ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

‘বাজেট বাস্তবায়নে সরকার কতটা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে সেটি দেখার বিষয়’ 

স্টাফ রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২২:৫১, ৮ জুন ২০২৪

‘বাজেট বাস্তবায়নে সরকার কতটা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে সেটি দেখার বিষয়’ 

রওশন এরশাদ।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বেগম রওশন এরশাদ বলেছেন, বাজেট প্রনয়ণ নয়, প্রণীত বাজেট বাস্তবায়নে সরকার কতটা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে, তাই এখন দেখার বিষয়। আপাতত দৃষ্টিতে বাজেট ইতিবাচক হলেও, আরো পর্যবেক্ষণ করতে হবে। 

শনিবার (৮ জুন) রাজধানীর গুলশানে নিজ বাসভবনস্থ কার্যালয়ে জাপার প্রেসিডিয়ামের প্রথম বৈঠকের শুরুতে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। 

রওশন এরশাদ বলেন, ‘এ যাবৎ কালের সর্ববৃহৎ বাজেট পেশ করা হয়েছে। দেশকে এগিয়ে নিতে বাজেটের আয়তন বড় করতেই হবে। হয়তো আগামীতে আরো বড় বাজেট দেখা যাবে। জাপা বিরোধী অবস্থানে আছে বলেই বিরোধীতার জন্য বুঝে না বুঝেই বিরোধীতা করতে হবে- এ নীতিতে বিশ্বাসী নয় তার দল।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘তার দলও সরকারে ছিল এবং বাজেট প্রণয়ন করেছে। কোনো সরকার দেশ ও জনগণের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো বাজেট প্রণয়ন করে না। দেখতে হবে- প্রণীত বাজেট বাস্তবায়নে সরকার কতটা দক্ষতার পরিচয় দিতে পারে।’

তিনি বলেন, ‘দেশের সার্বিক বিরাজমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলার মতো সবার কাছে গ্রহণযোগ্য বা মনোপুত জাতীয় বাজেট প্রণয়ন করা খুবই কঠিন কাজ। বাজেট প্রণয়নে সরকারের আন্তরিকতার পরিচয় দেখা গেছে বলে মনে করেন সাবেক এই বিরোধী দলীয় নেতা। আরো সময় নিয়ে বাজেট গভীরভাবে পর্যালোচনা করতে হবে। দেশ ও জনস্বার্থের কথা চিন্তা করে-বাজেট বাস্তবায়নে দলীয় পরামর্শ সরকারের কাছে তুলে ধরা হবে।’

জাপা চেয়ারম্যান বলেন, ‘বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি বিরাজ করছে। বাংলাদেশও সেই সমস্যার বাইরে নয়। তার উপর ঘুষ-দুর্নীতি, বেকারত্ব, স্বাস্থ্যসেবা সমস্যা এবং পরিবেশগত বিপর্যের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বার বার। এসব সমস্যা সমাধানে সম্মিলিতভাবে মোকাবিলা করতে হবে।’

তিনি আশা করে বলেন, ‘বাজেট পাশের আগে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ, বেকার সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণ, গ্রামীণ জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে পদক্ষেপ নেওয়া এবং ঘুষ ও দুর্নীতি প্রতিরোধে সরকার আরো কঠোর হতে হবে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জন্য যে বিশাল বাজেট প্রণীত হয়েছে- সেটা যেন জনগণের কল্যাণ ও দেশবাসির জন্য বাস্তবায়িত হবে। দুর্নীতি সম্পূর্ণ নির্মূল করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তিনি।’ 

প্রেসিডিয়াম বৈঠক শেষে দলের পক্ষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংয়ে বাজেট প্রতিক্রিয়া জানান পার্টির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশিদ। তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত বাজেট শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা। দেশের সত্যিকারের অর্থনৈতিক চিত্রকে ডাকার প্রবনতা রয়েছে এবারের বাজেটে। খেলাপি ঋণ, অর্থ পাচার, মূল্যস্পৃতি, শেয়ার বাজার এবং সিন্ডিকেট নিয়ে সঙ্কার করতে হবে।’ 

বিরোধী দলগুলোর সমালোচনা করে জাপার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, ‘দেশে সত্যিকারের বিরোধী দল না থাকলে, সাধারণ মানুষের পক্ষে কথা বলার প্রতিনিধিত্বের অভাব দেখা দেয়। যে কাজ বিরোধী দলগুলোর করার কথা, তা কখনও কখনও সরকারি দলের সদস্যদের করতে দেখা যায়। ঋণের চাপে ব্যাংকগুলো দেউলিয়া হয়ে যাচ্ছে। আর সরকার অনুৎপাদন খাতের জন্য সরকারি-বেসরকারী ব্যাংকগুলো থেকে ঋন নিচ্ছে। সে কারণে আগামীতে মারাত্বক হুমকির মুখে পড়বে আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমুহ।’

পার্টির মহাসচিব কাজী মামুনূর রশিদের পরিচালনায় বৈঠকে আরো উপস্থিত ছিলেন- কো-চেয়ারম্যান গোলাম সারোয়ার মিলন, সুনীল শুভরায়, অ্যাডভোকেট জিয়াউল হক মৃধা, প্রেসিডিয়াম সদস্য রফিকুল হক হাফিজ, অধ্যাপক নুরুল ইসলাম মিলন, ফখরুজ্জামান জাহাঙ্গীর, জাফর ইকবাল সিদ্দিকী, কারী হাবিবুল্লাহ বেলালী, আবুল কাশেম সরকার, শফিকুল ইসলাম শফিক, আমানত হোসেন আমানত, এইচএনএম শফিকুর রহমান, নুরুল ইসলাম নুরু, জাহাঙ্গীর আলম পাঠান, আব্দুল গাফফার বিশ্বাস, খন্দকার মনিরুজ্জামান টিটু, এমএ কুদ্দুস খান, ইয়াহ্ ইয়া চৌধুরী ও শংকর পাল।

এম হাসান

×