
ছবিঃ সংগৃহীত
আবার দেশকে গভীর সংকটে নিপতিত করার ষড়যন্ত্র চলছে উল্লেখ করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স বিএনপি নেতাকর্মীসহ জনসাধারণের প্রতি চোখ-কান খোলা রেখে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। গণ-অভ্যুত্থানের শক্তির মধ্যে পরিকল্পিতভাবে অনৈক্য ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে নির্বাচন সুদূরপরাহত করার চক্রান্ত চলছে। অথচ জনগণ এই মুহূর্তে নির্বাচন চায়।
তিনি বলেন, হাটে, মাঠে, গ্রামে, শহরে—যেখানেই যাই, সবাই জিজ্ঞেস করে, “নির্বাচনের খবর কী?” অর্থাৎ জনগণ নির্বাচনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
শুক্রবার (১৮ জুলাই) বিকেলে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ছাতুগাঁও বাজারে জুগলী ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জাতীয়তাবাদী মৎস্যজীবী দলের জুগলী ইউনিয়ন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সম্মেলনে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, বিএনপিও সংস্কার চায়। এ জন্য বিএনপি জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ১১ মাস অপেক্ষা করেছে, অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার প্রক্রিয়া ও কার্যক্রমে সহযোগিতা করেছে। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, সরকারের ভেতর ও বাইরে থাকা মহল বিশেষ সংস্কার প্রক্রিয়া ও কার্যক্রমকে ক্রমেই জটিল করে নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে।
তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, মিটফোর্ড এবং গোপালগঞ্জের ঘটনা একই সূত্রে গাঁথা কি না, তা খুঁজে বের করতে হবে। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে সবাইকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আরও ঘটনা ঘটানো হতে পারে। তিনি সংস্কারে জটিলতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সংস্কারের নামে এমন এমন পদ্ধতি আলোচনায় আনা হচ্ছে যার সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে জনপ্রতিনিধি নির্বাচনের অধিকার কেড়ে নেওয়ার মতো পদ্ধতির কথাও বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, কোট টাই পরা শহুরে কয়েকজন লোক যা বলবে, তাই যদি সংস্কার হয়—তা হতে পারে না। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে রাষ্ট্র বা সমাজ কাঠামোর সংস্কার হতে পারে না। তিনি ঐকমত্য কমিশনের প্রতি জনগণের মনের ভাষা উপলব্ধি করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কঠিন মারপ্যাঁচে সংস্কার জটিল করে বাইরে ষড়যন্ত্রকারীদের সুযোগ দিলে এবং নির্বাচন অনিশ্চিত হলে জনগণ কাউকে ছেড়ে দেবে না।
তিনি জনসাধারণের প্রতি নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, রোজার আগে নির্বাচন না হলে সব আশার আলো নিভে যেতে পারে। তাই দ্রুত প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে নির্বাচন হতে হবে। তিনি নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঘরে ঘরে বেগম খালেদা জিয়া, তারেক রহমানের সালাম পৌঁছে দিয়ে ধানের শীষের প্রচারণা শুরু করতে হবে।
তিনি বলেন, আগামী দিনে ধানের শীষের সরকার হলে কৃষকদের একটি ফসলের উৎপাদন খরচ, প্রতিটি পরিবারের সাংসারিক খরচের একাংশ, বিনামূল্যে চিকিৎসা ও বেকার ভাতা প্রদান করা হবে।
তিনি বলেন, নবীন দলের নেতাদের মুখে শুনি, আওয়ামী লীগ হটিয়ে বিএনপিকে তারা নাকি আনতে চান না। বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই, বিএনপি কারও দয়ায় ক্ষমতায় আসতে চায় না। জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে বিএনপি রায় চায়। জনগণ যদি বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে চায়, আপনারা বাধা দেওয়ার কে? রাজনীতি, ভোট নিয়ে যাঁদের অভিজ্ঞতা নেই, তারা আজ রাজনীতি ও ভোটের নিয়ন্ত্রক সেজেছেন। যারা জনগণ ও ভোটকে ভয় পায়, তাদের মুখেই এমন কথা মানায়। স্বাধীনতাবিরোধী দলের সাপ্লাই দেয় কয়েক হাজার লোকের সামনে দাঁড়িয়ে যারা নিজেদের রাজনীতি ও ক্ষমতার নিয়ন্ত্রক ভাবেন, তারা বকরের স্বর্গে বাস করছেন।
হালুয়াঘাট উপজেলা মৎস্যজীবী দলের আহ্বায়ক শেখ সাদির সভাপতিত্বে ও সদস্যসচিব জাকির হোসেন চঞ্চলের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক আসলাম মিয়া বাবুল, সদস্যসচিব আবু হাসনাত বদরুল কবীর, যুগ্ম আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক আমজাদ আলী, কাজী ফরিদ আহমেদ পলাশ, জুগলী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক ক্বারী আবুল কাশেম, সদস্যসচিব কৃষক আবদুস সাত্তার, যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল জলিল, আল আমিন চমক, মুক্তাদির আহসান, শহীদুল হক মাস্টার, জেলা জাসাসের সভাপতি শফিকুল ইসলাম, যুবদল নেতা আসাদুজ্জামান আসিফ, আবদুল মালেক সোহান, পৌর ছাত্রদলের সদস্যসচিব তাজবীর হোসেন অন্তর, উপজেলা মৎস্যজীবী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সেলিম মিয়া বক্তব্য রাখেন।
ইমরান