মুশফিকুর রহিম
মিরপুরে সফরকারী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে বিরল এক আউটে সাজঘরে ফেরেন মুশফিকুর রহিম। ৮৩ বলে ৫ চার, ১ ছক্কায় ৩৫ রান করে বিদায় নেন তিনি হাত দিয়ে বল ধরে অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড ক্যাটাগোরিতে। বিষয়টি বেশ তোলপাড় তোলে ক্রিকেটাঙ্গনে। কারণ ক্রিকেটের ইতিহাসে এটি খুবই কম ঘটেছে। টিভি চ্যানেল একাত্তর টিভি মুশফিকের ওপর ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তুলে প্রতিবেদন করে। অবশেষে মুশফিক একাত্তর টিভিকে সংবাদ প্রকাশের দুইদিন পর শনিবার আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন।
নোটিসে চারটি বিষয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নিষ্পত্তি চাওয়া হয়েছে। নোটিসে উল্লেখ করা হয়েছে, এই প্রতিবেদনের কারণে পারিবারিক, সামাজিক ও ব্যক্তি পর্যায়ে মুশফিকের সুনাম ক্ষুণœœ হয়েছে। জাতীয় দলের অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটারের পক্ষে তার আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান এই নোটিস পাঠান।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মিরপুরে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের প্রথম ইনিংসে দলের বিপর্যয়ে দুর্দান্ত ব্যাটিং করে দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩৫ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু হাত দিয়ে বল ঠেকিয়ে ‘অবস্ট্রাক্টিং দ্য ফিল্ড’ আইনে আউট হন তিনি। তা নিয়ে সেই রাতে একাত্তর টিভি ‘মিরপুর টেস্টে স্পট ফিক্সিংয়ের গন্ধ, সন্দেহ সিনিয়র ক্রিকেটারের দিকে’ এমন শিরোনামে একটি প্রতিবেদন নিজেদের ফেসবুক ও ইউটিউব চ্যানেলে প্রচার করে। প্রতিবেদনে ফিক্সিংয়ের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়, জানানো হয় বিষয়টি বিসিবি ও আইসিসিও তদন্ত করতে পারে। তবে সমাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তীব্র সমালোচনার মুখে ফেসবুক থেকে প্রতিবেদনটি কিছুক্ষণের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হলেও ইউটিউবে অনেক্ষণ রাখা হয়।
পরদিন এ নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেয় একাত্তর টিভি কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এই বিকৃত তথ্য সংবলিত প্রতিবেদনে মানসিকভাবে বিধ্বস্ত সময় পার করছেন মুশফিক, এমন দাবি করা হয় আইনি নোটিসে। নির্ভরযোগ্য দলিল, উপযুক্ত তথ্য এবং সংশ্লিষ্ট ও দায়িত্বপ্রাপ্ত কারও সন্দেহের মতামত সহযোগে ফিক্সিংয়ের মতো স্পর্শকাতর অভিযোগ তুলে খবর প্রকাশ করায় মুশফিকের আইনজীবী আইনি নোটিস দেন। নোটিসে বলা হয়েছে, উক্ত প্রতিবেদন সাংবাদিকতার নীতি-আদর্শ মেনে করা হয়নি। দ-বিধির ৫০০ ধারায় মানহানির অপরাধ ও সাইবার নিরাপত্তা আইন-২০২৩ এর ২৫ (১) (ক), ২৫ (২) এবং ২৯ ধারায় সাইবার বুলিংয়ের অপরাধ উল্লেখ করে প্রতিকার চাওয়া হয়েছে।
সেটা ৪৮ ঘণ্টায় না হলে ফৌজদারি ও ক্ষতিপূরণ আদায়ের দেওয়ানী আদালতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। ৭১ টেলিভিশনকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে তাদের এই মনগড়া, ভুল প্রতিবেদনের জন্য নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবেদককে ভবিষ্যতে এমন অসত্য ও মনগড়া প্রতিবেদন না করার বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে মর্মে মুশফিকুর রহিমের নিকট লিখিতভাবে ৭১ টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে জানাতে বলা হয়েছে।