ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ে এত ব্যর্থতার জন্য ফিটনেস এবং মনোযোগকেই দায়ী করলেন কোচ

প্রকাশিত: ১৩:০৭, ১৩ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৩:১৩, ১৩ জুন ২০২৫

বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ে এত ব্যর্থতার জন্য ফিটনেস এবং মনোযোগকেই দায়ী করলেন কোচ

ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্রিকেটে সাম্প্রতিক সময়ে ফিল্ডিং যেন এক বড় মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের ফিল্ডিং কোচ জেমস প্যামেন্টর অধীনেও এই চিত্রে তেমন কোনো বদল আসছে না। প্রশ্ন উঠছে, বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ের এই ধারাবাহিক ব্যর্থতার কারণ কী এবং উন্নতির পথই বা কোথায়?

ফিল্ডিং কোচ জেমস প্যামেন্ট নিজেই এই সমস্যার মূলে মনোযোগের অভাবকে দায়ী করছেন। তার মতে, খেলোয়াড়রা যখন ফিল্ডিং করেন, তখন তাদের শুধু নিজেদের ব্যাটার বা বোলার ভাবলেই হবে না, বরং প্রতিটি বলে পূর্ণ মনোযোগ রাখতে হবে। তিনি বলেন, "এক মুহূর্তের জন্য মনোযোগ হারালেই সব শেষ।" ফিল্ডিংয়ে সামান্য অসতর্কতা ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে, যা আমরা বহুবার দেখেছি।

ফিল্ডিংয়ের সাথে ভালো ফিটনেসের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। কোচ প্যামেন্ট মনে করেন, ভালো ফিটনেস খেলোয়াড়দের আত্মবিশ্বাস বাড়ায় এবং ফিল্ডিংয়ে ঝুঁকি নিতে উৎসাহিত করে। অর্থাৎ, ফিটনেস ভালো থাকলে খেলোয়াড়রা নির্ভয়ে ডাইভ দিতে পারেন, দ্রুত বলের দিকে ছুটতে পারেন এবং কঠিন ক্যাচগুলো ধরতে দ্বিধা করেন না। কিন্তু ফিটনেসের ঘাটতি থাকলে তাদের মধ্যে এই আত্মবিশ্বাস কাজ করে না, যার প্রভাব সরাসরি ফিল্ডিংয়ে পড়ে।

কোচ প্যামেন্টর মতে, বর্তমানে বাংলাদেশ দলের সেরা ফিল্ডার হলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। শান্তর ফিল্ডিংয়ে মনোযোগ, ক্ষিপ্রতা এবং ঝুঁকি নেওয়ার প্রবণতা থেকেই বোঝা যায়, ভালো ফিল্ডিংয়ের জন্য মনোযোগ ও ফিটনেস কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

তাহলে উন্নতির উপায় কী?

১. মনোযোগের অনুশীলন: খেলোয়াড়দের অনুশীলনে শুধু ড্রিল করলেই হবে না, প্রতিটি ড্রিলের সময় সর্বোচ্চ মনোযোগ ধরে রাখার অনুশীলন করাতে হবে। চাপপূর্ণ পরিস্থিতিতেও কিভাবে মনোযোগ অটুট রাখা যায়, তার ওপর কাজ করা জরুরি।

২. ফিটনেস কর্মসূচির আধুনিকীকরণ: শুধু ম্যাচের জন্য নয়, ফিল্ডিংয়ের জন্য বিশেষায়িত ফিটনেস প্রোগ্রাম চালু করতে হবে। দ্রুত গতি, ক্ষিপ্রতা, স্ট্যামিনা এবং রিফ্লেক্স বাড়ানোর জন্য আধুনিক অনুশীলন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করা প্রয়োজন।

৩. ফিল্ডিংয়ের গুরুত্ব: দলের মধ্যে ফিল্ডিংকে শুধুমাত্র একটি 'পাশাপাশি কাজ' না ভেবে এটিকে ব্যাটিং বা বোলিংয়ের মতোই সমান গুরুত্ব দিতে হবে। সফল দলগুলো ফিল্ডিংকে তাদের জয়ের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবে দেখে।

৪. ভূমিকার স্পষ্টতা: প্রত্যেক ফিল্ডারের তার নির্দিষ্ট পজিশনে ভূমিকা এবং দায়িত্ব সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে। কে কোন বল ধরবে, কোন দিকে দৌড়াবে, তা নিয়ে যেন কোনো সংশয় না থাকে।

৫. মানসিক দৃঢ়তা: ফিল্ডিংয়ে ভুল হওয়ার পর খেলোয়াড়দের যেন আত্মবিশ্বাস ভেঙে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। ভুল থেকে শেখা এবং পরবর্তী বলে আরও ভালো করার মানসিকতা তৈরি করা জরুরি।

বাংলাদেশের ফিল্ডিংয়ে উন্নতি শুধু ব্যক্তিগত দক্ষতার উপর নির্ভর করে না, বরং দলগতভাবে মনোযোগ, ফিটনেস এবং মানসিক দৃঢ়তার সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমেই তা সম্ভব।

সাব্বির

×