ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ব্রাজিল সমর্থকদের বাঁধভাঙা উল্লাস

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:৪৮, ৭ ডিসেম্বর ২০২২

ব্রাজিল সমর্থকদের বাঁধভাঙা উল্লাস

ব্রাজিলের জয়ে ঢাকায় সমর্থকদের মিছিল

ব্রাজিল মানেই জয়, ব্রাজিল মানেই সাম্বা, ব্রাজিল মানেই গোলের মহোৎসব; আবারও সেটি প্রমাণ করল সেলেসাওরা। কাতার বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিতের পথে শেষ ষোলোয় দক্ষিণ কোরিয়াকে ৪-১ গোলে হারিয়েছে নেইমারের দল। সুদূর দোহায় একেকটি গোল হয়েছে আর মধ্যরাতে লাল-সবুজের এ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে হলুদের ছটা।

মধ্যরাতে বাঁধভাঙা আনন্দে মেতেছে সারাদেশ। রাজধানী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন বিভাগীয় শহরেও ছড়িয়ে পড়ে সেই আনন্দ। স্লোগানে স্লোগানে কেঁপে ওঠে টিএসসি চত্বর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। হলুদ জার্সিতে মাতোয়ারা ভক্তরা মিছিল নিয়ে শাহবাগ মোড় হয়ে আবার ক্যাম্পাসের দিকে ফিরে যান।
আগামী শুক্রবার একই দিনে কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচে হল্যান্ডের মুখোমুখি হবে লিওনেল মেসির আর্জেন্টিনা। দ্বিতীয় ম্যাচে নেইমারদের প্রতিপক্ষ ক্রোয়েশিয়া। অনেকেই ১৩ ডিসেম্বর প্রথম সেমিতে দুই তারকার মুখোমুখি লড়াই দেখতে চাইছেন। রাজশহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সাউন্ডবক্স বাজিয়ে গানের তালে তালে নাচতে থাকনে ভক্তরা।

কেউ ঢোল বাজাচ্ছেন, আবার কেউ বাঁশি, কেউবা পতাকা উড়িয়ে চিৎকার করে বলছেন ব্রাজিলের জয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন টিভি রুমে, শিক্ষার্থীরা ছোট-বড় পতাকা নিয়ে আনন্দ করতে থাকে। ঢোল বাজাচ্ছিলেন সাবিদ নামে এক ব্রাজিল, ‘৪-১ গোলের ব্যবধানে জিতেছি। আনন্দ আর ধরে রাখতে পারিনি। তাই কিছু সময়ের জন্য বেরিয়ে এসেছি।

ঢোল বাজিয়ে সবাই আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছি।’ দক্ষিণ কোরিয়া ম্যাচে শেষ বাঁশির সঙ্গে সঙ্গে দেশের প্রতিটি জেলায় আনন্দ-উল্লাসে ফেটে পড়েন ব্রাজিল সমর্থকরা। স্লোগান তোলেন ব্রাজিল ও নেইমার ভক্তরা। প্রিয় দলের এমন দুর্দান্ত পারফরর্মেন্সে আনন্দ যেন বাঁধ মানছে না কিছুতেই। এক সমর্থক বলছেন, ‘প্রথমেই আমরা সেমিতে আর্জেন্টিনাকে চাই। এবং আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে ব্রাজিল ফাইনাল খেলবে বলে আশা করি।

আমরা পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছি। এবারও চ্যাম্পিয়ন হব। ব্রাজিলের সমতুল্য কোনো দলই হতে পারে না।’ খেলা শুরু না হতেই একটার পর একটা গোলে আতশবাজি আর নাচে-গানে বাঁধভাঙা আনন্দের জোয়ার দেশের প্রতিটি কোনায়। বড় পর্দায় খেলা দেখতে ভিড় জমে অলিগলিতে। ব্রাজিলের জন্মগত ভক্ত জাহাঙ্গীর আলম দুর্লভ বলেন, ‘ব্রাজিলের জন্য রাত জাগা সার্থক। ব্রাজিলের এ ক্রীড়া নৈপুণ্যতা নতুন কিছু নয়।

আমি চাই ফাইনালে আর্জেন্টিনাকে এমন খেলা দেখিয়ে বিশ্বকে তাক লাগাবে প্রিয় দলটি।’ রাত জেগে বড় পর্দায় খেলা দেখতে এসেছেন ব্রাজিলের আরেক সমর্থক ফয়সাল আহমেদ। তিনি বলেন, ‘ব্রাজিল মানেই বিশ্বসেরা ফুটবল টিম, ব্রাজিল মানেই উন্মাদনা। আজ ভেবেছিলাম ব্রাজিল কমপক্ষে ১ হালি গোল দেবে এবং দিয়েছেও। এতে আমি মহাখুশি।’

এদিন মাঠে আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে দক্ষিণ কোরিয়াকে সমর্থন দেন অনেকে। কোরিয়ার বড় পরাজয়ের পর তারা প্রত্যাশা করছেন, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা দ্বৈরথ দেখার। এবারের বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের জয়ে প্রতিটি ম্যাচেই কেঁপে উঠছে রাতের ঢাকা। অনেক পাড়া মহল্লায় হচ্ছে বিশেষ ভোজের ব্যবস্থা। দুই দল যদি সত্যি সত্যি সেমিতে মুখোমুখি হয়, তবে সেদিন রাতে যে কী অবস্থা হবে, সেটি অনুমেয়।

×