ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্টোকস যেন ফাইনালেরই তারকা...

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৩, ১৪ নভেম্বর ২০২২

স্টোকস যেন ফাইনালেরই তারকা...

তিনবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে ইংল্যান্ড

তিনবার ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলেছে ইংল্যান্ড। কিন্তু জিততে পারেনি কোনোবারই। অবশেষে তাদের সেই আক্ষেপ ঘোঁচে ২০১৯ সালে হওয়া সর্বশেষ ওয়ানডে বিশ্বকাপে। আক্ষেপ ঘুঁচিয়ে দলকে ফাইনাল জিতিয়ে অসাধ্য সাধন করেন বেন স্টোকস। ক্রিকেটের ‘মক্কা’ খ্যাত লর্ডসে সেদিন তিনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে খেলেন ৯৮ বলে অপরাজিত ৮৪ রানের ইনিংস।

৩ বছর বাদে আরেক বিশ্বকাপ ফাইনালেও ম্যাচে জয়ের নায়ক হয়েছেন স্টোকস। এবার আরেকটি ঐতিহাসিক ভেন্যু মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৪৯ বলে অপরাজিত ৫২ রানের ইনিংস খেলে ইংল্যান্ডকে জিতিয়েই মাঠ ছেড়েছেন এ অলরাউন্ডার। ২০১০ সালের পর আবার তাই টি২০ বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইংলিশরা। ৪৩ টি২০ ম্যাচ খেলা স্টোকসের এটিই প্রথম অর্ধশতক, আর সেই ইনিংসটাকেই করলেন অবিস্মরণীয়।

২০১৯ সালে লর্ডসে সেদিনও ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে রান তাড়া করতে নামে ইংল্যান্ড। ৮৬ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া ইংল্যান্ডকে টেনে তোলেন স্টোকস। ৯৮ বলে ৫ চার, ২ ছয়ে করেন অপরাজিত ৮৪ রান। সেদিন তিনি ম্যাচসেরা হন। ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ১৯৯২ সালের আসরে ফাইনালে উঠলেও হেরে যায় ইংলিশরা। সেই আক্ষেপেই যেন পরের ৬ আসরে আর ফাইনালে উঠতে পারেনি তারা।

কিন্তু ২০১৯ সালে ফাইনালে উঠেই শিরোপা জয় করে। যদিও টি২০ বিশ্বকাপ ২০১০ সালেই জিতে ইংল্যান্ড। এরপর ২০১৬ সালেও ফাইনালে ওঠে, কিন্তু হেরে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের কাছে। এবার বেশ ভালোভাবেই ফাইনালে ওঠে ইংলিশরা। আগে পাকিরা ব্যাট করে তোলে ৮ উইকেটে ১৩৭ রান। জবাবে শাহিন আফ্রিদি ও হারিস রউফের ভয়ংকর পেসের সামনে ৪৫ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ইংল্যান্ড।

দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে ৪৯ রান তুলে লক্ষ্যে পৌঁছার গতি ঠিক রাখে ইংলিশরা। সেই ভিতে দাঁড়িয়ে স্টোকস একাই লড়েছেন। হ্যারি ব্রুকস কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন ১৩তম ওভারে শাদাব খানের লেগস্পিনে। তিনি ২৩ বলে এক চারে ২০ রান করেন। দুজনের ৪২ বলে ৩৯ রানের জুটি দলকে বিপর্যয় এড়াতে সহায়ক হয়। এরপর মঈন আলির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে ৩৫ বলে ৪৮ রানের যে জুটি গড়েন স্টোকস, তাতেই জয়ের কাছে পৌঁছে যায় ইংল্যান্ড।

শেষ ৫ ওভারে ৪১ রান দরকার পড়ে ইংল্যান্ডের। ১৬তম ওভার ছিল ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। নিজের তৃতীয় ওভার করতে এসে শাহিন আফ্রিদি এক বল করেই আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়েন। পরে ইফতিখার আহমেদ বাকি ৫ বল করেছেন। তার অনিয়মিত অফস্পিনে স্টোকস কঠিন এক সুযোগ দেন। কিন্তু পাক অধিনায়ক বাবর আজম ক্যাচটি নিতে পারেননি। ব্যক্তিগত ২৮ রানে জীবন পাওয়া স্টোকস সেই ওভারেই ১৩ রান তুলে নেন।  স্টোকস পেয়ে যান টি২০ ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি।

আগের ৪২ টি২০ ম্যাচের ৩৫ ইনিংসে তার সেরা ছিল অপরাজিত ৪৭ রান। এবার ৪৯ বলে ৫ চার, এক ছয়ে ৫২ রানে অপরাজিত থাকেন স্টোকস। ম্যাচশেষে তিনি বলেন, ‘ফাইনালগুলোয় আপনি কঠোর পরিশ্রমের কথা ভুলে যাবেন, বিশেষ করে রান তাড়ার ক্ষেত্রে এটাই বড় বিষয়।’

×