
ওবায়দুল কাদের
বিএনপির উদ্দেশে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, অনেকেই মনে করছে হয়তো আমরা রাজপথ ভুলে গেছি, ভুলি নাই। আমরাও আছি, অচিরেই রাজপথে দেখতে পাবেন। আওয়ামী লীগ যখন মাঠে নামবে তখন তাদের (বিএনপি) আন্দোলনের স্বপ্ন কর্পূরের মতো উড়ে যাবে। খেলা হবে, মাঠে খেলা হবে। মোকাবেলা হবে, রাজপথে মোকাবেলা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, পালানোর ইতিহাস আমাদের (আওয়ামী লীগের) নেই। প্রয়োজনে দেশের মাটিতে জেলে যাব। পালানোর অভ্যাস বিএনপির। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপার্সন ১/১১ জরুরী সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে টেমস নদীর পাড়ে পালিয়ে গেছে। তাদের মুখে বড় বড় কথা মানায় না।
বৃহস্পতিবার আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্পাদকম-লী এবং এর সকল সহযোগী সংগঠন এবং ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সঙ্গে জরুরী যৌথ সভার শুরুতে দেয়া বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এ সভায় ওয়াবদুল কাদের সভাপতিত্ব করেন।
বর্তমান বৈশি^ক সঙ্কটের প্রেক্ষাপটে সুযোগ নিয়ে সহযোগিতা না করে সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র চলছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের সভায় বলেন, সারা দুনিয়ায় এখন এক অস্থির সময় অতিক্রান্ত হচ্ছে। একটা খারাপ সময়ের মুখোমুখি, একটা চ্যালেঞ্জিং টাইম আমরা অতিক্রম করছি। বাংলাদেশ কোন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নয়। ইউক্রেন যু্েদ্ধ নেতিবাচক প্রভাব আমাদের ওপর পড়তে শুরু করেছে।
তিনি বলেন, সারা দুনিয়ায় সঙ্কট। কোথাও এ নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে শুনলাম না। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানের বিষয় আলাদা। অন্য কোথাও এ নিয়ে আন্দোলন নেই। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যতিক্রম। সরকারের দোষ, যত দোষ নন্দ ঘোষ। শেখ হাসিনার সরকার করোনায় ভারসাম্যমূলক অবস্থান নিয়ে দেশের অর্থনীতি সচল রাখায় সারাবিশে^ প্রশংসিত হয়েছে। আজ সেই সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র, সরকার উৎখাতের চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে। বৈশি^ক সঙ্কট উত্তরণে সহযোগিতা না করে তারা সরকার উৎখাতে মঞ্চ করছে, আরও কি করছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম কমলে আমাদের দেশেও কমানো হবে। তারপরও বিএনপি ও তাদের দোসররা মাঠে নামছে, সরকারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করছে। তিনি বলেন, অনেকেই মনে করছেন হয়তো আমরা রাজপথ ভুলে গেছি, কিন্তু ভুলি নাই। এই শোকের মাসে সাধারণত আমরা রাজপথের কর্মসূচী দেই না। কিন্তু সরকারের বিরুদ্ধে চক্রান্ত, অপপ্রচার, মানুষকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। আমাদের এর প্রতিবাদ করতে হবে, জনগণকে সচেতন করতে হবে। চক্রান্ত মোকাবেলা করা হবে।
এ সময় বিএনপির আন্দোলন প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিরোধী দল হিসেবে যদি শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে সরকার বাধা দেবে কেন? তবে তাতে যদি সহিংসতার উপাদান যুক্ত হয় আগুন সন্ত্রাস নিয়ে মাঠে নামে তাহলে সরকার কি বসে থাকবে? বসে বসে আঙ্গুল চুষবে? খেলা হবে, মাঠে খেলা হবে। মোকাবেলা হবে, রাজপথে মোকাবেলা হবে।
জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধি নিয়ে ১৪ দলের শরিক কোন কোন দলের আন্দোলন প্রসঙ্গে অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, এটা তাদের বিষয়, এটা গণতান্ত্রিক অধিকার তাদের। তাদের সঙ্গে জোট হয়েছিল নির্বাচনী জোট। সেখানে আদর্শের কোন বিষয় নেই। এটা কৌশলগত জোট। তা না হলে জাতীয় পার্টির সঙ্গে জোট কেন?
এ সময় ওবায়দুল কাদের আগামী ১৭ আগস্ট সারাদেশে আওয়ামী লীগের বিক্ষোভ সমাবেশের কর্মসূচী ঘোষণা করেন। বিএনপি আমলে সারাদেশে সিরিজ বোমা হামরার প্রতিবাদে ওই দিন বিকেলে ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউট মিলনায়তন চত্বরে সমাবেশ শেষে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ পর্যন্ত বিক্ষোভ মিছিল করবে আওয়ামী লীগ। সারাদেশের জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায় পর্যন্ত এ বিক্ষোভ কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হবে।
ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে যৌথ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সভাপতিম-লীর সদস্য কাজী জাফর উল্লাহ, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, সম্পাদকম-লীর সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, মির্জা আজম, এস এম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, ফরিদুন্নাহার লাইলী, ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সুজিত রায় নন্দী, আমিনুল ইসলাম, সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য রিয়াজুল কবির কাওছারসহ সহযোগী, ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও উত্তরের নেতারা।