
ছবি: সংগৃহীত
গারফিল্ড, পুস ইন বুটস —এই নামগুলো আমাদের সবার পরিচিত। এরা বিখ্যাত কার্টুন চরিত্র হলেও, একটা বিষয়ে তাদের সবার মিল আছে—তারা সবাই কমলা রঙের বিড়াল। এতদিন ধরে মানুষের মনে প্রশ্ন ছিল, বিড়ালের এই বিশেষ রঙের কারণ কী? এবার সেই রহস্য ভেদ করলেন জাপান ও আমেরিকার গবেষকরা।
জানা গেছে, কমলা বিড়ালের দেহে এমন এক জিনের অংশ নেই, যা সাধারণ বিড়ালের থাকে। এই অংশ না থাকার ফলে তাদের ত্বক, চোখ ও লোমের রঙ নির্ধারণকারী কোষগুলো হালকা রঙ তৈরি করে। এই কারণেই তাদের লোমের রঙ হয় উজ্জ্বল কমলা।
গবেষকরা দেখেছেন, ARHGAP36 নামের একটি জিন মেলানোসাইট কোষে অত্যন্ত সক্রিয় থাকে। এই জিনের একটি অংশ না থাকলে এটি আরো বেশি কাজ করে এবং কোষগুলো হালকা রঙের রঞ্জক তৈরি করে। এর ফলে বিড়ালের লোমের রঙ হয় কমলা বা সোনালি।
এই জিনটি X ক্রোমোজোমে অবস্থান করে। পুরুষ বিড়ালের X ও Y দুটি ভিন্ন ক্রোমোজোম থাকায় শুধুমাত্র একটি X ক্রোমোজোমে এই ডিএনএ অংশের অনুপস্থিতি থাকলেই বিড়ালটি সম্পূর্ণ কমলা হয়ে যায়। কিন্তু মেয়ে বিড়ালের দুটি X ক্রোমোজোম থাকায় উভয় ক্রোমোজোমে একই ডিএনএ অংশের ঘাটতি না থাকলে পুরোপুরি কমলা রঙ হয় না। ফলে তাদের শরীরে মিশ্র রঙ দেখা যায়।
এজন্য ক্যালিকো এবং টরটয়শেল বিড়াল, যাদের শরীরে কমলা ও কালো রঙের মিশ্রণ থাকে, তারা বেশিরভাগই মেয়ে।
অধ্যাপক হিরোইউকি সাসাকি ব্যাখ্যা করেন, বিড়ালের গায়ে কমলা ও কালো দাগ যেভাবে তৈরি হয়, সেটা নির্ভর করে কোন এক্স ক্রোমোজোমটি কাজ করছে তার ওপর। একেকটি কোষে একেকটি এক্স বন্ধ থাকে, ফলে বিভিন্ন রঙের দাগ তৈরি হয়।
এই জিনটি শুধু রঙ নয়, মস্তিষ্ক ও হরমোন নিয়ন্ত্রণকারী অংশেও কাজ করে। তাই বিজ্ঞানীরা ভাবছেন, এই জিনের পরিবর্তন বিড়ালের স্বভাব কিংবা অসুস্থতার সঙ্গেও জড়িত থাকতে পারে।
অধ্যাপক সাসাকি বলেন, “অনেকে বলেন, বিড়ালের রঙের সঙ্গে তাদের স্বভাবের সম্পর্ক আছে। যদিও এখনো বৈজ্ঞানিক প্রমাণ মেলেনি, তবে এই বিষয়টি ভবিষ্যতে জানার ইচ্ছা আছে।”
সূত্র: বিবিসি
মুমু