ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

ফখরুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের দাবি 

সংস্কৃতিক  প্রতিবেদক 

প্রকাশিত: ১২:০২, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২; আপডেট: ১৬:৪৭, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

ফখরুলের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের দাবি 

প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ্।

পাকিস্তান আমলে ভাল ছিলাম- সম্প্রতি এমন বক্তব্য দিয়ে তুমুলভাবে সমালোচিত হয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তার এই বক্তব্যকে পাকিস্তানপ্রীতি হিসেবে আখ্যা দিয়ে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট। 

সমাবেশে জোটের নেতারা বলেছেন, শুধু রাজনীতি নয়, বাংলাদেশে মির্জা ফখরুলের বসবাসের অধিকার নেই।  মির্জা ফখরুলের ওই বক্তব্যকে বাঙালী সংস্কৃতি ও জাতিসত্তার বিরোধী হিসেবে আখ্যা দিয়ে সংস্কৃতিজনরা বলেছেন, ওই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বিএনপির পাকিস্তানঘেঁষা রাজনীতি আরও সুস্পষ্ট হয়েছে৷ তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা দায়েরের দাবি জানিয়েছেন তারা।

জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দীন ইউসুফ, নৃত্যশিল্পী সংস্থার সভাপতি মিনু হক, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি ও পথনাটক পরিষদের সহ-সভাপতি মিজানুর রহমান, জোটের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ঝুনা চৌধুরী, সহ-সভাপতি কামাল পাশা চৌধুরী, জোটের কার্যনির্বাহী সদস্য সঙ্গীতা ইমাম, অনন্ত হীরা, রেজিনা ওয়ালী লীনা, মিলন কান্তি দে, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মানজার চৌধুরী সুইট। স্বাগত বক্তব্য দেন জোটের সাধারণ সম্পাদক আহ্কাম উল্লাহ্। 

নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বলেন, কয়েক হাজার বছরের বাঙালীর সংস্কৃতি তাতে বাংলাদেশ কখনই পাকিস্তানে পরিণত হবে না৷ পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও আদর্শিক বাস্তবতার সঙ্গে বাংলাদেশের সংস্কৃতির তফাত অনেক। বিশ্ব ব্যাংকের তথ্য বলছে, বাংলাদেশের পার ক্যাপিটা ইনকাম ২ হাজার ৫০৩ ডলার, পাকিস্তানের ১৫৬২ ডলার। এমনকি পাকিস্তানের সুশীল সমাজও বলছে, সব দিক থেকে পাকিস্তানের থেকে ভাল আছে বাংলাদেশ। যাদের এই এগিয়ে যাওয়া ভাল লাগছে না, প্রয়োজনে তারা পাকিস্তানে চলে যাক।

সঙ্গীতা ইমাম বলেন, মির্জা ফখরুলের এই ধৃষ্টতামূলক বক্তব্য রাষ্ট্রদ্রোহের শামিল৷ তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা করে বিচারের আওতায় আনা হোক৷ একই সঙ্গে বলতে চাই, এ কাণ্ডে মির্জা ফখরুলের শুধু রাজনীতি নয়, এ দেশে থাকার অধিকারও নেই।

মিনু হক বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ৫০ বছর। মির্জা ফখরুলের যদি এতই খারাপ লাগে, তবে তিনি কেন এখানে রয়ে গেছেন নির্লজ্জের মতো। পাকিস্তানে চলে যাচ্ছেন না কেন? 

গোলাম কুদ্দুছ বলেন, মির্জা ফখরুল দেশের বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের মহাসচিব। তার বক্তব্য জাতিকে বিভ্রান্ত করছে, ইতিহাসের চাকাকে পেছনে নিয়ে যেতে চায়। মির্জা ফখরুল দেশের স্বাধীনতা, সংস্কৃতি ও জাতিসত্তার বিরুদ্ধে গিয়ে যে কথা বলছেন, তাতে একাত্তরের ৩০ লাখ শহীদ ও দুই লাখ মা-বোনকে অপমান করা হয়। তাকে এই বক্তব্য প্রত্যাহারের অনুরোধ জানাই। তার ওই বক্তব্য বিএনপির পাকিস্তানপ্রীতিকে প্রমাণ করে।

তিনি আরও বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করলেও তিনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস করতেন না৷ তিনি পঁচাত্তরের পনেরো আগস্টে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার কথা জানতেন এবং পরোক্ষভাবে মদদ দিয়েছিলেন।  

এসআর

সম্পর্কিত বিষয়:

×