
ছবিঃ প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের পটিয়ায় পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন ডেকে দুই ঘণ্টা আগে হঠাৎ করেই ব্যানার পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রাথমিক ব্যানারে সুনির্দিষ্টভাবে ‘পাহাড়ি সন্ত্রাস’, ‘হত্যা’ ও ‘মুক্তিপণ’-এর মতো অভিযোগ থাকলেও, পরবর্তীতে এসব শব্দ বাদ দিয়ে অনুষ্ঠানটির শিরোনাম রাখা হয় ‘আইন শৃঙ্খলা বিষয়ক মতবিনিময় সভা’।
ঘোষণা অনুযায়ী অনুষ্ঠানটি বিকেল ৪ টায় পটিয়ার হাইদগাঁও কাজীপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা শুরু হয় প্রায় ঘণ্টাখানেক পরে বিকেল সাড়ে ৫ টায়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন পটিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জায়েদ নূর।
আয়োজক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে ‘সচেতন জনমহল’ নামের একটি স্থানীয় সংগঠন, এবং অনুষ্ঠানে পটিয়া থানার সার্বিক সহযোগিতা ছিল। পূর্ব ঘোষিত প্রোগ্রামটি সুনির্দিষ্টভাবে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন হিসেবে প্রচার করা হলেও, মাত্র দুই ঘণ্টা আগে ব্যানার পরিবর্তনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সচেতন মহলের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকে এটিকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও প্রশ্নবিদ্ধ সিদ্ধান্ত হিসেবে দেখছেন।
স্থানীয়দের মতে, আয়োজকদের ওপর চাপ বা হুমকির কারণেই সন্ত্রাস বিরোধী ভাষ্য বাদ দিতে বাধ্য করা হয়েছে। পূর্ববর্তী ব্যানারে হাইদগাঁও, কেলিশহর ও করলডেঙ্গা ইউনিয়নে পাহাড়ি চক্র কর্তৃক হামলা ও মুক্তিপণের প্রসঙ্গ স্পষ্টভাবে উল্লেখ ছিল, যা পরে ব্যানার থেকে গায়েব হয়ে যায়। এতে জনমনে বিভ্রান্তি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় অপহরণের শিকার হওয়াদের মধ্যে কয়েকজন অপহরণের ঘটনার বর্ণণা দিয়ে বক্তব্য রাখেন।
মিজান উদ্দিন নামে এক ভুক্তভোগী বলেন, ‘শান্তি বাহিনীদের লালন পালন করছে স্থানীয় কাঠ ব্যবসায়ী। আমরা সাধারণ জনগন কেটে খাওয়া মানুষ আমরা এই অপহরণকারীদের কাছ থেকে পরিত্রাণ চাই।’
উপজেলা যুবদল নেতা মাঈমুনুল ইসলামের সঞ্চালনায় এসময় বক্তব্য রাখেন, আব্দুস সালাম, মো. আলী, প্রথম আলোর সাংবাদিক আব্দুর রাজ্জাক, কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি পটিয়া থানার ওসি বলেন, মাদক, অস্ত্র উদ্ধারের জন্য পুলিশ সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি নেন। হাইদগাঁও এলাকায় টহল পুলিশ জোরদার থাকবে বলে জানান। ব্যানার পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা মাঈনুল ইসলাম জানান, পুলিশের অনুরোধে ব্যানার পরিবর্তন করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পাহাড় ঘেঁষা এসব ইউনিয়নে সম্প্রতি চাঁদাবাজি, অপহরণ ও সহিংসতার অভিযোগ ব্যাপকভাবে উঠছে। নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা সাধারণ মানুষের জন্য এই ধরনের কর্মসূচি প্রত্যাশা জাগালেও, শেষ মুহূর্তের এই পরিবর্তন তাদের হতাশ করেছে।
আরশি