ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

হামজাকে খেলাতে যোগাযোগ শুরু করেছে বাফুফে

জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ০০:৪২, ৬ অক্টোবর ২০২২

হামজাকে খেলাতে যোগাযোগ শুরু করেছে বাফুফে

ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত বাংলাদেশী ফুটবলার হামজা

জামাল ভূঁইয়া কিংবা তারেক কাজী। লাল-সবুজের জার্সিতে বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত প্রবাসীদের খেলা অবশ্য নতুন কিছু নয়। এই আলোচনায় এবার নতুন করে উঠে এসেছেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভুত বাংলাদেশী ফুটবলার হামজা চৌধুরী। ইংলিশ ফুটবলের পরিচিত নাম হামজা এর আগে নিজেই বাংলাদেশের হয়ে খেলার আগ্রহের কথা জানিয়েছিলেন। এবার তাকে পাওয়ার জন্য মূল ক্লাব লিচেস্টার সিটিকে চিঠিও দিয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশের ফুটবলের সর্বোচ্চ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাফুফে।

তবে কতটা সফল হবে এই প্রচেষ্টা দেশের ফুটবলপ্রেমীদের অপেক্ষা এখন সেটাই দেখার।
২০১৯ সালের ঘটনা। তখন বাংলাদেশ জাতীয় দলের দায়িত্বে ইংলিশ কোচ জেমি ডে। ঠিক সেই সময়েই তার দেশের ক্লাব লিচেস্টার সিটির মাধ্যমে হামজা চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছিলেন।
উদ্দেশ্যে ছিল তার বাংলাদেশ জাতীয় দলে খেলার আগ্রহ আছে কিনা তা জানা। কিন্তু জেমি ডে’র সেই যোগাযোগে কোনরকম সাড়া মেলেনি হামজার। কিন্তু সম্প্রতি আবারও হামজাকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনা। এর পেছনের কারণ হলো; কিছুদিন আগে এক গণমাধ্যমে দেয়া সাক্ষাতকারে, বাংলাদেশের হয়ে খেলতে পারলে তিনি গর্বিত হবেন বলে মন্তব্য করেন। তা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফুটবল ভক্তরাও সরব হয়ে উঠেন।

বাফুফে কেন তাকে জাতীয় দলের জন্য তাকে পাওয়ার চেষ্টা করছে না সেই সমালোচনাতে অনেককে সরব হতে দেখা যায়। তখনই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন হামজা চৌধুরীর বিষয়ে অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গেই আগ্রহ প্রকাশ করে। সেইসঙ্গে তার ক্লাব লিচেস্টার সিটিকে চিঠি দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে বাফুফে সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু নাইম সোহাগ বলেন, ‘হামজা চৌধুরীকে পেতে আমরা এরই মধ্যে তার ক্লাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি।

আমরা সরাসরি খেলোয়াড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি না। আমাদের ক্লাবের মাধ্যমে ও ক্লাবের অনমুতি নিয়ে খেলোয়াড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে। কেননা, ক্লাবের যে রীতি তা মেনে নিয়েই সবকিছু করতে হয়। সেজন্য যদি আমাদের বিলম্ব হয় সেটাই করতে হবে।’

হামজার বর্তমান বয়স ২৫। এই মুহূর্তে ধারে খেলছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দ্বিতীয় সারির ক্লাব ওয়াটফোর্ডে। বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা প্রিমিয়ার লীগে খেলার অভিজ্ঞতা থাকা হামজার বাংলাদেশের জার্সিতে খেলার সম্ভাবনা প্রকৃতপক্ষে কতটুকু? এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন উত্তর পায়নি বাফুফে। বাফুফে সম্পাদক আবু নাঈম বলেন, ‘সম্প্রতি একাধিক সাক্ষাৎকারে হামজা বলেন বাংলাদেশের হয়ে খেলতে তাঁর ইচ্ছা রয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আমরা আবারও ক্লাবকে চিঠি দিয়েছি। জানিয়েছি বাংলাদেশের হয়ে খেলতে হামজার যে ইচ্ছা সে বিষয়ে আমরা তার সঙ্গে যোগাযোগ করতে চাই। এখন পর্যন্ত পরিষ্কার কোন উত্তর আমরা পাইনি।
তারা যে চিঠি পেয়েছে এবং প্রয়োজনে যোগাযোগ করা হবে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে।’ হামজার চাওয়াকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দেয়া হবে বলে জানিয়েছেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিনও। তার ভাষ্যমতে, ‘বাফুফের পক্ষ থেকে তাকে (হামজা) খুব দ্রুতই আমন্ত্রণ জানানো হবে। সে যা চায় তাকে সেটাই দেয়া হবে। তাকে সব সাহায্য করতে রাজি আছি। আর তার আগ্রহের বিষয়টি আমরা ভালভাবেই গ্রহণ করেছি।’ বাফুফে সভাপতি আরও বলেন, ‘আমরা এর আগেও যোগাযোগ করেছিলাম। তারা (হামজার পরিবার) যোগাযোগ করেনি। সেটা কি কারণে করিনি? জানি না।’
লিচেস্টার সিটির একাডেমিতেই বেড়ে ওঠেন হামজা। মাথায় ঝাঁকড়া চুল। যা তাকে সহজেই অন্যদের চেয়ে আলাদা করে রাখে। হামজার জন্ম ইংল্যান্ডের লাঘবোরোতে। মা বাংলাদেশী ও বাবা গ্রেনাডিয়ান। নানার বাড়ি হবিগঞ্জের বাহুবল থানার স্নানঘাট হ্রামে। মাত্র ১৬ বছর বয়সেই লিচেস্টার সিটির একাডেমিতে যোগ দেন তিনি। ক্লাবের হয়ে ৫৩ ম্যাচে একটি গোল করেন এই মিডফিল্ডার। ভাল পারফরম্যান্সের পুরস্কার হিসেবে সুযোগ পান ইংল্যান্ডের বয়সভিত্তিক দলে।

×