবন্ধকতা। জেলা প্রশাসনের দেয়া সংবর্ধনায় সাবিনা বলেন, ফুটবল খেলা মেয়েদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশে বড় লোকের  ঘরের মেয়েরা ফুটবল খেলে না। গরিব নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত মেয়েরাই ফুটবল খেলে। তবে খেলার সামগ্রী কেনার সামর্থ্য তাদের থাকে না। তিনি বলেন, খেলায় সব ধরনের মানুষের অংশগ্রহণ একান্ত জরুরী। দক্ষিণ এশিয়া বিজয়ী নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক, স্ট্রাইকার  সাবিনা খাতুন ও তার পরিবারের সদস্যদের সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সাবিনা প্রতিক্রিয়া ব্যাক্ত করতে গিয়ে বলেন, সাতক্ষীরায় মেয়েদের জন্য মাঠের সঙ্কট। আকবর স্যার যখন প্র্যাকটিস করাতেন তখন একশ্রেণীর মানুষ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করত। তখন তার বয়স ১২-১৩ বছর। জেলায় একটি স্টেডিয়াম থাকলেও সেখানে সব সময় খেলার সুযোগ থাকে না। সাতক্ষীরা সরকারী কলেজ মাঠ ও পিএন স্কুল মাঠ মেয়েদের খেলার জন্য উপযোগী নয়। এজন্য সাতক্ষীরায় মেয়েদের খেলার উপযোগী নির্দিষ্ট মাঠ প্রয়োজন। সাতক্ষীরায়  ফুটবল একাডেমি প্রতিষ্ঠা করার দাবি জানান তিনি।  গতকাল শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে এ সংবর্ধনা দেয়া হয় সাবিনাসহ তার পরিবারকে। সংবর্ধনায় সাবিনা ও তার পরিবারের সদস্য ও স্থানীয় কোচ প্রয়াত আকবার আলীর স্ত্রী উপস্থিত ছিলেন। সাফ জয়ের পর সাবিনা খাতুন নিজ জেলা সাতক্ষীরায় এসেছেন শুক্রবার ভোরে।

ওই দিন সার্কিট হাউস মোড় থেকে উষ্ণ সংবর্ধনা দেয় বিভিন্ন সংগঠন। শনিবার দুপুরে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা দেয়া হয়। সংবর্ধনা পেয়ে খুশি এই কৃতী ফুটবলার।   
দেশের গর্ব সাবিনাকে সংবর্ধনা দিতে পেরে আনন্দিত জেলা প্রশাসন। সাতক্ষীরায় নারী খেলোয়াড়দের এগিয়ে নিতে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির। তিনি সাবিনাকে ১ লাখ টাকা পুরস্কার দিয়েছেন। এছাড়া উপস্থিত সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবি ৩ লাখ টাকার সৌজন্য উপহার দিয়েছেন সাবিনা খাতুনকে। এ সময় সাবিনা খাতুন বলেন, সাতক্ষীরাসহ বাংলাদেশের মানুষের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। আমি মুগ্ধ। আমার বেড়ে উঠা এই সাতক্ষীরার মাটিতে। এ মাটিতেই আমার শৈশব মিশে আছে। আমি যখন ফুটবল খেলা শুরু করি, তখন আমার স্বপ্ন ছিল সাউথ এশিয়ান কাপ বাংলাদেশকে উপহার দেব। আমি সেটা দিতে পেরেছি। এটা আমার সার্থকতা। আমার পরিশ্রমের সার্থকতা। আমার সাবিনা  হয়ে ওঠার পেছনে যার অবদান সবচেয়ে বেশি, তিনি হলেন আমার প্রশিক্ষক আকবর স্যার। আমার শিক্ষক আকবর স্যার আজ নেই। উনার কথা অবশ্যই স্মরণ করতে হয়। আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। পাশাপাশি আমাকে যারা সাপোর্ট দিয়েছে তাদের সবার প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা।

 

×