নূরে আলমের জানাজা
ভোলায় ৩১ জুলাই পুলিশের হাতে গুলিবিদ্ধ হয়ে ঢাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে নিহত জেলা ছাত্রদল সভাপতি নুরে আলমের জানাজা বৃহস্পতিবার দুপুরে নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজার আগে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নূরে আলম নিহত হওয়ার প্রতিবাদে চার দিনের কর্মসূচী ঘোষণা করেন। কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে ৫ থেকে ৭ আগস্ট পর্যন্ত শোক পালনের জন্য সারাদেশে বিএনপির সকল কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিত ও কালো পতাকা উত্তোলন।
এ ছাড়া ঢাকায় ৬ আগস্ট ছাত্রদলের সমাবেশ, ৭ আগস্ট কৃষক দলের এবং ৮ আগস্ট যুবদলের সমাবেশ। কর্মসূচী ঘোষণার আগে মির্জা ফখরুল দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আর কোন রোদন নয়, আর কোন ক্রন্দন নয়, এখন আমাদের জেগে উঠতে হবে। এই সরকারের নির্যাতনের হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করতে হবে।
আন্দোলনের মাধ্যমে সরকারের পতন ঘটাতে হবে জানিয়ে তিনি বলেন, এ জন্য প্রয়োজন সমগ্র জাতির ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন। আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে শান্তিপূর্ণ গণআন্দোলন করে আমাদের সন্তান, আমাদের ভাই নূরে আলম হত্যার প্রতিশোধ নেব। আন্দোলনের মাধ্যমেই আমরা দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করব, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব, ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর মামলার অবসান ঘটাব।
ফখরুল বলেন, ভোলা ছাত্রদলের সভাপতি নুরে আলমকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ বাহিনী। পিতার কাঁধে পুত্রের লাশ। এর চেয়ে বড় বেদনার আর যন্ত্রণার কিছু নেই। নুরে আলম ছাড়াও ভোলায় গুলি করে হত্যা করা হয়েছে ভোলা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আবদুর রহিমকে।
আরও ১৯ জন ঢাকা ও বরিশালের হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর ১৫ বছরে আমাদের ৬০০ নেতাকর্মীকে গুম করা হয়েছে, সহস্রাধিক নেতকর্মীকে খুন করা হয়েছে, ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে।
জানাজার আগে নুরে আলমের মরদেহ নয়াপল্টন বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আনা হলে দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ সিনিয়র নেতারা কফিনে দলীয় পতাকা দিয়ে আচ্ছাদন করে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে তার প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানান। পরে তারা জানাজায় অংশ নেন।
পরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (একাংশ) প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই- সরকার সরানোর আন্দোলন কোন চক্রান্ত নয়। আমরা প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়ে বলতে চাই, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কর্তৃত্ববাদী এ সরকারকে সরিয়ে আমরা জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চাই।
এখানে দেশের বিরুদ্ধে চক্রান্তের কোন প্রশ্ন উঠতেই পারে না। অথচ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে নাকি আবার নতুন করে চক্রান্ত শুরু হচ্ছে। তাহলে প্রধানমন্ত্রী দয়া করে চক্রান্তকারী কারা তাদের নামগুলো উচ্চারণ করুন। কারা চক্রান্ত করছে আমরাও জানতে চাই।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান।