ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৩ জুন ২০২৫, ২৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

শান্তিপূর্ণ ঈদ উদ্‌যাপন

প্রকাশিত: ১৭:১০, ১১ জুন ২০২৫; আপডেট: ১৭:৪১, ১১ জুন ২০২৫

শান্তিপূর্ণ ঈদ উদ্‌যাপন

যথাযোগ্য ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে বাংলাদেশেও পালিত হয়েছে পবিত্র ঈদুল আজহা। মূলত এ ঈদের আনন্দ পশু জবেহকে কেন্দ্র করে হয়ে থাকে। সারাদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিম জনগোষ্ঠী ঈদের নামাজ শেষে যার যার সক্ষমতা অনুযায়ী কোরবানি দিয়ে থাকেন এ সময়ে। ইসলামি শরিয়তে কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে সকাল সাড়ে ৭টায় অনুষ্ঠিত হয় ঈদের প্রধান জামাত। এতে অংশ নেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা, রাজনৈতিক নেতা ও মুসলিম দেশের কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের জনগণ। ঈদের সালাত আদায় ও খুতবা পাঠ করেন বায়তুল মোকাররমের খতিব মুফতি মোহাম্মদ আবদুল মালেক। নামাজ শেষে দেশ ও মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনায় বিশেষ মোনাজাত করা হয়। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সকাল ৭টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত পাঁচটি জামাত অনুষ্ঠিত হয়। সারাদেশের মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের সালাত আদায় হয়েছে নির্বিঘ্নে।
সারাদেশের মুসলিমরা নামাজ শেষে পশু কোরবানি দেন। ঈদের তৃতীয় দিন আসরের আজানের আগ পর্যন্ত এই আনুষ্ঠানিকতা চালানোর অনুমোদন রয়েছে। কোরবানিদাতা সবাই আল্লাহর বিধান মেনে গোশতের একটি অংশ আত্মীয়স্বজন ও গরিব-দুস্থদের মাঝে হাসিমুখে বিতরণ করে আত্মতৃপ্তি পান। ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের জনগণের জানমাল রক্ষাসহ সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং ছুটি চলাকালে যে কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা প্রতিরোধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী জনগণের জানমালের সুরক্ষায় বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় চেকপোস্ট স্থাপন ও টহল কার্যক্রমের মাধ্যমে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। বিশেষ করে শহর থেকে গ্রামে যাত্রার সময় সাধারণ জনগণের নির্বিঘ্ন চলাচল নিশ্চিত করতে দেশের বিভিন্ন আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ও সংযোগ সড়কে তল্লাশি ও নজরদারি কার্যক্রম রেখেছে নিরবচ্ছিন্ন।
এ বছর ঈদ উৎসবে বড় ধরনের কোনো সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেনি। ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে নগরবাসী শিকড়ের টানে রাজধানীসহ বড় বড় শহর থেকে গ্রামমুখী হয়েছেন। ইতোমধ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত অনেকেই কর্মস্থলে ফিরতে শুরু করেছেন। যাত্রাপথ নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। সরকারের এ মহতী উদ্যোগ সাধুবাদ পাওয়ার যোগ্য। দেশের কোটি মানুষ যখন প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগ করে নিতে গ্রামে ছুটে যাচ্ছেন, তখন দেশের বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ে, দুর্গম অঞ্চলে, বন্যাদুর্গত এলাকা এবং শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্যরা দৃঢ়তার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন ঈদুল আজহার ত্যাগের মহান শিক্ষা নিয়ে। 
তবে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়ার দাম নিয়ে হতাশায় ভুগছেন। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, দেশে ঈদুল আজহায় এবার কোরবানি হয়েছে ৯১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৩৪টি পশু। এর মধ্যে গরু-মহিষ ৪৭ লাখ ৫ হাজার ১০৬টি, ছাগল-ভেড়া ৪৪ লাখ ৩০ হাজার ৬৬৮টি এবং অন্যান্য প্রাণী (উট, দুম্বা ইত্যাদি) কোরবানি হয়েছে ৯৬০টি। হিসাব অনুযায়ী গত বছর ১ কোটি ৪ লাখ ৮ হাজার ৯১৮টি পশু কোরবানি দেওয়া হয়। সে হিসাবে এ বছর পশু কোরবানি কমেছে, যা প্রায় ১২ লাখ ৭২ হাজার ১৮৪টি। ৩৫ হাজার মানুষের কঠোর পরিশ্রমে খুব দ্রুত বর্জ্য অপসারণের ফলে পরিচ্ছন্ন হয়ে উঠেছে চিরচেনা রাজধানী।

প্যানেল

×