
ছবি: সংগৃহীত
বিনোদন বা আতঙ্ক নয়—কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) হচ্ছে ভবিষ্যতের কর্মজগতের রূপকার। এই বাস্তবতা সামনে এনে তরুণদের জন্য সাফল্যের পথ বাতলে দিলেন মাইক্রোসফটের সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস।
‘এআই যুগে টিকে থাকতে হলে কৌতূহলী হতে হবে, নিয়মিত পড়তে হবে এবং নতুন প্রযুক্তিগুলো ব্যবহার শিখতে হবে’—সম্প্রতি এমন পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্বের অন্যতম ধনী ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এই উদ্যোক্তা।
বিল গেটস বিশ্বাস করেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা মানুষকে আরও বেশি সৃজনশীল ও অর্থবহ কাজ করার সুযোগ করে দিতে পারে। তবে এই প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতির কারণে একদিকে যেমন উৎপাদনশীলতা বাড়বে, অন্যদিকে কর্মসংস্থান হারানোর ঝুঁকিও তৈরি হবে। এই দুইয়ের ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।
উৎপাদনশীলতা বাড়বে, তবে চাকরি হারানোর শঙ্কাও বাস্তব
গেটস বলেন, ‘এআই আমাদের রুটিন কাজগুলো থেকে মুক্তি দিতে পারে, যার ফলে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের জন্য বেশি সময় দিতে পারবেন, মানুষ বেশি ছুটি নিতে পারবেন, কিংবা নিজের দক্ষতা বাড়ানোর দিকে মনোযোগ দিতে পারবেন।’
তবে একই সঙ্গে তিনি সতর্ক করেছেন—এই পরিবর্তন যদি খুব দ্রুত ঘটে, তাহলে সমাজের বিভিন্ন স্তর তা সামলাতে পারবে না। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার প্রভাবে ২০৩০ সালের মধ্যে প্রায় ৫০ শতাংশ হোয়াইট-কলার প্রাথমিক চাকরি বিলুপ্ত হতে পারে।
নৈতিকতা না মানলে বিপদ
যুক্তরাষ্ট্রে ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি এআই উদ্ভাবনে উদার নীতিমালা গ্রহণ করেছে। গেটস অবশ্য মনে করেন, উদ্ভাবনের পাশাপাশি প্রয়োজন শক্তিশালী নৈতিক কাঠামো। যেন এই প্রযুক্তির অপব্যবহার রোধ করা যায় এবং সবাই সমান সুযোগ পায়।
তিনি বলেন, বর্তমানে যে ধরনের এআই তৈরি হচ্ছে, তা ভবিষ্যতের ‘আর্টিফিশিয়াল জেনারেল ইন্টেলিজেন্স’ (AGI)-এর কাছাকাছি যাচ্ছে—যা একসময় মানুষের চেয়ে দক্ষতার সঙ্গে বিক্রয় বা গ্রাহকসেবা দিতে পারবে।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষিতে এআই: গরীব দেশেই শুরু গেটসের কাজ
শুধু ভবিষ্যদ্বাণী নয়, গেটস বাস্তবে কাজও করছেন। তিনি মাইক্রোসফট ও ওপেনএআই-এর সঙ্গে যৌথভাবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষিক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রয়োগ শুরু করেছেন।
এই উদ্যোগগুলোর মাধ্যমে তিনি পিছিয়ে পড়া দেশগুলোর জীবনমান উন্নয়ন করতে চান।
তরুণদের প্রতি আহ্বান: শিখুন, জানুন, ব্যবহার করুন
তরুণদের উদ্দেশে বিল গেটস বলেন, ‘এআইকে ভয় নয়, বরং কাজে লাগান। যারা সময়ের সঙ্গে শিখবে, কৌতূহলী থাকবে এবং প্রযুক্তি ব্যবহার শিখবে, তারাই নতুন অর্থনীতিতে সফল হবে।’
তিনি নিজের ‘সাফল্যের সূত্র’ হিসেবে তিনটি জিনিসের কথা বলেছেন—
১. কৌতূহল বজায় রাখা,
২. নিয়মিত পড়াশোনা করা,
৩. নতুন প্রযুক্তি শেখা ও ব্যবহার করা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া।
রাকিব