
ছবি: সংগৃহীত
স্পেসএক্সের স্টারলিংক স্যাটেলাইট থেকে অনিচ্ছাকৃতভাবে ছড়ানো বিকিরণ (radiation) এখন মহাকাশ গবেষণার জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠেছে। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, এই স্যাটেলাইটগুলো প্রত্যাশার তুলনায় ৩০ গুণ বেশি রেডিও তরঙ্গ ছড়াচ্ছে, যা পৃথিবীর গ্রাউন্ড-ভিত্তিক টেলিস্কোপগুলোর জন্য সংকেত ধরাকে দিন দিন কঠিন করে তুলছে।
এটি এক ধরনের 'অদৃশ্য দূষণ'— যা চোখে দেখা না গেলেও জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জন্য মারাত্মক সমস্যা তৈরি করছে। যদিও স্টারলিংকের সরাসরি হস্তক্ষেপ কমানোর কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল, তবুও এখন দেখা যাচ্ছে— এই স্যাটেলাইটগুলো থেকে অনিচ্ছাকৃতভাবে নির্গত ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ (UEMR) অনেক বেশি মাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্টারলিংকের নতুন প্রজন্মের স্যাটেলাইটগুলো পুরনোগুলোর তুলনায় ৩০ গুণ বেশি রেডিও বিকিরণ ছড়াচ্ছে। এর ফলে মহাবিশ্ব থেকে আসা দুর্বল রেডিও সংকেত— যেমন আদিম নক্ষত্র, ছায়াপথ, পালসার বা কৃষ্ণগহ্বর থেকে আসা সংকেত— সব হারিয়ে যেতে পারে এই রেডিও ‘শব্দে’।
রেডিও জ্যোতির্বিজ্ঞান এমন অনেক ঘটনা আবিষ্কারে সহায়তা করে যা সাধারণ অপটিক্যাল টেলিস্কোপে দেখা যায় না। কিন্তু বিজ্ঞানীরা সতর্ক করে দিচ্ছেন, আমরা এখন এক 'মোড় ঘোরানোর মুহূর্তে' এসে পৌঁছেছি। যদি এই পরিস্থিতির উন্নতি না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে পৃথিবীতে রেডিও টেলিস্কোপ দিয়ে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়বে।
এখন পর্যন্ত ৭,০০০-এর বেশি স্টারলিংক স্যাটেলাইট মহাকাশে আছে এবং ভবিষ্যতে বিভিন্ন কোম্পানি আরও হাজার হাজার স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিকল্পনা করছে। যদি স্যাটেলাইট ডিজাইনে পরিবর্তন না আনা হয়, তাহলে বিজ্ঞানীরা আশঙ্কা করছেন— মহাবিশ্বের কিছু ‘কসমিক উইন্ডো’ চিরতরে বন্ধ হয়ে যেতে পারে। তখন প্রাচীন মহাবিশ্বের সংকেতগুলো চিরতরে হারিয়ে যাবে।
সূত্র: লাইভ সায়েন্স
এম.কে.