
ছবিঃ সংগৃহীত
ইন্টারনেট গতির সব রেকর্ড ভেঙে দিয়ে নতুন ইতিহাস গড়েছে জাপান। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (NICT) সম্প্রতি আবিষ্কার করেছে এমন এক প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ—1.02 পেটাবাইট পার সেকেন্ড (Pbps)!
এই গতি কতটা ভয়াবহ দ্রুত?
তুলনা করলে বোঝা যাবে—যুক্তরাষ্ট্রের গড় ব্রডব্যান্ড গতি যেখানে মাত্র ৮৩ Mbps, সেখানে জাপানের নতুন প্রযুক্তির গতি তার চেয়ে ৪০ লাখ গুণ বেশি। আর ভারতের গড় ইন্টারনেট গতি যেখানে ২০ Mbps, তার তুলনায় এটি প্রায় ১ কোটি ৬০ লাখ গুণ দ্রুত!
এই ইন্টারনেট দিয়ে নেটফ্লিক্সের পুরো লাইব্রেরি (১০ হাজার টেরাবাইটের বেশি) ডাউনলোড করা যাবে মাত্র ৩ থেকে ৫ সেকেন্ডে। ইউটিউবের এখন পর্যন্ত থাকা ৮০ বছরের সমপরিমাণ ভিডিও কনটেন্ট ডাউনলোড হয়ে যাবে এক মিনিটেরও কম সময়ে!
কীভাবে সম্ভব হলো এই গতি?
হিন্দুস্তান টাইমসের প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই রেকর্ড গতি অর্জিত হয়েছে চার-কোর অপটিক্যাল ফাইবার ব্যবহারের মাধ্যমে। একটি কেবলেই থাকে চারটি আলাদা চ্যানেল, যার প্রতিটিতে আলোর সিগনাল প্রবাহিত হয়। সবচেয়ে আশ্চর্য বিষয় হলো—এই প্রযুক্তির জন্য বিশেষ বা দামী কোনো উপাদান ব্যবহারের প্রয়োজন হয়নি। বরং প্রচলিত স্ট্যান্ডার্ড অপটিক্যাল ফাইবারেই এই বিপ্লব সম্ভব হয়েছে।
কেন এটি এত গুরুত্বপূর্ণ?
বর্তমানে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকলেও গবেষকরা বলছেন, আগামী দশকের মধ্যেই এই প্রযুক্তি বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহারযোগ্য হয়ে উঠবে। এতে করে বিপুল পরিমাণ ডেটা স্থানান্তরের সময় এবং খরচ দুই-ই কমবে।
বিশেষ করে:
-
AI ডেটা প্রসেসিং
-
ক্লাউড গেমিং
-
রিমোট মেডিকেল সার্ভিস
-
8K ভিডিও স্ট্রিমিং
-
ভার্চুয়াল রিয়েলিটি
-
মহাকাশ গবেষণা
-
জলবায়ু বিশ্লেষণ
—এমন গুরুত্বপূর্ণ খাতে এই গতি এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনবে।
ধরা যাক, কেউ ২০০ জিবির একটি ভার্চুয়াল রিয়েলিটি গেম ডাউনলোড করতে চায়। বাংলাদেশের বর্তমান গড় ইন্টারনেট গতি অনুযায়ী, এটি ডাউনলোড হতে সময় লাগবে কয়েক ঘণ্টা। কিন্তু জাপানের নতুন প্রযুক্তিতে এটি ডাউনলোড হবে কয়েক সেকেন্ডেই।
এটা শুধু একটি প্রযুক্তিগত সাফল্য নয়—এটি মানবজাতির তথ্য প্রযুক্তির জগতে এক নতুন দিগন্তের সূচনা। গবেষকরা বলছেন, ভবিষ্যতে হয়তো “লোডিং...” শব্দটাই হারিয়ে যাবে। কারণ তখন ইন্টারনেট চলবে আলোর গতিতে!
ইমরান