
ছবি: সংগৃহীত
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম থানায় হামলা, ভাঙচুর ও আসামি ছিনতাই এবং সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপিকে জড়িয়ে একাধিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দলটি। শুক্রবার (৪ জুলাই) দুপুরে পাটগ্রাম পৌর বিএনপি কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার হাসান রাজীব প্রধান দাবি করেন, ‘ঘটনার সঙ্গে বিএনপির কোনো ধরনের সংশ্লিষ্টতা নেই, এটি একটি প্রশাসনিক ও ব্যবসায়িক বিরোধের বহিঃপ্রকাশ।’
তিনি আরও বলেন, ‘জাতীয় নাগরিক পার্টির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে পাটগ্রাম থানার ঘটনায় বিএনপিকে দায়ী করে যে পোস্ট দিয়েছে তা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
বিএনপির এই নেতা দলের অবস্থান স্পষ্ট করে জানান, ‘যদি এ ঘটনায় বিএনপির কেউ জড়িত থাকে এবং তা প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধে দলীয়ভাবে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু কারও ব্যক্তিগত দায় পুরো দলের ওপর চাপানোর চেষ্টা করা হলে তা হবে দুঃখজনক।’
বিএনপির এই সংবাদ সম্মেলনে লালমনিরহাট জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক একেএম মমিনুল হক, সাংগঠনিক সম্পাদক সায়েদুল ইসলাম পাটোয়ারী সাজু, পাটগ্রাম পৌর বিএনপির সভাপতি গোলাম মোস্তফা সালাউদ্দিন আহমেদ ওপেল, লালমনিরহাট জেলা যুবদলের আহ্বায়ক আনিছুর রহমান আনিছ (ভিপি আনিছ), পাটগ্রাম উপজেলা, পৌরসভা ও স্থানীয় বিএনপি, যুবদল, ছাত্রদলের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গত বুধবার (২ জুলাই) রাত সাড়ে ১০টার দিকে পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উত্তম কুমার দাস ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চাঁদাবাজির অভিযোগে উপজেলার মমিনপুর এলাকার লিয়াকত আলীর ছেলে বেলাল হোসেন ও মির্জারকোর্ট এলাকার সামছুল হকের ছেলে সোহেল রানাকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। সাজাপ্রাপ্তদের পাটগ্রাম থানায় আনা হলে মুহূর্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই দুইজনের সহযোগীরা সংঘবদ্ধ হয়ে থানায় উপস্থিত হয়ে পুলিশের সঙ্গে তর্কে জড়ায় এবং একপর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। এরপর হামলাকারীরা থানায় ইটপাটকেল ছোড়ে, দরজা-জানালা ও ল্যাপটপ ভাঙচুর করে, আসবাবপত্র তছনছ করে দেয় এবং দণ্ডপ্রাপ্ত দুই আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ে, তবে পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, এতেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেগ পেতে হয়। সংঘর্ষে পুলিশ সদস্যসহ অন্তত ২০ জন আহত হন।
পরদিন বৃহস্পতিবার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাদী হয়ে ২৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও অনেককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ওই রাতেই চারজনকে গ্রেপ্তার করে শুক্রবার (৪ জুলাই) আদালতে হাজির করা হয়।
পুলিশ ও প্রশাসন জানায়, এই সহিংসতায় সম্পৃক্তদের ধরতে অভিযান চলছে এবং পাটগ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। থানার আশপাশ ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
রাকিব