
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আজ দ্বিতীয় ম্যাচেও এমন উল্লাস করার আশা টাইগারদের
গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলা ক্রিকেটের আধুনিক সংস্করণ টি২০ আরও বেশি অনিশ্চিত। আর ক্রিকেটে পাকিস্তান কতটা ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ সেটিও সম্ভবত নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই- বাংলাদেশও কি কম আনপ্রেডিক্টেবল! শারজায় সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো আইসিসির সহযোগী দেশের কাছে ২-১এ সিরিজ হারের লজ্জা সঙ্গী করে পাকিস্তানে গিয়ে ৩-০ তে ‘হোয়াইটওয়াশ’ দলটাই ইতিহাস গড়ল শ্রীলঙ্কায়! প্রথমবারের মতো সিরিজ জিতল (২-১এ) দ্বিপ-দেশটির বিপক্ষে। চার দিনের মাথায় মিরপুরে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৭ উইকেটের দাপুটে জয়ে এবার আরও একটি স্মরণীয় সাফল্যের হাতছানি। প্রথমবারের মতো দুই বা ততোধিক ম্যাচের সিরিজে পাকিস্তানকে হারানোর সুযোগ টাইগারদের। আত্মবিশ্বাসী লিটন দাসের দল। ৩৯ বলে ৩ চার ও ৫ ছক্কায় অপরাজিত ৫৬ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলা পারভেজ হোসেন ইমন বলছেন,‘খুবই সম্ভব’। অন্যদিকে মাত্র ১১০ রানে অলআউট পাকিস্তান কোচ মাইক হেসন পিচ নিয়ে প্রচন্ড রকমের নাখোশ। আজ দ্বিতীয় ম্যাচও শুরু সন্ধ্যা ছয়টায়।
পরিসংখ্যান বলছে টি২০তে বাংলাদেশের চেয়ে ঢের এগিয়ে পাকিস্তান। শর্টার ফরম্যাটে ২০০৭ প্রথমবারের মতো মুখোমুখি হয়েছিল দু-দল। সে ম্যাচে আশরাফুলের দল হেরেছিল ৩০ রানে। এরপর এই সিরিজের আগে পর্যন্ত আরও ২১ বার দেখা হয় দু-দলের। যেখানে মেন ইন গ্রিনদেরই জয় ১৮টিতে। ঘরের মাঠে সর্বশেষ সিরিজেও বাংলাদেশেকে ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করে পাকিস্তান। পাকিস্তানের বিপক্ষে বাংলাদেশ প্রথম জয় পেয়েছিল ২০১৫ সালে, মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে। এ মাঠেই এর এক বছর বাদে এশিয়া কাপে দ্বিতীয় জয়ের দেখা। আর ২০২৩ সালের এশিয়ান গেমসে পায় তৃতীয় জয়। সেটি অবশ্য মূল জাতীয় দল ছিল না। সেই অর্থে শেরেবাংলায় চলতি সিরিজের প্রথম টি২০তে জয়টা এলো ৯ বছর পর! বাংলাদেশের মাটিতে এ নিয়ে মোট ৮টি টি২০ খেলেছে পাকিস্তান। সবশেষ ২০২১ সালে তিন ম্যাচের টি২০ সিরিজে টাইগারদের ৩-০ ব্যবধানে হোয়াইটওয়াশ করেছিল মেন ইন গ্রিন। তবে, টাইগারদের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স দেখাচ্ছে আশার আলো। অন্যদিকে, বাংলাদেশের বিপক্ষে সবশেষ টি২০ সিরিজের আগে এই ফরম্যাটে পাকিস্তানও ছিল হারের বৃত্তে। নিউজিল্যান্ড সফরে সিরিজ হেরেছে ৪-১ ব্যবধানে। দক্ষিণ আফ্রিকাতেও সঙ্গী হয়েছে ২-০ ব্যবধানের হার। প্রায় ১৪ মাস পর দেশের মাটিতে টি২০ খেলতে নেমে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ বছরের খড়া কাটানো জয়ের পর এবার ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের হাতছানি।
প্রথম ম্যাচে মূলত ১১০ রানে অলআউট হয়েই ব্যাকফুটে চলে যায় পাকিস্তান। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৩ উইকেট নেন তাসকিন আহমেদ। ২টি মুস্তাফিজুর রহমান। মিরপুরের ¯েøা-পিচ নিয়ে আগে থেকেই সমালোচনা ছিল। এখানে শেষ ১১ টি২০ ম্যাচে আগে ব্যাট করে দলীয় ইনিংসের গড় মাত্র ১২৫। ‘বাংলাদেশে এসে আপনি এই ধরনের পিচই আশা করতে পারেন। কালেভদ্রে ভালো উইকেটের দেখা মেলে। আমরা তাই এমন উইকেটের আশঙ্কাই করেছিলাম। এই ধরনের উইকেট কারও জন্য আদর্শ হতে পারে বলে মনে করি না আমি। এশিয়া কাপ ও টি২০ বিশ্বকাপের প্রস্তুতির সময় দলগুলোর। এ ধরনের উইকেট গ্রহণযোগ্য নয়। মানছি, এটা বাজে ব্যাটিংয়ের অজুহাত হতে পারে না। কিন্তু এই উইকেট আন্তর্জাতিক মানের নয়, এটা বলতেই হবে।’ হারের পর বলেন পাকিস্তান কোচ।
মিরপুরের উইকেট কি আসলেই এতটা বাজে? ব্যাট হাতে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক পারভেজ হোসেন ইমন তেমনটা মনে করেন না,‘মিরপুরের উইকেটে বোলারদের একটু সহায়তা থাকে, এটা স্বাভাবিক। আমাদের পরিকল্পনা ছিল যত দ্রুত সম্ভব উইকেট বুঝে সেট হয়ে যাওয়া। আমরা ১৬ ওভারে ১১০ রান করেছি। যদি ২০ ওভার ব্যাট করতাম, ১৬০ রান হতে পারত। তাই আমার কাছে মনে হয়নি যে উইকেট খারাপ ছিল। হয়তো ওরা মানিয়ে নিতে পারেনি, কিন্তু আমরা চেষ্টা করেছি দ্রুত উইকেট বুঝে নেওয়ার। দুটো উইকেট আগেভাগে পড়তেই পারে, কিন্তু বাকিরা সেটা সামলে নিয়েছে।’ তরুণ এ ওপেনার আরও বলেন, ‘উইকেটে সম বাউন্সই ছিল, তবে হ্যাঁ, দু-একটা অসম বাউন্স ছিল। এটা হতেই পারে।
প্যানেল মজি