ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর হাত থেকে শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার নিয়ে উচ্ছ্বসিত তারকা আরচার দিয়া সিদ্দিকী
শুক্রবার সকালে ঢাকার নগরীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে বসেছিল ক্রীড়াঙ্গনের হাট। খেলোয়াড়, কোচ, সংগঠক, ক্রীড়া কর্মকর্তাসহ ক্রীড়াঙ্গনের অনেকেই এসেছিলেন। উদ্দেশ্য বাংলাদেশের স্থপতি, বাঙালী জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বড় ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের ৭৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও ‘শেখ কামাল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ পুরস্কার’ বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দেয়া।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চুয়ালি (তার সরকারী বাসভবন গণভবন থেকে) সাতটি বিভাগে নয় ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব ও দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে পুরস্কার-২০২২ বিতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। এ সময় যুব ও ক্রীড়া সচিব মেজবাহ উদ্দিন আহমেদ ও জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব পরিমল সিংহ উপস্থিত ছিলেন।
প্রবীণ ক্রীড়া সংগঠক হারুনুর রশীদ আজীবন সম্মাননা পেয়েছেন। ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব বিভাগে লিটন কুমার দাস (ক্রিকেট), আবদুল্লাহ হেল বাকী (শূটিং) এবং মোল্লা সাবিরা সুলতানা (ভারোত্তোলন) পুরস্কার লাভ করেন। উদীয়মান ক্রীড়াবিদ হন দুজন, তারা হলেন দিয়া সিদ্দিকী (আরচার) ও শরিফুল ইসলাম (ক্রিকেট)। ক্রীড়া সংগঠক ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পান স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সংগঠক সাইদুর রহমান প্যাটেল ও মহিলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদিকা নাজমা শামীম। ক্রীড়া সংস্থা/ফেডারেশন ক্যাটাগরিতে বাংলাদেশ অলিম্পিক এ্যাসোসিয়েশন (বিওএ) এবং ক্রীড়া পৃষ্ঠপোষক হিসেবে গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড পুরস্কার লাভ করে। ক্রীড়া সাংবাদিক হিসেবে কাশীনাথ বসাক পুরস্কার লাভ করেন। পুরস্কার বিজয়ী প্রত্যেকেই পান এক লাখ টাকা, একটি ক্রেস্ট ও সনদ।
ক্রিকেটার লিটন দাস জিম্বাবুইয়ে থাকায় তার স্ত্রী দেবশ্রী বিশ্বাস সঞ্চিতা ও উদীয়মান ক্রীড়াবিদ ক্যাটাগরিতে ক্রিকেটার শরিফুল ইসলামও একই সফরে থাকায় পুরস্কার গ্রহণ করেন তার ভাই আশরাফুল ইসলাম। এছাড়া বিওএএর পক্ষে সভাপতি ও সেনাপ্রধান জেনারেল এসএম শফিউদ্দিন আহমেদ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
এদিকে বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের আলোকবর্তিকা শেখ জামালের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সরব ছিল ক্রীড়াঙ্গন। দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে বিওএ, ঢাকা আবাহনী লিমিটেড ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে)। কেক কেটেছে বাংলাদেশ শূটিং স্পোর্টস ফেডারেশন। এছাড়া দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রদর্শনী ম্যাচের আয়োজন করে ভলিবল, কাবাডি, হ্যান্ডবল ও হকি ফেডারেশন। বিওএর প্রশংসা করে ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘বিওএ’র মাধ্যমে আন্তর্জাতিক বড় গেমসগুলোতে বাংলাদেশ প্রতিনিধিত্ব করে। প্রায় প্রতি গেমসেই আমরা আন্তর্জাতিক পদক পাচ্ছি। বিশেষ করে ২০১৯ সালে এসএ গেমসে বাংলাদেশ রেকর্ডসংখ্যক ১৯টি স্বর্ণপদক অর্জন করেছিল।’
ক্রীড়া সাংবাদিক কাশীনাথ বসাক বলেন,‘৪৩ বছরের কাজের স্বীকৃতি পেলাম। শেখ কামাল একজন ক্রীড়াবিদ ও সংগঠক। তার নামকরণের পুরস্কার পাওয়ায় আরো বেশি ভাল লাগছে।’ হারুনুর রশীদ বলেন, ‘কামাল না থাকলে আবাহনী ক্রীড়া চক্র হতো না। শেখ কামালের নামে এই পুরস্কার পেয়ে আমি অত্যন্ত গর্বিত।’ সাইদুর রহমান প্যাটেল বলেন, ‘আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে শেখ কামালের নামে পুরস্কার পেয়েছি।’ মোল্লা সাবিরা বলেন, ‘কিছুদিন আগে আমার স্বামী কাজল দত্ত ভারোত্তোলনে বিশেষ অবদানের জন্য জাতীয় ক্রীড়া পুরস্কার পেয়েছিলেন। স্বামী-স্ত্রী দুজনই কিছু দিনের মধ্যে পদক পাওয়ায় ভাল লাগছে। ক্রীড়াঙ্গনের প্রতি আমাদের দায়িত্ব বেড়ে গেছে।’ আব্দুল্লাহ হেল বাকী বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমার ভাল লাগছে। তবে মনে করি শূটিং অঙ্গনের জন্য আজকের দিনটি বেশ খুশির।’ দিয়া সিদ্দিকী বলেন, ‘দেশকে আরও ভাল কিছু দেয়ার চেষ্টা করব।’