ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতি ম্যাচে আফগানিস্তানের কাছেও হারল পাকিস্তান

সরফরাজদের এ কী হাল!

প্রকাশিত: ১০:৪২, ২৬ মে ২০১৯

 সরফরাজদের এ কী হাল!

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ কিছুতেই ব্যর্থতার বৃত্ত থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না পাকিস্তান। আমিরাতে নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাসে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়ার কাছে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ‘হোয়াইটওয়াশ’ হওয়ার পর বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড সফরটা ছিল মহাগুরুত্বপূর্ণ। সেখানে একমাত্র টি২০তে ধরাশায়ী সরফরাজ আহমেদের দল ওয়ানডেতে হারে ৪-০ ব্যবধানে। মূল লড়াইয়ের আগে আত্মবিশ্বাস ফেরানের শেষ সুযোগ অফিসিয়াল প্রস্তুতি ম্যাচের প্রথমটিতেই কি না আফগানিস্তানের কাছে হারের (৪ উইকেটে) লজ্জায় ডুবল ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিরা। ব্রিস্টলের কাউন্টি গ্রাউন্ডে পরশু বাবর আজমের (১১২) সেঞ্চুরি সত্ত্বেও ৪৭.৫ ওভারে ২৬২ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। জবাবে হজরতউল্লাহ জাজাই (২৮ বলে ৪৯) ও হাসমতউল্লাহ শাহিদির (৭৪*) দারুণ দুটি ইনিংসে ভর করে ৭ উইকেট হারিয়ে ২ বল বাকি থাকতে স্মরণীয় জয় তুলে নেয় আফগানিস্তান। রান তাড়ায় শুরুতেই বোলারদের ওপর চড়াও হন হজরতউল্লাহ জাজাই ও মোহাম্মদ শাহজাদ। পাঁচ চারে ২৩ রান করে মাঠ ছাড়া কিপার-ব্যাটসম্যান শাহজাদ আর ব্যাটিংয়ে ফিরেননি। ২৮ বলে আট চার ও দুই ছক্কায় ৪৯ রানের বিধ্বংসী এক ইনিংস খেলেন জাজাই। সম্ভাবনাময় ইনিংস বড় করতে পারেননি রহমত শাহ। একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে টানেন হাশমতউল্লাহ শাহিদি। সামিউল্লাহ শেনওয়ারির সঙ্গে ৪৯ ও নবির সঙ্গে ৬৬ রানের দুটি ভাল জুটি উপহার দেন তিনি। দলের জয়কে সঙ্গে নিয়ে ফেরার সময় ৭ চারে ৭৪ রানে অপরাজিত ছিলেন শাহিদি। অনেকদিন পর পাকিস্তান দলে ফেরা বাঁহাতি পেসার ওয়াহাব ৩ উইকেট নেন ৪৬ রানে। ইমাদ ওয়াসিম দুই উইকেট নেন ২৯ রানে। উইকেট পাননি মোহাম্মদ আমির ও শাহিন শাহ আফ্রিদি। প্রস্তুতি ম্যাচে ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে নিজেদের ঝালিয়ে নেয়াটাই মুখ্য। সেখানটায়ও খুব একটা সফল নয় পাকিস্তান। এর আগে ব্যাট হাতে রান পেয়েছেন কেবল ছন্দে থাকা বাবর আজম ও অভিজ্ঞ শোয়েব মালিক। বাবর ১০৮ বলে ১০ চার ও দুই ছক্কায় খেলেছেন ১১২ রানের চমৎকার এক ইনিংস। থিতু হয়ে বড় ইনিংস খেলতে পারেননি অপর দুই তারকা ইমাম-উল-হক আর ফখর জামান। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি হারিস সোহেল এবং মোহাম্মদ হাফিজও। বাবরের সঙ্গে ১০৩ রানের জুটি গড়ার পথে ৪৪ রান করেন শোয়েব মালিক। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানও পারেননি নিজের ইনিংস বড় করতে। শেষে প্রত্যাশিত ঝড় তুলতে ব্যর্থ অধিনায়ক সরফরাজ এবং অলরাউন্ডার ইমাদ ওয়াসিমও। পাকিস্তানের লোয়ারঅর্ডার থেকে সেভাবে রান আসেনি। ১৬ রানে শেষ ৪ উইকেটে ২৬২ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলটি ব্যাট করতে পারেনি পুরো ৫০ ওভার। ফখর-হারিসকে ফেরানোর পর মালিককে থামিয়ে শতরানের জুটি ভাঙ্গেন অভিজ্ঞ স্পিনার মোহাম্মদ নবি। ৪৬ রানে ৩ উইকেট নিয়ে তিনিই দলের সেরা বোলার। তারকা লেগস্পিনার রশিদের শিকার হাফিজ ও সরফরাজ। হোক না প্রস্তুতি ম্যাচ আফগানিস্তানের কাছে এ হার পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কাই বলতে হবে। চলতি বছর নিজেদের সর্বশেষ টানা ১০ ওয়ানডেতে হারের সঙ্গে এই হার অনেক বড় ক্ষত হয়েই দেখা দেবে। আজ বাংলাদেশের সঙ্গে নিজেদের দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে পাকিস্তান। অধিনায়ক সরফরাজ বলেন, এভাবে হারলে তার কোন ব্যাখ্যাই থাকতে পারে না। বড় ব্যাপার হচ্ছে টপ-অর্ডারে আমাদের ব্যাটিং ভাল হয়নি। আরও ২০-৩০ রান বেশি হওয়া উচিত ছিল। তবে বাবর চমৎকার ব্যাটিং করেছে। বিশ্বকাপে সে আমাদের সেরা ব্যাটসম্যান। অনেকদিন পর দলে ফিরে ওয়াহাবও ভাল বোলিং করছে। বিশেষ করে ডেথ-ওভারে। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে ভাল করাটাই এখন পরবর্তী লক্ষ্য। আশা করছি বিশ্বকাপ শুরুর আগেই আমরা নিজেদের গুছিয়ে নিতে পারব। দীর্ঘ প্রায় দুই বছর পর হুট করেই চূড়ান্ত দলে জায়গা পেয়েছেন ওয়াহাব রিয়াজ। এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার কমতি ছিল না। তবে প্রথম ম্যাচেই ভাল বোলিং করেছেন এই বাঁহাতি পেসার। ৪৬ রান দিয়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। আরেক আলোচিত পেসার মোহাম্মদ আমির ৬ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য।
×