ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

নারী ফুটবলের অর্জন

প্রকাশিত: ১৮:০৬, ৪ জুলাই ২০২৫

নারী ফুটবলের অর্জন

ইতিহাস গড়েছে বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল। বাছাইপর্ব পেরিয়ে প্রথমবারের মতো জায়গা করে নিয়েছে মেয়েদের এশিয়ান কাপের চূড়ান্ত পর্বে। অভিনন্দন বীর নারীদের। ঋতুপর্ণা চাকমার অসাধারণ দুই গোলে স্বাগতিক মিয়ানমারকে হারিয়ে টানা দ্বিতীয় জয়ে ২০২৬ এশিয়ান কাপে এক পা দিয়ে রাখে বাংলাদেশ। এরপর গ্রুপের অন্য ম্যাচে বাহরাইন ও তুর্কমেনিস্তান ড্র করতেই নিশ্চিত হয়ে যায় এক ম্যাচ হাতে রেখেই গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশের চূড়ান্ত পর্বে উত্তরণ। ২০২৬ সালে অস্ট্রেলিয়ায় অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া চূড়ান্ত পর্ব কাজ করবে বিশ্বকাপ বাছাইপর্ব হিসেবেও। উল্লেখ্য, মেয়েদের এশিয়ান কাপ প্রথম শুরু হয় ১৯৭৫ সালে। এরপর ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রথম ২০ আসরে খেলেছে ২২টি দল। বাংলাদেশ সুযোগ পেল ২৩তম দল হিসেবে। ২০২৬ নারী এশিয়ান কাপে বাংলাদেশসহ এখন পর্যন্ত পাঁচটি দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়েছে।
এর আগেও আমাদের মেয়েরা ফুটবলে দারুণ সব কৃতিত্ব দেখিয়েছে। ফুটবলে টানা দ্বিতীয়বারের মতো সাফ নারী চ্যাম্পিয়নশিপ অর্জন করেছে বাংলাদেশ। দক্ষিণ এশীয় নারী ফুটবলে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পর স্বদেশে ফিরে বিমানবন্দর থেকেই বীরকন্যা ফুটবলারদের অভূতপূর্ব রাজসিক সংবর্ধনা দিয়েছিল দেশবাসী, এটি আমাদের একটি সুখস্মৃতি। কিন্তু আমরা কি নারী ফুটবলারদের জন্য যথাযথ পরিকল্পনা করেছি? কর্তব্য পালন করেছি?
ভুলে গেলে চলবে না, ফুটবলই বাংলাদেশের মানুষের আসল খেলা। ছাদখোলা বাসে ট্রফি হাতে বিজয়ীদের আনন্দ শোভাযাত্রা এদেশে অভিনব, যা দেশের ক্রীড়াজগতে নতুন ইতিহাসের সূচনা করেছিল। ফুটবলপ্রেমী মানুষের হৃদয়ে এমন অনুভূতির অনুরণন যেন চ্যাম্পিয়ন সাবিনা-সানজিদা-রূপনা-কৃষ্ণাদের হাত ধরেই দেশের ফুটবলের ভবিষ্যৎ বিজয়ীবেশে এগিয়ে চলেছে। শুধু আনন্দ উল্লাস নয়, আমাদের ভাবতে হবে ভবিষ্যতের কথা। আজ যেসব মেয়ে দেশকে গর্বিত করে তুলছে এদের প্রত্যেকের জন্য চাই সুষ্ঠু প্রশিক্ষণ ও যথাযথ উদার পরিচর্যা। এক্ষেত্রে কোনো ধরনের কৃপণতা কিংবা হীনম্মন্যতা কাম্য নয়। শিশুকিশোর বয়স থেকেই যদি আমরা মেয়ে ফুটবলারদের গড়ে তোলার সঠিক পথ রচনা করে দিতে পারি এবং বাজেট বাড়াই সেক্ষেত্রে অনেক দূরে যাওয়ার স্বপ্ন আমরা দেখতেই পারি। 
আমরা বারবার বলে আসছি, ফুটবলে শুধু আশা আর সদিচ্ছাই সব নয়, প্রতিপক্ষের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের জন্য প্রয়োজন পড়ে নিজেদের উন্নীত করার। সাধ থাকলেই তো আর হয় না, থাকা চাই সামর্থ্য। আমাদের পরামর্শ ছিল, ফুটবলার এবং ফুটবল সংগঠক বা বিশেষজ্ঞরা আত্মবিশ্লেষণের মাধ্যমে আগামীতে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একটি সুষ্ঠু পরিকল্পনা তৈরি করুন। আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন করে খেলোয়াড়দের অভিন্ন ছাতার নিচে রেখে প্রশিক্ষণ প্রদানের ফলে দেশের নারী ফুটবলাররা অসামান্য কৃতিত্ব প্রদর্শনে সমর্থ হয়েছে। তার ধারাবাহিকতাও বজায় রাখছে। নারীদের সাফল্যের মধ্য দিয়ে প্রায় হতোদ্যম, ঝিমিয়ে পড়া দেশীয় ফুটবলে নতুন প্রাণের সঞ্চার হোক।

প্যানেল

×